ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

নেপালে বামরা একাট্টা, পাল্টা জোট ক্ষমতাসীনের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ৫, ২০১৭
নেপালে বামরা একাট্টা, পাল্টা জোট ক্ষমতাসীনের জোট গঠনের অনুষ্ঠানে বাম নেতারা। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: ভাঙ্গাগড়ার খেলায় ভালোই জমে উঠেছে হিমালয় কন্যা নেপালের রাজনীতি। ক্ষমতায় থাকা নেপালী কংগ্রেস জোটের শরিক মাওবাদী কেন্দ্র প্রধান বিরোধী দল সিপিএন-ইউএমএল এর সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধার মাত্র এক দিনের মাথায় অন্তত ৫টি দলকে নিয়ে পাল্টা জোট গড়ার ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীনরা। 

এর মাধ্যমে কার্যত নেপালের রাজনৈতিক দলগুলো বাম ও ডান এই দুই শিবিরে ভাগ হয়ে গেলো।  

বুধবার (৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কংগ্রেস প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবার সভাপতিত্বে নির্বাচনী জোট গড়তে একাট্টা হয়েছে রাষ্ট্রীয় জনতা পার্টি, মাধেশি জনঅধিকার ফোরাম-লোকতান্ত্রিক, কামাল থাপার নেতৃত্বাধীন রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টি, পশুপতি শমসের রানার নেতৃত্বাধীন রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টি (প্রজাতান্ত্রিক) ও উপেন্দ্র যাদবের নেতৃত্বাধীন সমাজবাদী ফোরাম।

 

এসব দলের গায়ে আঞ্চলিক সংগঠনের তকমা থাকলেও ক্ষমতাসীন কংগ্রেসের নেতৃত্বে বৃহত্তর গণতান্ত্রিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশের কৌশল নির্ধারণে ৭ সদস্যের এক টাস্কফোর্স গঠন করেছে তারা।

এর ঠিক আগের দিন মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) সংবাদ সম্মেলন ডেকে বৃহত্তম বামপন্থি জোট গঠনের ঘোষণা দেয় নেপালের প্রধান দুই বাম শক্তি সিপিএন-ইউএমএল ও মাওবাদী কেন্দ্র। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় এক সময়কার মাওবাদী নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বাবুরাম ভট্টরাইয়ের নেতৃত্বাধীন নয়াশক্তি আন্দোলন।

জোট গঠনের বৈঠকে ক্ষমতাসীন কংগ্রেস।  ছবি: সংগৃহীত উভয় জোটই মূলত নির্বাচনী গাঁটছড়া হলেও মাওবাদী কেন্দ্র প্রধান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল প্রচন্দ এবং কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল-ইউনাইটেড মার্কসিস্ট লেনিনিস্ট (সিপিএন-ইউএমএল) নেতা কে পি অলি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাধব কুমার নেপাল কার্যত একীভূত হওয়ার পথেই এগুচ্ছেন বলে আভাস মিলেছে।

একীভূত হওয়ার কাজ তদারকিতে ৮ সদস্যের এক কমিটিও করেছে বামপন্থিরা। তাদের নতুন দলের নাম হতে পারে নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি। বেইজিং এর সমর্থনপুষ্ট এই দল ভারত বিরোধিতাকে রাজনৈতিক এজেন্ডা হিসেবে কাজে লাগাতে পারে। যদিও সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্কের অঙ্গীকার করেছে নতুন বাম জোট। দিয়েছে আসন্ন নির্বাচনে ইউএমএল-মাওবাদী ৬০:৪০ অনুপাতে প্রার্থিতা ভাগাভাগির ঘোষণাও।  

তবে আসন্ন প্রাদেশিক ও জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এই জোট গঠন করা হলেও এ উদ্যোগকে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র বলে মনে করছে প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবার নেতৃত্বাধীন নেপালী কংগ্রেস। এরই মধ্যে মাওবাদী কেন্দ্রকে বিশ্বাসঘাতক আখ্যা দিয়েছে তারা। দিয়েছে কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণের ঘোষণাও।

যদিও নেপালী কংগ্রেসের সঙ্গে মাওবাদীদের জোটকে শুরু থেকেই ঠুনকো ভাবা হচ্ছিলো। কেননা, ২০০৬ সালের আগে নেপালে গৃহযুদ্ধ চলাকালে গেরিলা নেতা প্রচন্দকে জীবিত বা মৃত ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লক্ষ রুপি পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন শের বাহাদুর দেউবা। তাই তাদের মধ্যে জোট গঠনের সময়েই ভাঙ্গার আশঙ্কা প্রবলই ছিলো।

উপরন্তু গৃহযুদ্ধের অবসানের পর ২০০৮ সালে প্রথম জাতীয় (সংবিধান সভা নির্বাচন) নির্বাচনের সময় থেকেই নেপালের জাতীয় রাজনীতিতে অস্থিরতা বিরাজ করছিলো। এ কারণে গত ১০ বছরেই ৭ বার প্রধানমন্ত্রী পাল্টাতে হয়েছে নেপালে। আসছে নভেম্বর থেকেই ফের ভোটের ডামাডোল শুরু হচ্ছে দেশটিতে।

বাংলাদেশ সময়: ০০০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৫, ২০১৭
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।