ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৩১ কোটি ডলারে আর্টিলারি কিনছে সৌদি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০১৮
যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৩১ কোটি ডলারে আর্টিলারি কিনছে সৌদি এম১০৯ আর্টিলারি

বিশ্বের অস্ত্রবাজারের অন্যতম বড় চুক্তি করছে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব। মার্কিন মুলুক থেকে ১৩০ কোটি ডলারের বিনিময়ে ১৮০ স্বয়ংক্রিয় আর্টিলারি সিস্টেম কিনছে রিয়াদের নেতৃত্ব। বৃহস্পতিবার (৫ এপ্রিল) এ চুক্তির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার রিয়াদ সফরকালে জানান, মধ্যপ্রাচ্যের ‘মোড়ল’ সৌদি ১১ হাজার কোটি ডলার ব্যয় করবে আমেরিকান অস্ত্র-সরঞ্জামের পেছনে। এই চুক্তি সেই লক্ষ্য পূরণেরই প্রথম ধাপ।

 

চুক্তির প্রস্তাব অনুমোদনের ঘোষণা দিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর এক বিবৃতিতে বলেছে, মধ্যপ্রাচ্যে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে সৌদির বড় অবদান রয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের বিবৃতি অনুসারে, চুক্তির আওতায় সৌদি আরব ১৮০ স্বয়ংক্রিয় এম১০৯এ৫/এ৬ মাঝারি পাল্লার আর্টিলারি ও এগুলোকে এম১০৯এ৬ পালাডিন আর্টিলারি সিস্টেমে পরিণত করার সরঞ্জাম পাবে। সাধারণত সাড়ে ২৭ টন ওজনের এম১০৯ আর্টিলারি থেকে ৩৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরত্বের লক্ষ্যবস্তুতে ৫৬ কিলোমিটার বেগে গোলাবর্ষণ করা যায়। সেই ভিয়েতনাম যুদ্ধ থেকে শুরু করে উপসাগরীয় ও ইরাক যুদ্ধেও ব্যবহৃত হয়েছে এই আর্টিলারি।

এই চুক্তিকে সৌদি আরবের সামরিক শক্তি ও আঞ্চলিক প্রভাব বাড়ানোর পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে সংবাদমাধ্যম। ইরান ও তাদের লেবানিজ মিত্র সংগঠন হেজবুল্লাহর সঙ্গে দ্বন্দ্বের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছে রিয়াদ। সৌদির ‘উদার সংস্কারবাদী’ ক্রাউন প্রিন্স (ভবিষ্যৎ বাদশাহ) এরইমধ্যে আঞ্চলিক মিত্র দু’টিকে দমনে সৌদির কড়া অবস্থানের কথাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন।

সংবাদমাধ্যম বলছে, ইরান-সৌদি তুমুল উত্তেজনার মধ্যে এই অস্ত্রচুক্তি নতুন রসদ যোগাবে। অবশ্য ফিলিস্তিনে আগ্রাসনের প্রশ্নে সম্প্রতি তেহরানেরই বিরোধিতার স্বার্থে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের ইসরায়েলঘেঁষা দৃষ্টিভঙ্গি দ্বন্দ্বকে এরইমধ্যে নতুন মাত্রা দিয়েছে।

সৌদির কার্যত শাসক ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ তার দীর্ঘ তিন সপ্তাহব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র সফরের শেষদিকে রয়েছেন। এই সফরে তিনি রিয়াদ-ওয়াশিংটনের ‘ঘনিষ্ঠ’ পথচলার বার্তা দিয়েছেন। সেই ‘ঘনিষ্ঠতাই’ প্রকাশ পেলো চুক্তিটির অগ্রগতিতে।

দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরব জড়িয়ে রয়েছে ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে। এরমধ্যে তুরস্ক, ইরান ও লেবাননের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অজুহাত তুলে কাতারের সঙ্গেও জড়িয়েছে দ্বন্দ্বে, আরোপ করে রেখেছে অবরোধ। রিয়াদ সফরকালে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরিকেও পদত্যাগ করতে দেখা গেছে, যেজন্য সৌদিকে অভিযুক্ত করা হয়।  

আঞ্চলিক শক্তিগুলোর সঙ্গে এমন দ্বন্দ্বে জড়ানো সৌদি এই অস্ত্রচুক্তির মাধ্যমে তাদের সামরিক প্রভাবই দেখাতে চাইছে বলে অভিমত পর্যবেক্ষকদের।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০১৮
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।