ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

মসজিদে আগুন ধরানো যুবকই হামলা করেছে সিনাগগে!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০১৯
মসজিদে আগুন ধরানো যুবকই হামলা করেছে সিনাগগে!

ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় সিনাগগে (ইহুদি উপাসনালয়) যে যুবক হামলা করেছে, সে এর আগে সান ডিয়েগোর একটি মসজিদেও আগুন লাগিয়েছিল। এমন ধারণা দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর।

স্থানীয় সময় শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার সান ডিয়েগো উপশহরের একটি সিনাগগে প্রার্থনা চলাকালে বন্দুক নিয়ে হামলা চালায় ওই যুবক। এতে ঘটনাস্থলেই এক নারী নিহত হন, ধর্মযাজকসহ আহত হন আরও তিনজন।

 

হামলা চালিয়েই ওই যুবক গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় মার্কিন বর্ডার প্যাট্রোলের এক এজেন্ট তার গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালালেও তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তবে, পরে ওই যুবক পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে।  

পুলিশ জানায়, জন আর্নেস্ট নামের ১৯ বছর বয়সী ওই যুবকের বাড়ি সান ডিয়েগোতে। গত মাসে নিকটস্থ একটি মসজিদে আগুন দেওয়ার ঘটনায় সে যুক্ত ছিলো। নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে গুলি করে অর্ধশত মুসল্লিকে হত্যা করার ঘটনা থেকে এ হামলার অনুপ্রেরণা পেয়েছিলো বলে দাবি করে।  

সান ডিয়েগো কাউন্টির প্রশাসনিক কর্মকর্তা বিল গোর বলেন, গত ২৪ মার্চ ভোরে ওই মসজিদে আগুন দেওয়ার ঘটনায় আর্নেস্টের জড়িত থাকার সম্ভাব্যতা তদন্ত করছে পুলিশ ও এফবিআই। ওইদিনের আগুনে কেউ হতাহত হননি।

হামলাকারী আর্নেস্টের নামে এর আগে কোনো অপরাধমূলক কাজের রেকর্ড পাওয়া যায়নি বলেও জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

শনিবার পওয়ের ওই সিনাগগে প্রার্থনা চলাকালে এ হামলার ঠিক ছয় মাস আগে পিটসবার্গের ‘ট্রি অব লাইফ’ সিনাগগেও বন্দুকধারীর হামলা হয়েছিলো। সেদিন প্রাণ হারিয়েছিলেন ১১ উপাসনাকারী, আহত হয়েছিলেন আরও ছয়জন। নির্বিচারে গুলি চালানোর সময় হামলাকারী চিৎকার করে বলছিল ‘সব ইহুদিকে মরতে হবে’।

মার্কিন ভূমিতে ইহুদিদের ওপর চালানো এযাবৎকালের সবচেয়ে ভয়াবহ ওই হামলার অভিযুক্তকেও গ্রেফতার করা হয়েছিলো।  

সান ডিয়েগো কাউন্টির প্রশাসনিক কর্মকর্তারা এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, শনিবার সিনাগগে হামলার ঘটনায় আটক যুবক ছাড়া আর কেউ জড়িত নয়। আপাতত আর কোনো ধর্মীয় সমাবেশে হামলার আশঙ্কাও নেই।

গত সপ্তাহে ইস্টার সানডের প্রার্থনা চলাকালে শ্রীলঙ্কার একাধিক গির্জায় সিরিজ বোমা হামলায় ২৫০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারায়। একইভাবে গত ১৫ মার্চ নিউজিল্যান্ডের দু’টি মসজিদে বর্বরোচিত কায়দা গুলি করে ৪৯ জনকে হত্যা ও অন্তত ৪০ জনকে গুরুতর আহত করা হয়।

বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ধর্মীয় স্থানে একের পর এক সহিংসতার ধারাবাহিকতায় ইহুদিদের ওপর এ হামলা হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।

পওয়ের মেয়র স্টিভ ভাউস শনিবারের হামলাকে ‘জিঘাংসামূলক অপরাধ’ (হেইট ক্রাইম) বলে আখ্যায়িত করেছেন।

এক সংবাদ সম্মেলনে সান ডিয়েগো কাউন্টির প্রশাসনিক কর্মকর্তা বিল গোর সাংবাদিকদের বলেন, আমরা জিঘাংসামূলক অপরাধ ও নাগরিক অধিকার লঙ্ঘন সম্পর্কিত বিষয়ে নজর দিচ্ছি।

কর্তৃপক্ষ জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় সিনাগগে উৎসবের সর্বশেষ ধর্মীয় ভোজের আয়োজন চলছিলো। এসময় শতাধিক মানুষ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। ততক্ষণে সব আয়োজন শেষ হয়ে গিয়েছিলো বা শেষের পথে ছিলো।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তারা উপাসনলায়ের ভেতরে মুহুর্মুহু গুলি ও চিৎকারের শব্দ শুনতে পান।

গোর সাংবাদিকদের বলেন, চারজনকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করে নিকটস্থ একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে এক বৃদ্ধা মারা যান।

কর্তৃপক্ষ জানায়, উপাসনালয়ে ইহুদি ধর্মযাজকের হাতে গুলি লাগায় অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। বাকি আহতদের মধ্যে ৩৪ বছর বয়সী এক পুরুষ ও এক মেয়ে আছেন। তবে তাদের অবস্থা গুরুতর নয়।

বাংলাদেশ সময়: ২২২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৯
একে/এইচএ/
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।