ঢাকা, বুধবার, ৮ মাঘ ১৪৩১, ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ রজব ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

নির্যাতকের ভূমিকায় গাদ্দাফি বিরোধীরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০১১
নির্যাতকের ভূমিকায় গাদ্দাফি বিরোধীরা

ত্রিপোলি: প্রথমত চোখ বন্ধ অবস্থায় হাত কড়া পড়িয়ে বেধড়ক পেটানো। এরপর বৈদ্যুতিক চেয়ারে বসানো এবং মুখের ওপর কম্বল রেখে গরম পানি ঢালা।

এসবই শাস্তির বিভিন্ন কায়দা। এমনই শাস্তি পাওয়া একজন বলছে, তিনি নির্দোষ। তিনি শুধু তার দায়িত্ব পালন করেছেন। কোনো কারণ ছাড়াই তাকে এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে লিবিয়ার বিদ্রোহীদের হাতে নির্যাতনের শিকার হওয়া একজন গাদ্দাফি অনুগত এভাবেই নিজের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা বললেন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের কাছে।

শাস্তির এই দৃশ্য মোটামুটি লিবিয়ার সবারই চেনা। এতেদিন বলা হতো, গাদ্দাফি প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধভাজনদের এই শাস্তি দিতো। কিন্তু এবার ঘটনা সম্পূর্ণ উল্টো। গাদ্দাফির অনুগত মানুষদেরই পড়তে হচ্ছে এমন অবর্ননীয় শাস্তির মুখোমুখি।

নির্যাতনের শিকার হওয়া ওই বন্দীর বয়স ৩৬। গাদ্দাফির আমলে তিনি লিবিয়ার সেনাবহিনীর গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করতেন। প্রায় দুই সপ্তাহ আগে বিদ্রোহী সেনারা তাকে ত্রিপোলির একটি ভবন থেকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার পরবর্তী টানা চারদিন তার ওপর অবর্ননীয় নির্যাতন চালায় বিদ্রোহী বাহিনীর সদস্যরা। তার হাত-পা-পিঠ-বুকে নির্যাতনের চিহ্ন স্পষ্ট ছিল। জায়গায় জায়গায় ছিল মারের কালসিটে দাগ।

ত্রিপোলির যে ঘরে রেখে তাকে নির্যাতন করা হয়েছিল সেই ঘরের দেয়ালে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ আর নির্যাতনের চিহ্ন স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল। এক সাবেক কর্মকর্তার তৎপরতায় শেষমেষ তিনি মুক্তি পান।

মুক্তির পর তিনি  বলেন, ‘আমি তিউনিশিয়াতে চলে যাচ্ছি। আমি এখন আর লিবিয়ার কাউকেই বিশ্বাস করি না। ’

বিদ্রোহীরা কয়েক হাজার মানুষকে আটক করে রেখেছে। এদের মধ্যে কাউকে অপরাধী সন্দেহে, কাউকে গাদ্দাফি প্রশাসনের সাবেক কর্মকর্তা অথবা সৈন্য হিসেবে। এছাড়াও বিশাল সংখ্যক মানুষ আটক হয়ে আছে যারা শুধু গাদ্দাফিকে সমর্থন করেছিল। এদের সকলকেই কোনো না কোনোভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে নির্যাতন কেন্দ্রে।

শুক্রবার হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রকাশিত এক রিপোর্টে এ চিত্র ফুটে উঠেছে। ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়, ৩৬ বছর বয়সী ওই  বন্দীর মতো আরও অনেকের ভাগ্যেই এমন ঘটনা ঘটছে লিবিয়াতে। তাদেরকে আইনের তোয়াক্কা না করেই বেধড়ক পেটানো হচ্ছে, এমনকি বৈদ্যুতিক চেয়ারেও বসানো হচ্ছে।
 
রিপোর্টে এমন মোট ৫৩ জন বন্দীর সাক্ষ্য দেওয়া হয়। আটক পরবর্তীতে বিচারের আওতায় না এনেই সরাসরি তাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে নির্যাতন শিবিরে।
 
মানবাধিকার সংস্থাটির ওয়াশিংটনের পরিচালক টম মালিনোস্কি বলেন, ‘সমস্যার মূলে আমরা কি উপসর্গ দেখতে পাই। বেসামরিক নাগরিকরা ভালো কিছু ভাবছে কিন্তু মিলিশিয়ারা তাদের কর্তৃত্ব বজায় রাখতে চাচ্ছে। পরিবর্তনটা কেথায় হচ্ছে তাহলে?। ’

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের রিপার্টে আরও বলা হয়, ‘বেশিরভাগ মানুষকেই মিলিশিয়ারা, বিগ্রেড এবং অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী আটক করেছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।