বুধবার (১০ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
এসব প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি কর্তৃপক্ষ আদালতের বাইরে গিয়ে খাশোগির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে খাশোগি হত্যাকাণ্ডের বিষয়টির সমাধান করার ব্যাপারটি প্রত্যাখ্যান করেছে খাশোগি পরিবার।
নিজের ভেরিফায়েড টুইটার অ্যাকাউন্টে খাশোগির বড় ছেলে সালাহ বলেছেন, হত্যাকাণ্ডটি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন। এছাড়া এর বাইরে এ নিয়ে কারো সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা হয়নি।
এর আগে সৌদি কর্তৃপক্ষ খাশোগির সন্তানদের অর্থ সহায়তা করবে বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্টসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
১ এপ্রিল ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, হত্যার শিকার সাংবাদিক জামাল খাশোগির সন্তানদের কয়েক কোটি ডলারের বাড়ি এবং প্রতি মাসেই কয়েক হাজার ডলারের অর্থ সহায়তা দেবে সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ।
তবে এ ব্যাপারে খাশোগির ছেলে জানান, শুধুমাত্র তার পরিবার ও তাদের আইনজীবী ছাড়া আর কেউই এ বিষয়ে কোনো তথ্য নিশ্চিত করতে পারবে না।
তবে বিবৃতিতে সৌদি ক্রাউন্স প্রিন্সের সঙ্গে খাশোগি পরিবারের সম্পর্কের বিষয়টি সরাসরিভাবে নিশ্চিত কিংবা প্রত্যাখ্যান করেননি সালাহ।
ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি কর্তৃপক্ষ বহুদিন ধরেই খাশোগির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আঁতাতের চেষ্টা চালাচ্ছে। যাতে তারা পাবলিক স্টেটমেন্ট দেয়ার ব্যাপারে সংযত থাকে। এরই জেরে তারা খাশোগির দুই ছেলে ও দুই মেয়েকে অর্থাৎ চার সন্তানকে এ অর্থ ও বাড়ি সহায়তা দিচ্ছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, খাশোগির চার সন্তানের প্রত্যেকেই প্রতি মাসে ১০ হাজার ডলার করে অর্থ সহায়তা পাবেন। পাশাপাশি তারা প্রত্যেকেই এককালীন প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলারের অর্থ সহায়তাও পেতে পারেন।
২০১৮ সালের ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে ব্যক্তিগত কাগজপত্র আনার প্রয়োজনে গেলে নিখোঁজ হন সৌদি সাংবাদিক খাশোগি। ঘটনার পর থেকে তুরস্ক দাবি করছিল- সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। প্রথমদিকে অস্বীকার করে নানা রকম কথা বললেও অবশেষে কনস্যুলেট ভবনের ভেতরে খাশোগি নিহত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে সৌদি। তবে তারা দাবি করে, কনস্যুলেটের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মারামারি করে নিহত হন এ সাংবাদিক।
সবশেষ সৌদি অ্যাটর্নি জেনারেল সৌদ আল মোজেব দেশটির রাজধানী রিয়াদে এক সংবাদ সম্মেলনে খাশোগির মরদেহ টুকরো টুকরো করার কথা স্বীকার করেছিলেন।
তখন তিনি বলেছিলেন, খাশোগির শরীরে ড্রাগ ইনজেকশন দেওয়া হয়। এরপর তাকে টুকরো টুকরো করা হয়। টুকরো করা দেহ কনস্যুলেটের বাইরে এক এজেন্টকে হস্তান্তর করা হয়।
হত্যাকাণ্ডে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সম্পৃক্ততার কথা উঠলেও তা অস্বীকার করছে সৌদি আরব।
যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছা-নির্বাসিত খাশোগি ছিলেন বাদশাহ-যুবরাজসহ সৌদি রাজপরিবারের কট্টর সমালোচক।
এ হত্যাকাণ্ডের দায়ে ১১ জনকে অভিযুক্ত করেছে দেশটির পাবলিক প্রসিকউটর।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৯
এসএ/এমএ