ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

জাহাজের মৃত্যুদূত আসবে কচ্ছপের ছদ্মবেশে!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৭
জাহাজের মৃত্যুদূত আসবে কচ্ছপের ছদ্মবেশে! মাছ বা কচ্ছপের চলন ভঙ্গি নকল করে ক্ষুদ্রাকৃতির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন এই টর্পেডো শত্রু জাহাজ বা ডুবোজাহাজের গায়ে আঘাত হানবে নি:শব্দ আততায়ীর মতো

যুদ্ধপ্রযুক্তিতে যুক্ত হতে যাচ্ছে এক অত্যাধুনিক টর্পেডো। আশ্চর্য কৌশলে মাছ বা কচ্ছপের চলার ভঙ্গি নকল করে শত্রুর যুদ্ধজাহাজের অভিমুখে অগ্রসর হবে এ মৃত্যুদূত। শত্রু জাহাজের ক্যাপ্টেন যখন বুঝবেন এটা কোনো মাছ কিংবা কচ্ছপ নয় বরং টর্পেডো, ততোক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যাওয়ার কথা।

এমনই চতুর এক টর্পেডো তৈরির ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। সম্প্রতি রাশিয়ান সংবাদমাধ্যমে এ সম্পর্কে আলোকপাত করেন সেদেশের প্রথম সারির টর্পেডো বিশেষজ্ঞ শামিল আলিয়েভ।

জানা যায়, টর্পেডোটি আকারে হবে গতানুগতিক টর্পেডোর তুলনায় বেশ ছোট। ওজন ১০০ পাউন্ডের বেশি নয়। পানির উপরিতল দিয়ে নিঃশব্দে অগ্রসর হবে তা। গতিও বেশি নয়, মাত্র তিন থেকে ৫ নট প্রতিঘণ্টায় (১ নট = ১.১৫ মাইল/ঘণ্টা)। ধীর গতির কারণে টর্পেডোটিকে মাছের বদলে কচ্ছপের সাথেই তুলনা করেছেন আলিয়েভ।

রাশিয়ান সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আলিয়েভ বলেন, কচ্ছপ স্বভাবের টর্পেডো তৈরির কার্যক্রমটি এখনও পরিকল্পনার পর্যায়ে আছে। আমাদের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যুক্ত করা। শত্রুর নজর এড়াতে টর্পেডোকে মাছেদের আচরণ অনুকরণ করতে হবে। জানতে হবে অপ্রত্যাশিত পরিবেশে নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নিতে’।

আলিয়েভ মনে করেন এসব ছদ্মবেশী টর্পেডোর একটা ‘ঝাঁক’ যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দিতে সক্ষম হবে।

তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন নেভি সাবমেরিন অফিসার ও বিশ্লেষক ব্রায়ান ক্লার্ক ছদ্মবেশী টর্পেডোর বেশ কিছু দুর্বলতা চিহ্নিত করেন। তিনি মনে করেন, দূর থেকে লক্ষ্যবস্তুর অবস্থান নির্ধারণ করতে উপযুক্ত যন্ত্রপাতি স্থাপন করার জন্য এর আকৃতিটা যথেষ্ট নয়। বাস্তবধর্মী নেভিগেশন গিয়ার স্থাপন করাও হবে বেশ ঝামেলার।

টর্পেডোটি যদি লক্ষ্যবস্তু পর্যন্ত পৌঁছে আঘাতও হানে, তা তেমন একটা ক্ষতি সাধন করতে পারবে না। কারণ, যুদ্ধজাহাজের তলদেশ চূর্ণ করতে টর্পেডোতে কমপক্ষে এক হাজার পাউন্ড বিস্ফোরক স্থাপন করা দরকার। কিন্তু কচ্ছপ টর্পেডোতে খুব বেশি হলে ৪৫ পাউন্ড বিস্ফোরক স্থাপন করা সম্ভব।

রাশিয়ার অত্যাধুনিক গুপ্ত-ঘাতকের গতির দিকেও আঙুল তুলেছেন এ মার্কিন বিশ্লেষক। মাত্র তিন থেকে পাঁচ নট গতিতে দ্রুতগতির যুদ্ধজাহাজ বা সাবমেরিনে আঘাত হানা বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়াবে। পানির নিচে স্থাপিত পাইপলাইনের মতো স্থির লক্ষ্যবস্তুর জন্য এটা কাজে দিতে পারে।

তবে, একটা নয়, ‘এক ঝাঁক ছদ্মবেশী টর্পেডো’র কথা আগেই উল্লেখ করেছিলেন আলিয়েভ। সুতরাং, রাশিয়ার এ টর্পেডো শত্রুর চোখ ধোঁকা দিয়ে শতভাগ নিশ্চয়তায় লক্ষবস্তুতে আঘাত হানতে আরও যেসব কৌশল অবলম্বন করতে যাচ্ছে, তা সামরিক গোপনীয়তার মধ্যে থাকাই স্বাভাবিক।

বাংলাদেশ সময়:১২৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৭
এনএইচটি/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।