দাবাব: ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে রমজান অত্যন্ত পবিত্র মাস। সারাদিন অভুক্ত থেকে সংযম প্রদর্শন অত্যন্ত তাৎপর্য বহন করে মুসলিমদের ধর্মীয় জীবনে।
সারাদিন রোজা রেখে সূর্যাস্তের সময় রোজা ভাঙার মতো খাবার-পানীয়টুকুও নেই সোমালী শরণার্থীদের। তিন সন্তানের মা ফাদুমা আদিন তেমনি এক সোমালি নারী। ক্ষুধার জ্বালায় নিজ জন্মভূমি ছেড়ে কেনিয়ার দাবাব শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি।
সেহরি ও ইফতার করার মতো খাবার নেই। তারপরও এখানে রোজা রাখেন অনেকে। তেমনি ধর্মপ্রাণ মুসলিম আদিন বলেন, ‘আমার জন্য রোজা রাখা খুবই কষ্টকর; কিন্তু খোদাকে ভয় পাই বলে রোজা রাখি। ’
চলতি বছরের খরাজনিত দুর্ভিক্ষে ১০ হাজারেরও বেশি সোমালি দেশ ছেড়ে একটু খাবারের আশায় পার্শ্ববর্তী দেশ কেনিয়ার শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে।
অন্য এক শরণার্থী মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, ‘সারাদিন রোজা রাখার পর সূর্যাস্তের সময় ক্ষুধা মেটানোর জন্য কোনো খাবার নেই। আমার পুরো পরিবার ক্ষুধার্ত । এই ক্ষুধার কারণেই পরিবার নিয়ে এখানে চলে এসেছি। ’
সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসুর একটি মসজিদের ইমাম শেখ আলী শেখ হুসেইন বলেন, ‘অনেক সোমালী রোজা রাখতে পারে না। কারণ খাদ্য-পানীয়ের অভাবে তারা ইতোমধ্যে অনেক দুর্বল হয়ে পড়েছে। তাদের শক্তি পুনরুদ্ধার করার জন্যও কোনো খাবার নেই। ’
এদিকে সোমবার এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন, ‘রোজা আধ্যাত্মিক শক্তি বাড়াতে, নিয়মানুবর্তিতা এবং ঈশ্বরের করুণা লাভে সহায়তা করে। এখনই সময় বিশ্বের সবার একযোগে দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষদের সহায়তা করার। ’
ইতোমধ্যে কিছু সম্প্রদায় দাবাব শরণার্থী শিবিরে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু সেই সহায়তা দুর্ভিক্ষপীড়িত অসংখ্য মানুষর জন্য খুবই অপ্রতুল।
এদিকে জাতিসংঘ বলছে, ‘এক কোটি ১০ লাখেরও বেশি সোমালিদের খাদ্য সহায়তা দরকার। ’
মোগাদিসুর একটি শরণার্থী শিবিরের আশ্রয় নেওয়া সালাদ সালাহ বলেন, ‘এ বছরে রোজা রাখা মানে আত্মহত্যার নামান্তর। আমরা রোজা রাখতে চাই কিন্তু এই অবস্থায় তা সম্ভব হচ্ছে না। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৩ ঘণ্টা, আগস্ট ০৫, ২০১১