ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

সাবেক সিআইএ প্রধানের সিকিউরিটি অ্যাকসেস বাতিল ট্রাম্পের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫২৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৮
সাবেক সিআইএ প্রধানের সিকিউরিটি অ্যাকসেস বাতিল ট্রাম্পের

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সমালোচনা করায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) সাবেক প্রধান জন ব্রেনানের ‘সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স’ বাতিল করেছেন। এর মাধ্যমে ‘স্পর্শকাতর তথ্যপ্রাপ্তি এবং এ নিয়ে উত্তরসূরীদের সঙ্গে পরামর্শের সুবিধা’ কেড়ে নেওয়া হলো ব্রেনানের কাছ থেকে।

বুধবার (১৫ আগস্ট) ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তের কথা সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়ে দেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি সারাহ স্যান্ডার্স। সারাহ লিখিত বিবৃতিতে বলেন, ‘ব্রেনানের খামখেয়ালি কর্মকাণ্ড ও আচরণের কারণে’ তার সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স বাতিল করেছেন প্রেসিডেন্ট।

২০১৩ সাল থেকে সিআইএ প্রধানের দায়িত্ব পালন করে আসা ব্রেনান বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থাটি থেকে বিদায় হন ট্রাম্প ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরই।

তিনি বরাবরই ট্রাম্পের সমালোচক হিসেবে পরিচিত। সবশেষ গত জুলাইতে হেলসিংকিতে একটি সম্মেলনের ফাঁকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বৈঠক করার পর এ বিষয়ে ব্রেনান বলেন, ট্রাম্প যেটা করেছেন সেটা বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া কিছুই নয়। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ তদন্তের মধ্যে এই বৈঠকে বসায় ট্রাম্পের কাণ্ডজ্ঞান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন ব্রেনান।

তারপর থেকে নানা সময়েই ব্রেনানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছিলেন প্রেসিডেন্ট। বুধবার তার সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স বাতিলের ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প বিবৃতিতে বলেন, ‘জাতির স্পর্শকাতর তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নির্বাহী শাখার প্রধান ও কমান্ডার ইন-চিফ হিসেবে আমার সাংবিধানিক দায়িত্ব রয়েছে। সুতরাং আমি সিআইএ’র সাবেক প্রধান জন ব্রেনানের সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।  

‘ঐতিহ্য ও রেওয়াজ অনুসারে গোয়েন্দা ও আইন-শৃঙ্খলা সংস্থার সাবেক প্রধানরা এসব তথ্য পাওয়া এবং উত্তরসূরীদের সঙ্গে পরামর্শের সুবিধা ভোগ করে থাকেন। ...কিন্তু এসবের কিছুই স্পর্শকাতর তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে ব্রেনানের সুবিধা রাখার পক্ষে নয়। ’

বিবৃতিতে জানানো হয়, ব্রেনানের বিরুদ্ধে যে পদক্ষেপ প্রেসিডেন্ট নিয়েছেন, তেমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে সাবেক এফবিআই প্রধান জেমস কোমি, সাবেক জাতীয় গোয়েন্দা প্রধান জেমস ক্ল্যাপার, সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসএ) প্রধান মাইকেল হেইডেন এবং সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল স্যালি ইয়েটসসহ অন্যদের বিরুদ্ধে। যাদের বেশিরভাগই ট্রাম্পের আক্রোশের শিকার কর্মকর্তা ও সমালোচক।

এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে ব্রেনান বলেন, ‘বাকস্বাধীনতার টুটি চেপে ধরতে এবং সমালোচকদের শায়েস্তা করতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সর্বাত্মক প্রচেষ্টার অংশ এটা। ’ 

তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘এ নিয়ে গোয়েন্দা কর্মকর্তাসহ সব আমেরিকানেরই গভীরভাবে চিন্তা করা উচিত। কথা বলার খেসারতটা কী সেটা সবাই দেখছে। তবে আমার নীতি এসব ক্লিয়ারেন্স থেকেও বড়, আমি দমছি না। ’

বর্তমান প্রেসিডেন্টের এসব কর্মকাণ্ডে নাখোশ সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেন, প্রেসিডেন্টের আচরণ কোনো কলা-প্রজাতন্ত্রের (রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল রাষ্ট্র) শাসকের মতো। ট্রাম্প তার সমালোচকদের দমিয়ে দিতে এ ধরনের হীনচেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ করেন সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১১২১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৮
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।