সম্প্রতি কাজাখস্তানের রাজধানী আস্তানায় ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের সম্মেলনের ফাঁকে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনার পর বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়।
ওআইসি সম্মেলনের বর্তমান চেয়ার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়্যব এরদোগানের উদ্যোগে রাখাইনের রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে এ সভা হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, শরণার্থী এবং ভেতরগত ও বাহ্যিকভাবে বাস্তুহারা হয়ে পড়া রোহিঙ্গা মুসলিমদের তাদের মাতৃভূমিতে নিরাপদে, সুরক্ষিতভাবে, সসম্মানে এবং স্বাভাবিক জীবনযাত্রা নিশ্চিত করার মাধ্যমে স্থায়ী প্রত্যাবাসনে মিয়ানমার সরকারকে জরুরি পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে ওআইসি।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনীর পদ্ধতিগত নৃশংস কর্মকাণ্ডের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ জানানো হয় ওআইসি নেতাদের ওই সভায়। সেখানে আলোচনায় আসে, রাখাইনে আইনর্জাতিক আইনের গুরুতর ও নিন্দনীয় লঙ্ঘনের বিষয়টি, যার কারণে অসংখ্য বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয় এবং ৪ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।
সভায় ওআইসি সদস্যভুক্ত মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর নেতারা মিয়ানমার সরকারকে সেদেশে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘনের অভিযোগের নিরপেক্ষ ও পুঙ্খানুপঙ্খ তদন্তে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ফ্যাক্টফাইন্ডিং মিশনকে অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানান। তারা অভিমত দেন, এর মাধ্যমে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা যাবে।
ওআইসি নেতারা মিয়ানমার সরকারকে আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের প্রতি তাদের আনুগত্যকে সম্মান জানানোর আহ্বান জানিয়ে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সবরকমের পীড়ন ও বৈষম্যমূলক চর্চা বন্ধের কথা বলেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব অস্বীকারসহ সম্প্রদায়টির বিরুদ্ধে সহিংসতার মূল কারণগুলো উপড়ে ফেলতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মুসলিম দেশগুলোর নেতারা।
গত ২৫ আগস্ট থেকে রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনযজ্ঞ চালাচ্ছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। বিভিন্ন সংস্থার হিসাব মতে, সেখানে ৩ থেকে ৪ হাজার মানুষ গণহত্যার শিকার হয়েছে। নৃশংসতার মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে সোয়া ৪ লাখ মানুষ। বেসরকারি হিসাব মতে, এ সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৭
এইচএ/