তিনি বলেছেন, কার্যকরভাবে সাড়া দিতে হবে। যাতে পরিস্থিতির সত্যিই উন্নতি হয়।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে জর্ডানের রানি কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছান। এরপর তিনি রোহিঙ্গা শিবির ও স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক এনজিও পরিচালিত স্কুলগুলো পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি রোহিঙ্গা শিশুদের সঙ্গে খেলে তাদের আনন্দ দেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। প্রশ্নের উত্তর দেন।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা নির্যাতনকে তিনি সহিংসতার চরম পর্যায় বলে উল্লেখ করেন। আহ্বান জানান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও উন্মুক্তভাবে এগিয়ে আসার।
রানিয়া আল আবদুল্লাহ বলেন, মিয়ানমার যা করেছে তা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। তবে তা অনেকেই এড়িয়ে যাচ্ছেন। বিশ্ববাসীর প্রতিক্রিয়া এ বিষয়ে নিঃশব্দ। তাই আমি আহ্বান জানাবো জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় একযোগে এগিয়ে আসবে।
জর্ডান নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের পাশে রয়েছে এটি জানাতে তিনি এসেছেন বলেও উল্লেখ করেন।
রানি বলেন, কক্সবাজারে স্থানীদের চেয়ে রোহিঙ্গার সংখ্যা দ্বিগুণ (ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে নতুন করে, আগে থেকে রয়েছেন চার লাখের বেশি)। এতে বোঝা যায়, নিজেদের নানা দিকে ক্ষতির পরও নির্যাতিত মানুষের পাশে বাংলাদেশ। যা বিশ্ব দরবারে প্রশংসা কুড়িয়েছে।
জর্ডানের রানি রানিয়া আবদুল্লাহ ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটির (আইআরসি) বোর্ড সদস্য। একইসঙ্গে তিনি জাতিসংঘের মানবিক সংস্থাগুলোর পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন।
এদিকে সম্প্রতি কক্সবাজার ঘুরে যাওয়া আন্তর্জাতিক অভিবাসন বিষয়ক এজেন্সি ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের (আওএম) মহাপরিচালক উইলিয়াম লেসি সুইং বলেছেন, সারাবিশ্বে যে কটি মানবিক সংকট এখন চলছে তার মধ্যে সব থেকে গুরুতর সমস্যা হচ্ছে রোহিঙ্গা সমস্যা। এর সমাধান হতে হবে রাজনৈতিকভাবে। ছয় মাসের জন্য সংকট মোকাবেলায় অর্থের জোগান যাই হোক না কেন, সংকট দীর্ঘমেয়াদী।
রোহিঙ্গা ইস্যুকে জাতিসংঘ জাতিগত নিধন বলেছে। মার্কিন প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম সিএনএন তাদের এক লেখায় একে গণহত্যা বলে উল্লেখ করেছে। তারা বলেছে রাখাইনে যা চলছে তাকে গণহত্যা ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না। তারা আরও বলছে, যা অস্বীকার করতে পারবে না আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।
ঘটনার শুরু গত ২৪ আগস্ট। ওই তারিখের দিনগত রাতে রাখাইনে পুলিশ ক্যাম্প ও একটি সেনা আবাসে বিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এর জেরে ‘অভিযানের’ নামে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী নিরস্ত্র রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুদের ওপর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। ফলে লাখ লাখ মানুষ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য চলে আসছেন।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতিগত দ্বন্দ্বের জেরে ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে দেশটির উত্তর-পূর্ব রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। সহিংসতার শিকার হয়ে গত বছরের অক্টোবরেও প্রায় ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।
রোহিঙ্গা ঢল অব্যাহত, অর্থায়নের আহ্বান জাতিসংঘের
ফের মিয়ানমারের সাফাই গাইলো চীন!
বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৭
আইএ