রোববার (১০ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় সকালে বিক্ষোভকারীরা বৈরুতের উত্তরে আওকার জেলায় মার্কিন দূতাবাস লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ে এবং রাস্তায় অগ্নিসংযোগ করে। তারও আগে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ হয় জাকার্তায়।
লেবানিজ সংবাদমাধ্যম জানায়, বিক্ষোভকারীরা মার্কিন দূতাবাসমুখী সড়ক ধরে এগোতে চাইলে নিরাপত্তা বাহিনী তাদের বাধা দেয়। এরপরও বিক্ষোভকারীরা ফিলিস্তিনের পক্ষে এবং যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শ্লোগানে শ্লোগানে এলাকা প্রকম্পিত করে সামনে যেতে চাইলে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে নিরাপত্তা বাহিনী কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান নিক্ষেপ করে। এতে বেশ ক’জন আহত হয়।
এদিকে, জাকার্তায় মার্কিন দূতাবাসের বাইরেও জড়ো হয় কয়েক হাজার মানুষ। এসময় তাদের হাতে দেখা যায় ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে লেখা বেশ কিছু ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘প্যালেস্টাইন ইজ ইন আওয়ার হার্টস’ (হৃদয়ে ফিলিস্তিন)।
অন্যদিকে, সুইডেনের গোথেনবার্গ শহরেও ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতার প্রতি সংহতি জানিয়ে এবং ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জ্বলন্ত বস্তু নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।
গত ৭ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক নগরী জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানীর স্বীকৃতি দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ইসরায়েল-ফিলিস্তিন প্রশ্নে দশকের পর দশক ধরে অনুসৃত নীতি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে আসার এই ঘোষণায় বিশ্বজুড়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। ট্রাম্পের এই ঘোষণাকে ইসরায়েল স্বাগত জানালেও তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায় ফিলিস্তিন। শনিবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে এর কড়া প্রতিবাদ জানায় মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলোর জোট ‘আরব লিগ’ও। এই ইস্যুতে জরুরি
ইসরায়েল পুরো জেরুজালেমকেই এর রাজধানী হিসেবে ঘোষণা দিলেও ফিলিস্তিনিরা পূর্ব জেরুজালেমকে তাদের ভবিষ্যৎ ‘স্বাধীন’ রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে দেখে আসছে। এছাড়া ১৯৯৩ সালের ফিলিস্তিন-ইসরায়েল শান্তিচুক্তি অনুযায়ী, জেরুজালেম নগরীর বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি হতে হবে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে মেনে নেয়নি। এজন্য ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখা সবগুলো দেশের দূতাবাস এখনও তেল আবিবেই রয়েছে।
জেরুজালেম ইহুদি, খ্রিস্টান ও মুসলিম- বিশ্বের এই তিন প্রধান ধর্মাবলম্বীদের কাছেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও পবিত্র বলে বিবেচিত।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার আরব ও মুসলিম মিত্র দেশগুলোর বোঝাপড়ার অভাব দেখা দেওয়ার প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতির সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের শান্তির দূতিয়াল হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইলেও এখন এক্ষেত্রে ‘বিপরীত’ ভাববারও সুযোগ তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৭
এইচএ/