ভারতের জাতীয় বাঘ সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষের (এনটিসিএ) হিসাব মতে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত বিচরণ ক্ষেত্রগুলো থেকে ৫৮টি বাঘের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে আরও ৯টি বাঘের খণ্ডিত অংশ।
জীববৈচিত্র্য বিষয়ক সংগঠন ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফান্ড ফর নেচার-ইন্ডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, এতো বিপুলসংখ্যক বাঘ মারা গেছে মানুষের হাতে, বিশেষত শিকারীদের হাতে।
সংগঠনটির সাবেক ট্রাস্টি থিওডর ভাস্করণ বলেন, এভাবে বাঘ মারা পড়লেও কোনো জবাবদিহি নেই। প্রশাসনও নজর দিতে রাজি নয় যেন।
এক পরিসংখ্যান মতে, বিশ্বজুড়ে যত বাঘ রয়েছে, তার ৬০ শতাংশই ভারতে। কিন্তু এই বাঘের চামড়া বা দেহের অন্যান্য অংশের বিপুল চাহিদা রয়েছে চীন এবং এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চলে।
সংবাদমাধ্যমগুলোর খবর, এই চাহিদা মেটাতেই চোরাকারবারীরা বাঘ শিকার করে। কিন্তু ধীরে ধীরে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গড়াচ্ছে যে, একেবারে বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।
কর্নাটকের দক্ষিণাঞ্চলে চলতি বছর ১৪টি বাঘ মারা গেছে। মধ্যপ্রদেশের রাজ্য সরকারের হিসাব, সেখানে মারা পড়েছে ১৩টি বাঘ। কিছু বাঘ মারা পড়েছে সুন্দরবনের পশ্চিমবঙ্গ অংশেও।
জীববৈচিত্র্য বিষয়ক অধিকারকর্মী ভাস্করণ মনে করছেন, সরকার প্রকৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ এই বিপুল বাঘের মৃত্যু নিয়ে যে গোপনীয়তা বা অসচেতনতা দেখাচ্ছে সেটাই উদ্বেগের কারণ। বন বিভাগ আর গবেষকদের মধ্যেও কোনো সমন্বয় তৈরি করা হচ্ছে না, যাতে এই প্রাণীটি সংরক্ষণে কাজ করা যেতে পারে।
মনে করা হয়, এক শতক আগেও ভারতে লাখের বেশি বাঘ ছিল। কিন্তু এই শতকের শুরুর বছরগুলোতে প্রাণীটির সংখ্যা দাঁড়ায় দেড় হাজারেরও কমে।
এভাবে বাঘ মারা পড়তে থাকার কারণে এটিকে বিপন্ন প্রাণীর তালিকার লাল তালিকায় রেখেছে আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ ইউনিয়ন (আইইউসিএন)।
যদিও অধিকার সংগঠনগুলোর ব্যাপক প্রচারণার ফলে দ্বিতীয় দশক থেকে আবার বাড়তে থাকে বাঘের সংখ্যা। ২০১১ সালে যেখানে এর সংখ্যা ছিল ১৭০৬, সেখানে ২০১৬ সালে এসে বাঘের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২২৬-এ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩২ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১৭
এইচএ/