থাইল্যান্ডের কারাগারে বন্দি থাকার সময় এই ১১ জনকে চীনা কর্তৃপক্ষ ‘সন্ত্রাসী’ বলে এলেও মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিরা তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগের ভিত্তি না পাওয়ায় খালাসের সুপারিশ করেন। মুক্তি পাওয়ার পর ওই ১১ জন কুয়ালালামপুর থেকে উড়ে তুরস্কে চলে যান।
তাদের মালয়েশীয় আইনজীবী ফাহমি মঈন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, মানবিক দিক বিবেচনা করে আমরা মক্কেলদের পক্ষে তাদের মুক্তি দেওয়ার আবেদন করলে রাষ্ট্রপক্ষও তাতে সায় দেন, ফলে তাদের অভিযোগ থেকে নিষ্কৃতি মিলে যায়।
এ বিষয়ে মালয়েশিয়ার অভিবাসন দফতর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় সরাসরি কোনো মন্তব্য করেনি। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও দেয়নি কোনো প্রতিক্রিয়া।
দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ঝিনজিয়াংয়ের সংখ্যালঘু মুসলিম উইঘুরদের ওপর যুগের পর যুগ ধরে চীন নিপীড়ন চালিয়ে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সেখানকার ধর্ম-কর্ম পালনেও চীনের সামরিক বাহিনীর বাড়াবাড়ি বিভিন্ন সময় সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে। উইঘুরদের পক্ষ থেকে এই নিপীড়নের প্রতিবাদ উঠলে তাদের ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে কারাগারে ঢোকানোর অভিযোগও আছে চীনের বিরুদ্ধে।
বেইজিংয়ের এ ধরনের তৎপরতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় প্রতিবাদ জানিয়েছে তুরস্ক-মালয়েশিয়াসহ কিছু মুসলিম দেশ। বিশেষ করে মাহাথির মোহাম্মদ পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর মালয়েশিয়ার তরফ থেকে এ নিয়ে আবারও জোরদার প্রতিবাদ করা হয়। এমনকি চীনের সঙ্গে ২ হাজার কোটি ডলারের একটি চুক্তিও বাতিল করে দেন মাহাথির।
সম্পর্কে শীতলতা আনা ওইসব পদক্ষেপের পর উইঘুরদের মুক্তি দেওয়ায় চীনের সঙ্গে মালয়েশিয়ার সম্পর্কে টানাপোড়েন আরও খানিকটা স্পষ্ট হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে।
চীনের নির্যাতনের মুখে পালিয়ে ওই ১১ জন থাইল্যান্ডে গেলে তাদের আটক করে কারাগারে ঢোকায় সেখানকার কর্তৃপক্ষ। তবে গত বছর কারাগারের দেয়াল ফুটো করে পালিয়ে যান তারা। এই ১১ জন সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকে পড়েন মালয়েশিয়ায়। তারপর থেকে ওই ১১ জনকে প্রত্যর্পণ করতে মালয়েশিয়াকে চাপ দিয়ে আসছে চীন।
কিন্তু ঝিনজিয়াং ইস্যুতে চীনের সমালোচনায় সরব অনেক পশ্চিমা দেশ এই চাপ গ্রাহ্য না করার কথা বলে মালয়েশিয়াকে। ড. মাহাথির মোহাম্মদও এশিয়ার পরাশক্তিকে অগ্রাহ্য করেই মুক্তি দিয়ে দেন তার্কিক-উইঘুর সম্প্রদায়ের এই ১১ প্রতিনিধিকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৮
এইচএ/