ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ছাপানো পত্রিকার আয়ু আর ১০ বছর: নিউইয়র্ক টাইমস সিইও

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৮
ছাপানো পত্রিকার আয়ু আর ১০ বছর: নিউইয়র্ক টাইমস সিইও ছাপানো পত্রিকা আর্কাইভে উঠে যাচ্ছে, সাফ বলে দিলেন নিউইয়র্ক টাইমসের সিইও মার্ক টমসন

আর মাত্র ১০ বছর। হ্যাঁ, সর্বোচ্চ ১০ বছর টিকতে পারবে প্রিন্ট মিডিয়া বা ছাপানো সংবাদপত্র। বিশ্বব্যাপী অনলাইন সংবাদমাধ্যমের জয়জয়কারে এরইমধ্যে কোণঠাসা ছাপানো সংবাদপত্রগুলি ১০ বছরের মধ্যেই বিলীন হয়ে যাবে তথ্যপ্রযুক্তি-নির্ভর দুনিয়া থেকে। 

নিকট অতীত আর বর্তমান বিবেচনায় নিয়ে সব হিসাব-নিকাশ শেষে এই স্পষ্ট বার্তা দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক টমসন। পাশাপাশি জানিয়েও দিলেন, নিউইয়র্ক টাইমসের ছাপানো পত্রিকা বের করার আর আদৌ দরকার আছে কি-না, তা নিয়ে পর্যালোচনায় বসে শিগগির সিদ্ধান্ত নেবেন তারা।

সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) প্রখ্যাত সংবাদমাধ্যম সিএনবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ছাপানো পত্রিকার যাত্রার শেষ দেখছেন বলে জানিয়ে দেন টমসন। অর্ধদশক আগেই বাস্তবতা বুঝে অনলাইনে জোর দেয় নিউইয়র্ক টাইমস। এরই অংশ হিসেবে ২০১৪ সালে সংবাদমাধ্যমটির তরফ থেকে জানানো হয়, তারা ছাপানো পত্রিকার কর্মী ছাঁটাই করে অনলাইনের জন্য কর্মী নিয়োগ দিচ্ছে। এরপর দফায় দফায় পত্রিকা অংশের কয়েকশ’ কর্মী ছাঁটাই করে অনলাইনের লোকবল বাড়ানো হয়।

এই প্রসঙ্গেটি তুলে ধরে সাক্ষাৎকারে নিউইয়র্ক টাইমস সিইও বলেন, যে হারে ছাপানো পত্রিকার বিক্রি কমছে, তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি বাড়ছে অনলাইনের পাঠক। গত বছরের শেষ তিন মাসেই নিউইয়র্ক টাইমসের অনলাইন ভারসনের সাবস্ক্রাইবার (নিবন্ধিত পাঠক) বেড়েছে এক লাখ ৫৭ হাজার।

বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ও জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমটির সিইও বলেন, ‘আমি যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের ছাপানো পত্রিকার আয়ু দেখছি ১০ বছর। চরম বাস্তবতার সামনে দাঁড়িয়ে ছাপানো পত্রিকা, আর্কাইভে উঠে যাওয়ার পর্যায়ে পৌঁছে গেছে বলা যায়। ’ছাপানো পত্রিকা ও অনলাইন সংবাদমাধ্যম পড়ার সুবিধা-অসুবিধা ছবিতে টমসন বলেন, আমরা যদি কেবল অর্থনৈতিক দিক থেকেই সিদ্ধান্ত নিতে যাই, দেখছি যে ছাপানো পত্রিকা আমাদের কোনো স্বার্থসিদ্ধি করতে পারছে না। সেজন্য আমরা ডিজিটাল (ভারসন) ব্যবসায়ের দিকেই ঝুঁকতে বাধ্য হচ্ছি, যেন ছাপানো পত্রিকা বিলীন হয়ে গেলেও আমাদের প্রতিষ্ঠান বেঁচে থাকতে পারে। ’

নতুন প্রজন্ম সংবাদমাধ্যম বলতে অনলাইন নিউজপোর্টালকেই বুঝছে উল্লেখ করে নিউইয়র্ক টাইমসের সিইও গত বছরের চতুর্থ কোয়ার্টারে ডিজিটাল সাবস্ক্রাইবার বৃদ্ধির বিষয়টি পুনরায় তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমাদের এখন যে সাবস্ক্রাইবার যুক্ত হচ্ছে, বেশিরভাগই নতুন, তথ্যপ্রযুক্তি প্রজন্মের।

তিনি জানান, ডিজিটাল সাবস্ক্রাইবার বৃদ্ধির ফলে এই খাত থেকে আয়ও বাড়ছে দারুণভাবে। ২০১৬ সালের শেষ কোয়ার্টারের তুলনায় ২০১৭ সালের একই সময়ে ডিজিটাল সাবস্ক্রিপশনে আয় বেড়েছে ৫১ শতাংশ। সবমিলিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের অনলাইন ভারসনের আয় বেড়েছে ১৯ দশমিক ২ শতাংশ।

প্রিন্ট ভারসন নিয়ে একপ্রকার কোম্পানির ‘বোঝা টানার দশা’ হলেও টমসন জানান, ডিজিটাল ভারসনের শনৈ শনৈ অগ্রযাত্রায় পুরো কোম্পানির আগের বছরের তুলনায় আয় বেড়েছে ১০ শতাংশ, যা অংকে দাঁড়ায় ৪৮ কোটি ৪১ লাখ ডলার। কোম্পানির শেয়ারের দাম গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ২০ শতাংশ।

তথ্যপ্রযুক্তির বিপ্লবের যুগে অনলাইন নিউজপোর্টালকেই ভবিষ্যৎ গণমাধ্যমের নেতৃত্বদাতা হিসেবে বাছাই করা প্রযুক্তিবিদ-সাংবাদিকদের একজন টমসন। তার নেতৃত্বেই প্রথম কোনো সংবাদমাধ্যম হিসেবে নিউইয়র্ক টাইমসের অনলাইন ভারসন ১০ লাখ সাবস্ক্রাইবারের মাইলফলক ছাড়িয়ে যায়।

টমসন বলেন, আমরা ছাপানো পত্রিকা নিয়ে ঠেকে গেলেও ডিজিটাল আমাদের এগিয়ে দিচ্ছে। আমাদের অনলাইন ভারসনের অগ্রগতি খুবই বিস্ময় জাগানিয়া। শেষতক আসলে ডিজিটাল ভারসনই হবে সবার আশ্রয়স্থল।

বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৮
এইচএ/

* অনলাইনের চাপে ব্রিটিশ সংবাদপত্রের ত্রাহি অবস্থা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।