ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

সুর পাল্টাচ্ছে উত্তর কোরিয়ার প্রোপাগান্ডা!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৫০ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৮
সুর পাল্টাচ্ছে উত্তর কোরিয়ার প্রোপাগান্ডা! উত্তর কোরিয়ার নতুন পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: বিভিন্ন পোস্টার ও ব্যানারের মাধ্যমে এতদিন যুক্তরাষ্ট্রকে একটি নিষ্ঠুর-সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্র হিসেবে উপস্থাপন করে এসেছে উত্তর কোরিয়া। তাছাড়া দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানকে সেখানে উপস্থাপন করা হতো যুক্তরাষ্ট্রের সহচর হিসেবে। উত্তর কোরিয়া ভ্রমণ করে ফিরে অনেকে এমনটাই লিখেছিলেন বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়।

তবে গত কয়েকমাসে সরকারিভাবে পরিচালিত এসব প্রোপাগান্ডার সুর পাল্টাতে শুরু করেছে বলে জানায় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।  

সম্প্রতি উত্তর কোরিয়া ভ্রমণ করে ফেরা পর্যটকদের বরাত দিয়ে বলা হয়, দেশটির রাস্তাঘাট থেকে আগের ব্যানারগুলো সরিয়ে নতুন ব্যানার লাগানো হয়েছে।

এসব ব্যানারে উত্তর কোরিয়ার অর্থনৈতিক প্রগতি ও কোরীয় উপদ্বীপের পুনর্মিলন প্রাধান্য পেয়েছে।

একইভাবে পাল্টে গেছে কঠোরভাবে রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত প্রধান সংবাদপত্রের সুরও। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আন্তর্জাতিক মহলে দেশটির সাম্প্রতিক ভাবমূর্তি জনগণের ভেতর ছড়িয়ে দিতেই এ উদ্যোগ।

উত্তর কোরিয়াকে ‘পাগলাটে’ দেশ বলে অভিহিত করেন অনেকেই। কারণ বাইরের বিশ্ব এবং উত্তর কোরিয়াকে একসঙ্গে মেলানো যায়না। দেশটির সাধারণ জনগণের তথ্য-অধিকার খুবই সীমিত। ফলে অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় উত্তর কোরিয়ায় রাষ্ট্রীয় প্রোপাগান্ডা অনেক বেশি কার্যকর প্রভাব ফেলে। আর বিভিন্ন পোস্টার ও ব্যানারের মাধ্যমে প্রোপাগান্ডার অহরহ ব্যবহার দেশটিতে। এ প্রোপাগান্ডার প্রধান উদ্দেশ্য জনগণের মধ্যে দেশ প্রেম জাগানো, নেতাদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি এবং বৃহৎ স্বার্থের সংগ্রামে সবাইকে একত্রিত ও উদ্বুদ্ধ করা।
উত্তর কোরিয়ার মার্কিনবিরোধী পোস্টার

এসব প্রোপাগান্ডা প্রায় ক্ষেত্রেই আন্তর্জাতিক মহলে দেশটির ভাবমূর্তি ফুটিয়ে তোলে। বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি দেশ যখন আন্তর্জাতিকভাবে চপের মুখে থাকে তখন প্রোপাগান্ডার ভাষাও কঠোর হতে থাকে। যখন দেশটির অবস্থান ইতিবাচক, তখন প্রোপাগান্ডার ধরনও পাল্টে যায়।

ইয়ং পায়োনিয়ার্স ট্যুরস নামের একটি ট্রাভেল এজেন্সির ট্যুর ম্যানেজার রওয়ান বেয়ার্ড আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, পিয়ংইয়নের বিভিন্ন দোকান ও রাস্তাঘাটে যেসব মার্কিনবিরোধী পোস্টার দেখা যেত, সেগুলো একদম গায়েব হয়ে গেছে। পাঁচ বছর এই দেশে কাজ করেছি, কিন্তু কখনোই সেগুলো গায়েব হয়ে যেতে দেখিনি।

পুরনো পোস্টারের বদলে যেসব নতুন পোস্টার টাঙানো হয়েছে সেগুলোও প্রোপাগান্ডা, কিন্তু এগুলো ভিন্ন থিমের। কোরিয়ার পুনর্মিলন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বৈজ্ঞানিক সাফল্যের কথা তুলে ধরা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। এমনকি পর্যটকদের জন্য তৈরি মার্কিনবিরোধী উপহারসামগ্রীগুলোও পাল্টে ফেলা হয়েছে। ওয়াশিংটনের অভিমুখে উত্তর কোরিয়ান মিসাইল এমন ছবিযুক্ত পোস্টকার্ড কিছুদিন আগেও পাওয়া যেত দেশটিতে।

মাসের পর মাস একে অপরকে যুদ্ধের হুমকি-ধামকির পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার সুপ্রিম লিডার কিম জং উনের ঐতিহাসিক সাক্ষাত আন্তর্জাতিক ও জাতীয় অঙ্গনে উত্তর কোরিয়ার পট পরিবর্তনের একটি বড় পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।

এ বৈঠকের পর ‘উত্তর কোরিয়ার জন্য একটি বড় বিজয়’ বলে উল্লেখ করা হয় দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে এবং একইসঙ্গে তা উদযাপনও করা হয়। পত্রপত্রিকা জুড়ে ছাপা হয় কিম ও ট্রাম্পের একাধিক রঙিন ছবি।

রাষ্ট্রীয় পত্রিকা রংডং সিনমুনে এ বৈঠককে আখ্যায়িত করা হয়, ‘দ্য মিটিং অব দ্য সেঞ্চুরি’ অর্থাৎ ‘শতাব্দীর সেরা সাক্ষাত’ হিসেবে। রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ এ বৈঠকের প্রশংসা করে ইংরেজিতে একটি আর্টিকেল প্রকাশিত হয়।

আরও পড়ুন:
উত্তর কোরিয়ার মিডিয়ায় ট্রাম্প-কিমের বৈঠক

বাংলাদেশ সময়: ১০৪০ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৮
এনএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।