লন্ডনভিত্তিক ক্যাম্পেইন ‘এগেইনস্ট দ্য আর্মস ট্রেড’ এর তথ্যানুসারে জানা গেছে যে, ইয়েমেন যুদ্ধ শুরুর সময় থেকে সৌদি আরবের কাছে ৪.১ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাজ্য।
আল-জাজিরাকে দেয়া সাক্ষাতকারে করবিন বলেন, ‘ইয়েমেনের যুদ্ধে সৌদি আরবের এসব অস্ত্র ব্যবহারের প্রতিবাদ আমরা বরাবরই করে আসছি।
ইয়েমেনে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর সমর্থিত আবদ-রাব্বু মানসুর হাদী সরকার ও হুথি বিদ্রোহীদের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। আর এ যুদ্ধে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দেশটি।
ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের উত্থানে আবার শংকিত হয়ে পড়েছে সৌদি আরব। দেশটি হুথি বিদ্রোহীদের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের মদদপুষ্ট বলে মনে করে। অপসারিত হাদী সরকারকে পুনরায় মসনদে বসাতে ২০১৫ সালে ইয়েমেনে সামরিক হস্তক্ষেপ করে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট। জাতিসংঘের তথ্যমতে, ইয়েমেনে চলা যুদ্ধে ২০ মার্চ পর্যন্ত সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলায় ১০ হাজারের বেশি লোক নিহত এবং ৪০ হাজার লোক আহত হয়েছেন।
সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলা ও উপুর্যপুরি অবরোধে আরব বিশ্বের সবচাইতে দরিদ্র দেশটিতে মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। কলেরার প্রাদুর্ভাব বাড়ছে এবং সত্তর শতাংশের বেশি লোক ত্রাণ সহায়তা নির্ভর হয়ে পড়েছে।
ইয়েমেন যুদ্ধে খুবই মর্মাহত উল্লেখ করে করবিন বলেছেন, ‘ইয়েমেন যুদ্ধটি নিয়ে আমি খুবই মর্মাহত। দেশটির মানুষের ওপর বোমা নিক্ষেপ, মানুষ নিহত হবার ঘটনা এবং কলেরা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার বিষয়গুলোতে আমি মর্মাহত। যারা ইতিমধ্যে মারা গেছে কিংবা আক্রান্ত হয়েছে তাও পীড়া দেয়। ’
এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত কলেরায় ১৩০০ এর বেশি লোক মারা গেছে। কলেরার দ্বিতীয় প্রাদুর্ভাবে এক বছরের কম সময়ে এ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। গত মার্চে ডব্লিউএফপি জানিয়েছে, ইয়েমেনের ২২টি প্রদেশের প্রায় অর্ধেক লোকই দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে।
করবিন জানিয়েছেন, বিগত সরকারকে সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রি না করার জন্য লেবার পার্টির পক্ষ থেকে আহবান জানানো হয়েছিল। এবং ভবিষ্যতেও যেন তা না হয় সে আহবানও করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘গত পার্লামেন্টে আমরা প্রস্তাবও এনেছিলাম। নতুন সরকার গঠন হবার পর পার্লামেন্টে আবারো আমরা তাই করবো। লেবার পার্টির নীতি এ ক্ষেত্রে অপরিবর্তনীয় থাকবে। ’
ইয়েমেনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মদদে সেনাদের দ্বারা ইয়েমেনে গুম, অন্যায় গ্রেফতার ও নির্যাতনের অভিযোগের সমালোচনাও করেছেন করবিন। তিনি বলেন, ‘এ সমস্ত অভিযোগের তদন্ত হওয়া উচিত ও এর প্রমাণগুলো সামনে আনা উচিত। ’
করবিন বলেন, ‘অস্ত্র বিক্রির নীতি এমন হওয়া উচিত যে, যেসব দেশগুলো অস্ত্র দিয়ে মানবাধিকার লংঘন করবে না বা মানুষ খুন করবে না তারা যুক্তরাজ্যের অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবে। ’
গত সপ্তাহে মানবাধিকার সংগঠনগুলো সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রি না করতে যুক্তরাজ্যের প্রতি আহবান জানিয়েছে। তারা সতর্ক করে বলেছে, যদি এটা চালু থাকে তবে তা হবে আন্তর্জাতিক আইনের লংঘন।
বাংলাদেশ সময়: ২৩১৭ ঘণ্টা, ১ জুলাই, ২০১৭
জিওয়াই/এমআরএম