ঢাকা, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

সাত বছরে ড্রোন হামলায় পাকিস্তানে ১৬৮ শিশু নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১১
সাত বছরে ড্রোন হামলায় পাকিস্তানে ১৬৮ শিশু নিহত

লন্ডন: মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সিআইএ) পরিচালিত চালকবিহীন বিমান ড্রোন হামলায় পাকিস্তানে গত সাত বছরে ১৬৮ শিশু নিহত হয়েছে।

সিআইএ ২০০৪ সাল থেকেই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের কারণ দেখিয়ে আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তে এ অভিযান পরিচালনা করে আসছে।



লন্ডনভিত্তিক ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজমের এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।

তাদের গবেষণায় আরও বলা হয়, পাকিস্তানে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের দূরনিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ২ হাজার ২৯২ জন মানুষ মারা গেছে। এদের মধ্যে ৭৭৫ জন বেসামরিক লোক এবং ১৬৮টি শিশু।

বিতর্কিত এ অভিযানের প্রথম নির্দেশদাতা সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ। বর্তমান প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়েও এর ব্যাপ্তি ঘটে।

উল্লেখ্য, ওবামা ক্ষমতায় আসার পরই শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান।

কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো, তার সময়েই তারই নির্দেশিত ড্রোন হামলায় এতোগুলো নিরীহ মানুষ মারা গেছে।

চালকবিহীন বিমানের বেশির ভাগ আক্রমণই আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তে চালানো হয়েছে। সীমান্তে তালেবানদের অনুপ্রবেশসহ অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকানো ও মাদক চোরাচালান বন্ধসহ নানা অজুহাতে পাকিস্তানের জনগণের আপত্তি সত্ত্বেও একতরফা অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে সিআইএ।

গত মে মাসে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদের মার্কিন সিল বাহিনীর অভিযানে আল কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেন হত্যাকা-ের পর দু’দেশের সম্পর্কে টানাপড়েন দেখা দেয়। এসময় পাকিস্তান ড্রোন হামলা বন্ধের জোরালো প্রতিবাদ জানায়। কিন্তু পাকিস্তানের প্রতিবাদে বিন্দুমাত্র কর্ণপাত করেনি যুক্তরাষ্ট্র।

পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতা ও সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খান বলেন, ‘এই হামলা অকার্যকর এবং অমানবিক। নতুন প্রজন্মের মধ্যে ক্ষোভ উস্কে দিচ্ছে এ হামলা। ’

মানবাধিকার প্রশ্নে সজাগ দেশগুলোর মধ্যে কেউই এখন পর্যন্ত ড্রোন হামলা নিয়ে কোনো বক্তব্য দেয়নি। যদিও জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ এ ঘটনায় নিন্দা জ্ঞাপন করেছে।

ইউনিসেফ জানায়, ‘ড্রোন হামলায় একটি শিশুর মৃত্যু আরও অনেক শিশুর মৃত্যুর সমান। শিশুরা যুদ্ধ চায় না। সব দলেরই উচিত সহিংসতা-দাঙ্গা থেকে শিশুদের দূরে রাখা। কারণ তারাই আমাদের ভবিষ্যৎ। ’

গবেষক দলের প্রধান ক্রিস উডস বলেন, ‘শিশু মৃত্যুহারের তালিকাটি শুধুমাত্র পাকিস্তানের ওপর ভিত্তি করেই তৈরি করা হয়েছে। পাকিস্তানের সরকার এবং সাধারণ জনগণ এ ড্রোন হামলার বিপক্ষে। কিন্তু সকল প্রতিবাদ অগ্রাহ্য করে যুক্তরাষ্ট্র অব্যাহতভাবে অভিযান চালিয়েই যাচ্ছে। ’

তিনি আরও বলেন, ‘ড্রোন প্রকল্পটি যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব গোয়েন্দাবাহিনী সিআইএ নিয়ন্ত্রণ করে। তারা ঘটনার স্বচ্ছতায় বিশ্বাস করে না। আর তাই যুক্তরাষ্ট্র বা পাকিস্তান কোনোখানেই সঠিক তথ্য পাওয়া খুবই কঠিন। কারণ তারা অনেক কিছুই গোপন করে ফেলে। ’

হামলায় বেসামরিক লোকজন মারা গেলে তারা শুধুমাত্র দুঃপ্রকাশ করে। কিন্তু তাদের ভুলের কারণে যে অনেকগুলো পরিবার নিদারুণ কষ্ট ভোগ করে তার কী হবে, প্রশ্ন ক্রিস উডসের।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।