বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে শর্ত মানা না হলে ‘আরও কড়া পদক্ষেপ’ নেওয়া হবে বলে আরব আমিরাতের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দেওয়ার পর এখন জল্পনা চলছে, রোববার মধ্যরাত পেরোলে কী ঘটবে কাতারের ভাগ্যে?
ডেডলাইন শেষ হওয়ার আগে ইতালির রোমে সাংবাদিকদের কাছে কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুলরহমান আল থানি বলেন, আলোচনার জন্য দোহা প্রস্তুত রয়েছে। প্রতিবেশী আরব দেশগুলোর উত্থাপিত অভিযোগগুলোর বিষয়ে আমরা কথা বলতে চাই।
কোনো সার্বভৌম দেশকে আলটিমেটাম দেওয়ার অধিকার কারও নেই বলেও উল্লেখ করেন কাতারের এই প্রভাবশালী মন্ত্রী। তার সাফ কথা, রিয়াদ ও তার মিত্রদের দাবি নাকচ করার পাল্টা প্রতিক্রিয়া নিয়ে কাতার ভীত নয়। কাতার সবরকমের পরিণতি মোকাবেলায় প্রস্তুত।
এছাড়া অবরোধ আরোপের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে আল থানি বলেন, আইন লঙ্ঘন করা উচিত নয়। সীমালঙ্ঘনও উচিত নয়।
সন্ত্রাসবাদে পৃষ্ঠপোষকতা, রিয়াদের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী তেহরানের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক রাখার অভিযোগে গত ৫ জুন কাতারের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দেয় সৌদি নেতৃত্বাধীন আরব জোট। তবে কাতার এ ধরনের অভিযোগ বরাবরই প্রত্যাখান করে আসছে।
অবরোধ প্রত্যাহারের জন্য মধ্যস্থতাকারী কুয়েতের মাধ্যমে গত ২২ জুন ১৩ দফা শর্ত বেঁধে দেয় আরবরা। ১০ দিনের মধ্যে শর্ত না মানলে নতুন করে অবরোধ আরোপের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে- আল জাজিরা বন্ধ, ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন ও কাতারে তুরস্কের সেনাঘাঁটি প্রত্যাহার।
এই শর্তগুলো দোহা প্রত্যাখ্যান করার পর রাশিয়ায় নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত ওমর সাইফ গোবাস গত সপ্তাহে এক সাক্ষাতকারে বলেন, কাতার যদি শর্ত মেনে না নেয় তাহলে নতুন করে অবরোধ আরোপ করা হবে। মিত্রদের বলা হবে, হয় কাতারের সঙ্গে থাকো, নতুবা আমাদের সঙ্গে।
আরেক সাক্ষাৎকারে আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনেয়ার ঘারঘাস বলেন, উত্তেজনা ছড়ানো বিকল্প হতে পারে না। কিন্তু দেশটিকে ছয় দেশের উপসাগরীয় জোট জিসিসি থেকে বের করে দেওয়া যেতে পারে। মিত্রদের সঙ্গে নিয়ে কাতারকে কোণঠাসা করে দেওয়া যেতে পারে।
যদিও সংকটে পড়ার পর থেকেই কাতারের পাশে দাঁড়িয়েছে ইরান ও তুরস্ক। বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, নতুন করে অবরোধ আরোপ করা হলে এর পরিণতি অস্ত্রের ঝনঝনানি পর্যন্ত গড়ালেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, জুলাই ০২, ২০১৭
জিওয়াই/এইচএ/