ঢাকা, সোমবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

রাখাইনে সহিংসতা বন্ধ না হলে মাথাচাড়া দিতে পারে আইএস

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০১৭
রাখাইনে সহিংসতা বন্ধ না হলে মাথাচাড়া দিতে পারে আইএস বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা, ছবি: বাংলানিউজ

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা বন্ধ না হলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় মাথাচাড়া দিতে পারে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস, এমনই শঙ্কার কথা জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলি বিশপ।

একটি টেলিভিশন সাক্ষাতকারে বিশপ বলেন, আমরা সত্যিই উদ্বিগ্ন, আসলে কী ঘটে চলেছে রাখাইনে। রোহিঙ্গা মুসলমানদের অব্যাহত নির্যাতন করা হচ্ছে।

তারা প্রাণ বাঁচাতে বাধ্য হয়েই প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছেন। এমন সব অসহায় মানুষকে ব্যবহার করে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস’সহ অন্যান্য উগ্র সংগঠন বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটাতে পারে। যা পশ্চিমাদের জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।

সংকট সমাধানের বিষয়ে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নানামাত্রিক শঙ্কার কারণে দ্রুতই রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান হতে হবে। সেজন্যে রাজনৈতিক ও কূটনীতিক সমাধানের পাশাপাশি মানবিক দুর্যোগরোধে আমাদের সবার দৃষ্টি দিতে হবে। অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলি বিশপ

এ সময় তিনি মিয়ানমারে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূতকে রাখাইনে কী ঘটছে সেজন্য পরিদর্শনের নির্দেশনা দেন।

পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশকে আরও সহায়তা করার কথাও জানান তিনি।

জুলি বিশপ বলেন, আমি আগেই জাতিসংঘসহ মিয়ানমারের প্রতিনিধিদের বলেছি তারা যেন দ্রুতই রাখাইনে নির্যাতন বন্ধ করে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে কার্যকর উদ্যোগ নেয়। অস্ট্রেলিয়া মনে করে জাতিসংঘের অধীনে স্বাধীন একটি তদন্ত সংস্থা করতে হবে, যারা কাজ করবে রাখাইনে কী ঘটছে সেটির নির্ণয়ে।  

এ জন্য দেশটির স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি অনুমতি দেবেন বলেও আশা রাখেন অজি পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

জাতিসংঘ ইতোমধ্যে বলেছে, মিয়ানমারে যা চলছে তা ‘জাতিগত নিধন’। এর জন্য সু চির ভূমিকাকে দায়ী করা হচ্ছে। সরকারের স্টেট কাউন্সেলর ও শান্তিতে নোবেলজয়ী হয়েও তিনি রোহিঙ্গা নিধনে সায় দিচ্ছেন। কথা বলছেন সামরিক জান্তার ভাষায়।

জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইএমও) বলছে, সহিংসতার শিকার হয়ে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা পাঁচ লাখের বেশি। তবে বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা সাড়ে ছয় লাখ ছাড়িয়েছে। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। সহিংসতায় প্রাণ গেছে তিন হাজারের বেশি মানুষের। বেসরকারিভাবে এই সংখ্যা দশ হাজার পার করেছে মধ্য সেপ্টেম্বরেই। কোনো আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদল সেখানে কাজ করার সুযোগ না পাওয়ায় নতুন তথ্য জানা যাচ্ছে না।

ঘটনার শুরু গত ২৪ আগস্ট দিনগত রাতে রাখাইনে যখন পুলিশ ক্যাম্প ও একটি সেনা আবাসে বিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এর জেরে ‘অভিযানের’ নামে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী নিরস্ত্র রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুদের ওপর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। ফলে লাখ লাখ মানুষ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য চলে আসছেন।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতিগত দ্বন্দ্বের জেরে ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে দেশটির উত্তর-পূর্ব রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। সহিংসতার শিকার হয়ে গত বছরের অক্টোবরেও প্রায় ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০১৭
আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।