গত রোববার (৮ অক্টোবর) থেকে ছড়িয়ে পড়া এ দাবানলে মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) দিনগত রাত পর্যন্ত জ্বলছিল ১ লাখ ১৫ হাজার একরেরও বেশি এলাকা। দাবানল ভয়াবহ আকার নিয়েছে মদ উৎপাদনের কাউন্টি সোনোমা, নাপা ও মেনডোসিনোতে।
মঙ্গলবার রাতে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত দাবানলের কারণে মারা গেছেন ১৭ জন। এরমধ্যে সোনোমা কাউন্টিতেই প্রাণ গেছে ১১ জনের। দু’জন মারা গেছেন নাপা কাউন্টিতে। এছাড়া অন্যান্য এলাকায় মারা গেছেন ৪ জন।
দাবানল-কবলিত এলাকায় নিখোঁজ রয়েছেন এখন পর্যন্ত ১৮০ জন। এরমধ্যে ১৫৫ জনই সোনোমা কাউন্টির। এই কাউন্টি ও নাপায় দাবানলে আহত বা অসুস্থ শতাধিক মানুষকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এই সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। দাবানলে ২ হাজারেরও বেশি বসতবাড়ি ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ভস্মীভূত হয়ে গেছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ক্যালিফোর্নিয়ার রাজ্য সরকার সেখানে জরুরি অবস্থা জারি করলেও আবহাওয়া অধিদফতর আরও শঙ্কার কথা জানাচ্ছে। তারা বলছে, ১৭টি স্থান থেকে প্রথমে দাবানল ছড়ালেও এখন ব্যাপক আকার নিয়েছে এই দুর্যোগ। কম আর্দ্রতা এবং শুষ্ক আবহাওয়ার মতো প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে কিছু কিছু এলাকায় ৮০ কিলোমিটার বেগে বইছে দমকা হাওয়া, যে কারণে অবস্থা আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে। চলতি সপ্তাহে বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা না থাকায় এবং বুধবারও সর্বোচ্চ ৬৫ কিলোমিটার বেগে দমকা হওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকায় দাবানল ক্রমেই নিয়ন্ত্রণ দুঃসাধ্য হয়ে উঠতে পারে।
নিরাপত্তা বাহিনী ক্যালিফোর্নিয়া হাইওয়ে পেট্রোলের ক্যাপ্টেন মাইক প্যালাসিও বলেন, দমকলকর্মীরা প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন দাবানল নিয়ন্ত্রণের। কিন্তু এর ভয়াবহতার কাছে আমাদের প্রচেষ্টা তুচ্ছ প্রমাণ হচ্ছে। আমরা জনগণকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার কাজ করছি। যেন আটকে পড়া শেষ মানুষটিকেও বাঁচাতে পারি।
‘এটা ক্যালিফোর্নিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্যোগগুলোর একটি হতে চলেছে। আমরা এখন কেবল মানুষকে উদ্ধারে মনোযোগ দিচ্ছি। কিন্তু দমকা হাওয়া দমকলকর্মীদের কাজের ক্ষেত্রে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বাসভবন হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এরইমধ্যে ক্যালিফোর্নিয়ার জন্য দুর্যোগকালীন সহায়তা সংক্রান্ত একটি তহবিলে সই করেছেন। প্রেসিডেন্ট এই দুর্যোগে কেন্দ্র সরকারের সর্বোত সহযোগিতারও আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্য সরকারকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৭
এইচএ/