লন্ডন: মধ্যপ্রাচ্যে এবং উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোতে সমকামী ও দ্বিগামী পুরুষদের (সমকামি এবং স্বাভাবিক যৌন সম্পর্কও রয়েছে) মধ্যে মহামারি আকারে এইচআইভি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অতি উচ্চ মাত্রার ঝুঁকপূর্ণ যৌন সম্পর্ক বেড়ে যাওয়ায় এসব অঞ্চলে মারনব্যাধী এইডস’র ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে বলে গবেষকরা সতর্ক করে দিয়েছেন।
গবেষকরা মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছেন। ওই অঞ্চলে এইডস নিয়ে এটাই প্রথম গবেষণা। এখানে অবশ্য সমকামিতা ও উভকামিতা সামাজিকভাবে নিষিদ্ধ।
কাতারের ওয়েল কর্নেল মেডিক্যাল কলেজের গবেষকরা দেখেছেন, ওই অঞ্চলের কয়েকটি দেশ যেমন মিশর, সুদান, তিউনিশিয়া এবং পাকিস্তানে বিশেষ জনগোষ্ঠীর পুরুষদের মধ্যে এইচআইভি সংক্রমণের হার শতকরা ৫ ভাগ।
চিকিৎসা বিষয়ক সাময়িকী পাবলিক লাইব্রেরি অব সায়েন্সে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, পাকিস্তানে এইচআইভি সংক্রমণের হার শতকরা ২৮ ভাগে পৌঁছেছে।
২০০৯ সালে জাতিসংঘের প্রকাশিত এক উপাত্তে দেখা গেছে, বিশ্বব্যাপী ৩ কোটি ৩৩ লাখ লোক এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত। তার মধ্যে সাব-সাহারান আফ্রিকাতেই ২ কোটি ২৫ লাখ লোক এইচআইভি আক্রান্ত।
কাতারের ওয়েল কর্নেল মেডিক্যাল কলেজের গিনা মুমতাজের নেতৃত্বে ওই গবেষণায় অংশ নিয়েছিলেন লেইথ আবু রাদাদ। রাদাদ জানান, মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকায় এইচআইভি সম্বন্ধে খুব কম তথ্যই এ যাবত প্রকাশ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, একারণে এমন ভুল ধারণা প্রচলিত ছিল যে এ বিষয়ে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য নেই। কিন্তু যখন তারা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলেন তখন দেখা গেলো, তথ্য পাওয়া কোন ব্যাপারই নয়। অনেক সংগঠন এমন তথ্য আগে সংগ্রহ করেছেন কিন্তু তা প্রকাশ করা হয়নি।
বিভিন্ন প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে তারা বুঝতে পেরেছেন, ওই অঞ্চলে সমকামী পুরুষদের মধ্যে এইচআইভির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি এবং তা যে হারে বাড়ছে তাতে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
গবেষকরা বলছেন, ওই অঞ্চলে যে তথ্য পাওয়া গেছে তাতে উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। তারা দেখেছেন, ২০০৮ সালে ওই অঞ্চলের কয়েকটি দেশে যে পরিমাণ এইচআইভি ছড়িয়েছে তার এক চতুর্থাংশ ছড়িয়েছে সমকামী পুরুষদের যৌন সংসর্গের মাধ্যমে।
আবু রাদাদ বলেন, বিশ্বব্যাপী সমকামী পুরুষদের যৌন সংসর্গের মাধ্যমে মহামারি আকারে এইচআইভির সংক্রমণ হয়েছে। এক্ষেত্রে ওই অঞ্চলও তার ব্যতিক্রম নয়।
বাংলাদেশ সময়: ২২০২ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০১১