ঢাকা: এ মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্র ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে না, ভবিষ্যতে কখনোই তা করবে না বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ারে হামলার এক দশক উপলক্ষে ভারতের একটি দৈনিকে লেখা প্রবন্ধে ওবামা এ মন্তব্য করেছেন।
প্রেসিডেন্ট ওবামা তার লেখায় বলেন, ‘আমরা স্মরণ করছি, ১১ সেপ্টেম্বরের হামলা কেবল যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নয়, তা ছিল বিশ্ব, মানবতা ও আমাদের আশা-আকাক্সক্ষার বিরুদ্ধে। ’
তিনি লেখেন, ‘আমরা স্মরণ করছি, ওই হামলা নিহত প্রায় ৩০০০ নির্দোষ মানুষকে। যাদের মধ্যে কয়েকশ মানুষ ৯০টি দেশের মানুষের নাগরিক। নিহতদের মধ্যে ছিল নারী-পুরুষ, তরুণ-বৃদ্ধ, বহুজাতি ও বহু ধর্মের। এই শোক বার্ষিকীতে আমরা নিহতদের পরিবার ও বিভিন্ন জাতির মানুষের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি। ’
বারাক ওবামা তার লেখায় আরও বলেন, ‘১১ সেপ্টেম্বর হামলার ওই সময়ে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হয়ে কাজ করেছি। বৃহৎ জোটের অংশ হিসেবে আমরা আফগানিস্তান থেকে আল কায়েদার প্রশিক্ষণ শিবির উৎখাত করেছি এবং তালিবানকে ক্ষমতাচ্যুত করে আফগান জনগণকে সন্ত্রাসমুক্ত হয়ে বসবাসে সুযোগ করে দিয়েছি। হামলার পরবর্তী কয়েকটি বছর অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গেছে। ’
প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমি বৈশ্বিক পারস্পরিক সহায়তা নবায়নের জন্য কাজ করেছি এবং আমরা যেসব বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছি সেগুলো মোকাবিলা করা প্রয়োজন। সম্পর্কের নতুন যুগে আমরা বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে পারস্পরিক স্বার্থরক্ষা ও সম্মানের ভিত্তিতে আমাদের অংশীদার গড়ার চেষ্টা করেছি।
ওবামা বলেন, একসঙ্গে অভিযান চালিয়ে আমরা আল কায়েদার পরিকল্পনা চূণবিচূর্ণ করেছি। ওসামা বিন লাদেনকে নির্মূল করেছি এবং আল কায়েদাকে পরাজয়ের মুখে ঠেলে দিয়েছি।
তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার জনগণ দেখিয়েছে, ন্যায়বিচার ও মর্যাদার নিশ্চিত পথ হচ্ছে অহিংস নৈতিক শক্তি, নিষ্ঠুর সহিংস সন্ত্রাসবাদ নয়। এটা পরিষ্কার যে, সহিংস চরমপন্থা পেছনে পড়ে গেছে এবং ভবিষ্যৎ তাদেরই দখলে রয়েছে যারা ধ্বংস নয়, গড়তে চায়। ’
ওবামা বিশ্ব সম্প্রদায়ের উদ্দেশে বলেন, ‘যেসব রাষ্ট্র ও মানুষ শান্তি ও সমৃদ্ধি চাচ্ছেন, আপনাদের সঙ্গেই আছে যুক্তরাষ্ট্রে। আমরা দেশের অভ্যন্তরে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লেও যুক্তরাষ্ট্র এখনো বিশ্বে একক নেতৃত্ব অব্যাহত রাখবে। ইরাক থেকে সেনা অপসারণ ও আফগানিস্তানে দায়িত্ব হস্তান্তর করলেও আমরা ইরাকি ও আফগান জনগণকে তাদের প্রতিরক্ষা ও সুযোগ দিয়ে যাব। আরব বিশ্ব হোক, আর যেখানেই হোক আমরা মর্যাদা ও সার্বজনীন মানবাধিকারের পাশে দাঁড়াব। ’
যারা ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ারে হামলা করেছে, তারা যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্ব সম্প্রদায়ের মধ্যে বাধা সৃষ্টি করছে। তবে এ মুহূর্তে আমরা বন্ধু ও অংশীদারদের সঙ্গে একতাবদ্ধ হয়ে আছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১১