ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

অটল বিহারী বাজপেয়ীর প্রয়াণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৮
অটল বিহারী বাজপেয়ীর প্রয়াণ  ..

ঢাকা: বেশ কদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর। 

বৃহস্পতিবার (১৬ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ৫ মিনিটে দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সে (এইমস) শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।  

এর আগে অবস্থার অবনতি হলে বুধবার (১৫ আগস্ট) রাত থেকেই লাইফ সাপোর্টে ছিলেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার তাকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীসহ বিজেপির শীর্ষ নেতারা।  

হাসপাতালে তাকে দেখতে যান বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার, মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং, চত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংসহ আরো অনেকে।  

দীর্ঘদিন ধরেই লোকচক্ষুর আড়ালে ছিলেন বিজেপির এই প্রথম প্রধানমন্ত্রী। গত দু’মাস ধরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে গত ১১ জুলাই কিডনি সংক্রমণ নিয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ভারতের ১০ম প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ী। এছাড়া বুকে ব্যথাসহ বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন তিনি।  

বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে অটলবিহারী বাজপেয়ী উত্থান বেশ আলোময়। জনসংঘ থেকে বিজেপি। জনতা সরকারের বিদেশমন্ত্রী থেকে প্রধানমন্ত্রী।  

প্রথম অ-কংগ্রেসী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেয়াদ পূর্ণ করার ঐতিহাসিক কৃতিত্বও তার। জোট সরকারের রূপকার থেকে রাজনীতির চাণক্য- নামের পাশে অনেক উপাধি। ভূষিত হয়েছেন ভারতরত্ন ও পদ্মভূষণে।  

সমাবেশে তরুণ সংসদ সদস্য অটল বিহারীর বক্তৃতা শুনেই  ভবিষ্যৎ দেখতে পেয়েছিলেন জওহরলাল নেহেরু। এ ছেলে একদিন প্রধানমন্ত্রী হতে পারে।  

এর ৩৮ বছর পর বিজেপি সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন তিনি। ১৯৯৬ সালের সেই সরকার ১৩ দিনের বেশি চলেনি। কিন্তু জাতীয় নেতার উত্থানের সাক্ষী ছিল গোটা ভারতবর্ষ।  

মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রের বটেশ্বর গ্রামে জন্ম ১৯২৪ সালে জন্ম নেওয়া এই নেতার রাজনৈতিক পাঠ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় থেকে দীনদয়াল উপাধ্যায়ের কাছে।  

পরবর্তীতে আরএসএস থেকে জনসংঘ হয়ে জনতা পার্টির সরকারে বিদেশমন্ত্রী। জনতা সরকারের পতনের পর বাজপেয়ী-আদবানি জুটির উদ্যোগেই জন্ম নেয় নতুন দল - ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)।

১৯৯৮ সালে দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হন, দায়িত্ব পালন করেন ১৩ মাস। এই সময়ই পোখরানে পরমাণু বিস্ফোরণ ঘটায় ভারত। প্রবল আন্তর্জাতিক চাপ, নিষেধাজ্ঞার মুখেও অটল ছিলেন অটল বিহারী। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নতিতে বাসে চড়ে গিয়েছিলেন লাহোরে।  

হিন্দিতে তুখোড় বক্তৃতা, নিমেষে মানুষকে আকর্ষণ করার ক্ষমতা ছিল এই প্রবীণ রাজনীতিকের। অনেকেই বলে থাকেন- ভোটারদের মন বোঝার ক্ষমতা, রাজনীতির পট-পরিবর্তন দ্রুত বুঝে ফেলা - নেহেরুর পর তিনিই ভারতীয় রাজনীতির সবচেয়ে প্রভাবশালী চরিত্র।

গত ৫ বছর ধরে কথা বলতে পারতেন না অটল বিহারী। এজন্য ‘ভারতরত্ন’ প্রদান অনুষ্ঠানেও কোনো প্রতিক্রিয়া দিতে পারেননি। তবে ভারতের রাজনীতিতে তিনি একই রকম প্রাসঙ্গিক।  

যা ফুটে ওঠেছে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কথায়তেই। অটল বিহারী প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন- ‘দ্য গ্রেটেস্ট পার্লামেন্টারিয়ান ইন্ডিয়া হ্যাভ এভার মেড। ’

এদিকে অটল বিহারীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৮/আপডেট: ১৮৩৮ ঘণ্টা
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।