সম্প্রতি ভারতের ইংরেজি দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এ কথা বলেন।
ভারতের রাষ্ট্রপতির পদ থেকে সাবেক হওয়া এই পোড়খাওয়া বাঙালি রাজনীতিকের লেখা তৃতীয় বই ‘দ্য কোয়ালিশন ইয়ারস’ এর মোড়ক উন্মোচন করা হয় সম্প্রতি।
ওই অনুষ্ঠান শেষে ‘আপনার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা কী?’ টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রণব মুখার্জি বলেন, ‘আমার মনে হয় বাংলাদেশের কথা; ১৯৭১ সালে ১২ বা ১৩ কোটি মানুষ নিয়ে একটি জাতির জন্ম’
তিনি বলেন, ‘আমার এখনও মনে পড়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী পার্লামেন্টের দুই কক্ষে সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলেন, আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, ভারতীয় ও মুক্তি বাহিনীর যৌথ কমান্ডের কাছে পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছে। স্বাধীন বাংলাদেশের স্বাধীন রাজধানী ঢাকা এখন মুক্ত। এটাই আমার রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে বড় ঘটনা। ’
দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে-এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রণব মুখার্জি বলেন, ‘এটা বললে অতি-সরলিকরণ করা হবে। দ্বিজাতি তত্ত্ব ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই এর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।
‘শুধুমাত্র ধর্ম কোনো রাষ্ট্রের ভিত্তি হতে পারে না বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিয়ে তা আবারও প্রমাণিত হয়েছিলো। এর সঙ্গে ভাষা, সংস্কৃতি, সামাজিক আচার-আচরণের মতো বিষয়গুলোও যুক্ত। ’
কংগ্রেসের আদর্শে বিশ্বাসী প্রণব মুখার্জি ২০১২ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ভারতের ১৩তম রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। চলতি বছরের ২৪ জুলাই ‘রাইসিনা হিল’ ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজনীতি থেকে অবসর নেন পদ্মবিভূষণ পদকপ্রাপ্ত এই রাজনীতিক।
এ সময় ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মীর সমস্যা নিয়েও কথা বলেন কংগ্রেসের এই সিনিয়র নেতা।
বইয়ের এক জায়গায় প্রণব মুখার্জি লিখেছেন, ‘কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠকের পর মনে হয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে হতে পারে। কিন্তু পরবর্তীতে মনমোহন সিংকে প্রধানমন্ত্রী করা হয়। ’
এ নিয়ে তার মধ্যে ক্ষণিকের জন্য হলেও আক্ষেপ তৈরি হয়েছিল বলে বইয়ে উল্লেখ করেছেন তিনি।
ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংও। এ প্রসঙ্গে টেনে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পদ প্রণবের প্রাপ্য ছিলো।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৮
এমএ/