এতে করে চীনের ট্রেন আন্তর্জাতিক পরিবহন বা সহজে মালামাল বহনের মাধ্যমে বাণিজ্য প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এছাড়া আমদানি-রফতানিতে খরচও কমবে অনেক।
দেশটির প্রধান ট্রেন ইঞ্জিনিয়ার গু ইয়াও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ট্রেনগুলো স্মার্ট ইন্টারকন্টিনেন্টাল হাইস্পিডে উন্নয়ন করে ২০২০ সালের মধ্যেই লঞ্চ করা হবে। যা বিশ্বের অন্যান্য দেশের রেলপথের সঙ্গে সহজেই সমন্বয় করতে পারবে। এতে করে চীনের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে অনেক দেশের। চলাচলেও কমে আসবে অনেক দূরত্ব।
তিনি বলেন, চীনের বুলেট মালবাহী ট্রেনগুলো ঘণ্টায় ৪০০ কিলোমিটার (২৪৮ মাইল) অতিক্রম করতে পারবে। এছাড়া স্মার্ট উচ্চগতির এ ট্রেনগুলো লন্ডন থেকে প্যারিস ভ্রমণ করতে পারবে মাত্র এক ঘণ্টা ১৪ মিনিটে।
ইঞ্জিনিয়ার গু ইয়াও ট্রেনগুলোকে স্মার্ট উচ্চগতি সম্পন্ন করার উন্নয়ন প্রকল্পে প্রধান ডিজাইনার হিসেবে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। এর আগে ২০১৭ সালে সর্বশেষ লঞ্চ করা চীনের ‘ফুক্সিং ট্রেনেরও প্রধান ডিজাইনার ছিলেন তিনি।
এক সাক্ষাৎকারে গু ইয়াও বলেন, ট্রেনগুলোর চ্যাসিস এমনভাবে প্রস্তত করা হচ্ছে, যা বিভিন্ন রেলপথের ট্র্যাকের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবে। সেইসঙ্গে ট্রেনগুলো অনেক মসৃণভাবে চলবে। এমনকি বাঁকা রুটেও।
এ স্মার্ট ট্রেন ডিজাইনার বলেন, ট্রেনগুলো চালু হলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে খরচ কমবে। সঙ্গে সময় কম লাগবে। সুবিধাও অনেক হবে। এতে করে বাণিজ্যের প্রসারতা বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া এ প্রযুক্তির উন্নয়ন করে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করবে চীন। এদিকে, অন্যান্য দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশও চীনের সঙ্গে বাণিজ্য করতে গিয়ে এ উচ্চগতির রেল যোগাযোগের সুফল পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
কেননা, এর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর চীনের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ে কলকাতায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত মা ঝানউ বলেছিলেন, চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের কুনমিং থেকে ভারতের কলকাতায় ট্রেন সাভির্স চালুর পরিকল্পনা আছে। আর দুই হাজার ৮০০ কিলোমিটারের এ রেল যাত্রায় বাংলাদেশ এবং মিয়ানমারকেও যুক্ত করতে চায় চীন।
তিনি বলেছিলেন, এই রেল চালু হলে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কলকাতা থেকে কুনমিং পৌঁছানো যাবে। যাতে উপকৃত হবে সবাই। বৃদ্ধি পাবে বাংলাদেশ- চীন- ভারত-মিয়ানমারের (বিসিআইএম) মধ্যে বাণিজ্যও।
বেইজিংয়ে সর্বশেষ লঞ্চ করা উচ্চগতির ট্রেন মডেল ‘ফুক্সিং’ এর প্রধান ডিজাইনার গু ইয়াও এও বলেন, ২০১৭ সালে চীনে ‘ফুক্সিং’ ট্রেন চালু করা হয়েছিল। তখন থেকে বেইজিংয়ের অন্য রকম একটা বিকাশ শুরু হয়।
‘ফুক্সিং’ ট্রেনও ঘণ্টায় ৪০০ কিলোমিটার চলে। তবে এটা সব রুটে মানিয়ে নিতে পারে না। যা স্মার্ট উচ্চগতির ট্রেনগুলো পারবে।
চীনের কয়েকটি কোম্পানি প্রায় ১৩ বছর গবেষণা করে ওয়ার্ল্ড ক্লাস হাই স্পিড ট্রেন ‘ফুক্সিং’ প্রকল্প হাতে নেয়। দেশের ২০টি কোম্পানির শ্রমিক এতে নিয়োজিত ছিল। তিন বছর লেগেছিল তা প্রস্তুত করতে।
গোটা বিশ্বে চীন রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় অনেক এগিয়ে। দেশটিতে এ পর্যন্ত রেলপথ রয়েছে এক লাখ ২৭ হাজার কিলোমিটার (৭৮ হাজার ৯১৮ মাইল)।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৮
টিএ