২০১০ সালের এক মামলার দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে মঙ্গলবার (২৭ জুন) ইইউ’র দায়িত্বপ্রাপ্ত কম্পিটিশন কমিশন এ জরিমানা করে। কম্প্যারিজন শপিং সার্ভিস হলো সার্চ ইঞ্জিনে কোনো পণ্যের গুণ-মান-মূল্য যাচাই করার সুযোগ।
কোনো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এটাই সবচেয়ে বড় অংকের জরিমানার রায়। এর আগে একচেটিয়াত্ব রোধে ২০০৯ সালে ইন্টেল করপোরেশনকে ১১৮ কোটি ডলার জরিমানা করা হয়েছিল।
কম্প্যারিজন শপিং সার্ভিসে জালিয়াতির বিষয়টিকে ‘ক্ষমতার অপব্যহার’ বলে আখ্যা দিয়ে ইইউ’র কম্পিটিশন কমিশনের তরফ থেকে বলা হয়, গ্রাহকের সাধারণ পছন্দের অধিকার ক্ষুণ্ন করে যাচ্ছে গুগল। ব্যবহারকারীকে নিজেদের ‘পছন্দমতো’ পণ্যের দিকে প্রভাবিত করার এই অপচেষ্টার নীতি ৯০ দিনের মধ্যে বদলাতে হবে গুগলকে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আরও বড় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ইইউ’র কম্পিটিশন কমিশনের চোখে ইন্টারনেটে কোনো কিছু অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে গুগলের যে প্রাধান্য, সে ক্ষমতার অপব্যবহার করছে তারা। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটির প্লাটফর্ম ‘গুগল শপিংয়ে’ পণ্য খোঁজা হলে সেখানে নিজেদের ‘পছন্দসই’ তালিকা ব্যবহারকারীর সামনে আগে তুলে ধরা হচ্ছে।
প্রযুক্তিবিদরা মনে করেন, গুগলের মতো সার্চ ইঞ্জিনের প্লাটফর্মে এমন ‘অগ্রাধিকারভিত্তিক’ পণ্য প্রদর্শন ‘অস্বাভাবিক’। সাধারণত এসব সার্চ ফলাফলের পাশে ‘স্পনসরড’ দেখা যায়, যার অর্থ গুগল ফ্রি সার্চ ইঞ্জিন হয়েও অর্থগ্রহণ করেছে ওই পণ্যগুলোর প্রতিষ্ঠান থেকে।
কেবল স্ক্রল ডাউন করে নিচে গেলেই অন্য প্রতিষ্ঠানের পণ্য দেখা যায়। তারপর আবার গুগল শপিংয়ের বিজ্ঞাপনগুলোতে পণ্যের দাম ও ছবি এলেও প্রতিদ্বন্দ্বী প্লাটফর্মগুলোর পণ্যের ক্ষেত্রে এমন সুবিধা দেয় না গুগল।
রায় ঘোষণার পর ইইউ’র কম্পিটিশন কমিশনার মার্গরেথ ভেস্তাগের বলেন, গুগল যেটা করেছে সেটা ইইউর আইন অনুযায়ী একেবারেই বেআইনি। তাদের এই জালিয়াতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানগুলোর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২০১৫ সালেও জরিমানার মুখে পড়েছিল গুগল, সে যাত্রায় অবশ্য বেঁচে যায় তারা। তবে এবার আর রেহাই মিললো না।
মঙ্গলবার এ রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক এক বিবৃতিতে গুগল বলেছে, তারা কেবল ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য জন্য সহায়ক বিজ্ঞাপনগুলো দেখানোর চেষ্টা করে আসছে। এই রায়ের বিরুদ্ধে তারা আপিলও করবে। অবশ্য অভিযোগ ওঠার পরই গুগল বলেছিল, অ্যামাজন ও ইবে তাদের চেয়েও বেশি প্রভাব খাটায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৮ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০১৭/আপডেট ১৮৫২ ঘণ্টা
এইচএ/