ঢাকা, সোমবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

রাখাইন জনশূন্য, আগুনের চিহ্ন দেখেছেন কূটনীতিকরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩, ২০১৭
রাখাইন জনশূন্য, আগুনের চিহ্ন দেখেছেন কূটনীতিকরা রাখাইনে জ্বালিয়ে দেওয়া গ্রাম, ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা বন্ধে ফের আহ্বান জানিয়েছেন বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা।

২০ দেশের প্রতিনিধিদল রাখাইন রাজ্য পরিদর্শন শেষে ফিরে একটি যৌথ বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা দেখেছি গ্রামে আগুন দেওয়ার চিহ্ন এবং স্থানীয় মানুষজন সেখানে কেউই ছিলেন না।

তারা পালিয়েছেন। আমরা সফরে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখেছি। আরেকবার আহ্বান জানাচ্ছি যেন সেখানে নির্বিঘ্নে মানুষজন বাস করতে পারেন সেই ব্যবস্থা করা, পাশাপাশি কোনো রকম বৈষম্য রাখা যাবে না পুরো রাজ্যে।

যাচাই ছাড়া রোহিঙ্গাই নেবে না মিয়ানমার!

আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, তারা যে হামলা করেছিল সেজন্য আমরা আবারও নিন্দা জানাই। তবে এর জের টেনে সহিংসতা সৃষ্টি এবং উৎপাটনের বিরুদ্ধেও কথা বলছি।

এটি একটি পরিদর্শন ছিল মাত্র, আগামীতে সহিংসতার মতো বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হওয়া উচিত বলেও কূটনীতিকরা মনে করেন।

মিয়ানমারের ‘ভালো বন্ধ হিসেবে’ তারা একসঙ্গে কাজ করার বিষয়েও আগ্রহ প্রকাশ করেন।  

সোমবারের (০২ অক্টোবর) ওই পরিদর্শনে বিদেশি বিভিন্ন দেশের দূতাবাস, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, জাতিসংঘ, এবং ইরাবতীসহ বেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমের ৬৬ জন সদস্য অংশ নেন। তারা তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ছয়টি গ্রামের স্থানীয় রাখাইন, মুসলিম, ম্রো ও হিন্দু জনগোষ্ঠীর মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক ও জার্মানিসহ অন্য দূতাবাসগুলোর সম্মিলিত বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে।

জাতিসংঘ ইতোমধ্যে বলেছে, মিয়ানমারে যা চলছে তা ‘জাতিগত নিধন’। এর জন্য অং সান সু চির ভূমিকাকে দায়ী করা হচ্ছে। সরকারের স্টেট কাউন্সেলর ও শান্তিতে নোবেলজয়ী হয়েও তিনি রোহিঙ্গা নিধনে সায় দিচ্ছেন। কথা বলছেন সামরিক জান্তার ভাষায়।

জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইএমও) বলছে, সহিংসতার শিকার হয়ে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা পাঁচ লাখের বেশি। তবে বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা সাড়ে ছয় লাখ ছাড়িয়েছে। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। সহিংসতায় প্রাণ গেছে তিন হাজারের বেশি মানুষের। বেসরকারিভাবে এই সংখ্যা দশ হাজার পার করেছে মধ্য সেপ্টেম্বরেই। কোনো আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদল সেখানে কাজ করার সুযোগ না পাওয়ায় নতুন তথ্য জানা যাচ্ছে না।

ঘটনার শুরু গত ২৪ আগস্ট দিনগত রাতে রাখাইনে যখন পুলিশ ক্যাম্প ও একটি সেনা আবাসে বিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এর জেরে ‘অভিযানের’ নামে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী নিরস্ত্র রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুদের ওপর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। ফলে লাখ লাখ মানুষ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য চলে আসছেন।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতিগত দ্বন্দ্বের জেরে ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে দেশটির উত্তর-পূর্ব রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। সহিংসতার শিকার হয়ে গত বছরের অক্টোবরেও প্রায় ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০১৭/আপডেট ১৮৩০ ঘণ্টা
আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।