সম্প্রতি জাপানের একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই দাবিই করেছেন সামরিক বাহিনী থেকে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে রাষ্ট্র-ক্ষমতা দখল করা পারভেজ মোশাররফ। ৭৩ বছর বয়সী পারভেজ এখন দুবাইয়ে বসবাস করছেন।
জাপানি ওই সংবাদমাধ্যমটি মোশাররফের বরাত দিয়ে জানায়, ২০০১ সালের ডিসেম্বরে ভারতের পার্লামেন্টে ওই হামলা হলে এর পেছনে পাকিস্তান থেকে আসা সন্ত্রাসীদের দায়ী করে ইসলামাবাদকে তুমুলভাবে শাসায় নয়াদিল্লি। জবাবে পাকিস্তানও কথার তীর ছোড়ে ভারতের বিরুদ্ধে। বাকযুদ্ধ একসময় রণাঙ্গনের দিকে মোড় নিচ্ছিল। উভয়পক্ষই সীমান্তে তুমুল সৈন্য-সামন্ত জড়ো করে।
যদিও শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বানের প্রেক্ষিতে উভয়পক্ষই সরাসরি সংঘাতে জড়ানো থেকে বিরত থাকে। কিন্তু সেসময় যুদ্ধ লেগে গেলে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করা যায় কিনা, তা নিয়ে চিন্তা করতে থাকেন প্রেসিডেন্ট মোশাররফ।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, এই চিন্তায় বহুরাত ঘুমুতে পারেননি প্রেসিডেন্ট মোশাররফ। এমনকি পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট প্রকাশ্যে সেসময় বলেছিলেনও, তিনি পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিচ্ছেন না।
যদিও কোনোপক্ষেরই সেসময় পরমাণু অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তুত ছিল না, তবু দু’দিনের মধ্যে প্রস্তুত হয়ে যেত পরমাণু অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্র। পরে অবশ্য মোশাররফের বোধোদয় হয়ে যে, এমন অস্ত্র ব্যবহারে পাল্টা জবাব দিতে পারে ভারতও।
পারভেজ মোশাররফ বলেন, সেসময় দু’পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিলেও আমরা শেষ পর্যন্ত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রস্তুতির দিকে যাইনি, আমার মনে হয় ভারতও সেদিকে যায়নি। ধন্যবাদ উপরওয়ালাকে।
সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ভারতের পার্লামেন্টে ২০০১ সালের ১৩ ডিসেম্বর ওই হামলা চালায় পাকিস্তানের সন্ত্রাসী গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈয়্যবা ও জয়শ-ই-মোহাম্মদের ৫ জঙ্গি। এতে ৬ পুলিশ কর্মকর্তা, পার্লামেন্টের দুই নিরাপত্তারক্ষী, এক মালি ও ৫ হামলাকারী মিলিয়ে মোট ১৪ জন নিহত হয়।
১৯৯৯ সালে কারগিল যুদ্ধের সময় মোশাররফ ছিলেন সেনাপ্রধান। সেসময় নওয়াজ শরিফ প্রধানমন্ত্রী থাকলেও যুদ্ধের পর তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে রাষ্ট্রের কর্তৃত্ব নেন পারভেজ। এরপর ২০০১ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করে ২০০৮ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। তিনি প্রেসিডেন্ট থাকাকালেই ২০০৭ সালে নির্বাচনপূর্ব এক সভা শেষে গাড়িতে ওঠার সময় বেনজির ভুট্টোকে গুলি করে হত্যা করে আততায়ী।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৭
এইচএ/