দু’দেশের মধ্যকার চলমান এ উত্তেজনায় কোনো ধরনের উস্কানি পেলে মুহূর্তেই যুদ্ধ বাঁধতে পারে বলে ধারণা করছে অনেকেই। তবে এমন সময়ে এসে কখনোই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধ চান না বলেই জানিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি।
বুধবার (২৬ জুন) দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এমন তথ্যই জানায়।
সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, তেহরান কর্তৃক মার্কিন গোয়েন্দা ড্রোন ভূপাতিত হওয়ার ঘটনার পর থেকেই দু’দেশের মধ্যে চলছে বাকযুদ্ধ। এমন সময়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে ফোনালাপকালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধ চান না বলেই জানিয়েছেন রুহানি।
ফোনালাপকালে রুহানি বলেন, এ অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়াবে- এমন কাজে ইরানের কোনো আগ্রহ নেই। পাশাপাশি ইরান কখনোই যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য কোনো দেশের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না।
প্রেসিডেন্ট রুহানি আরও বলেন, এ অঞ্চলে যাতে সবসময় শান্তি বজায় থাকে, এমন চেষ্টায় আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
একই সঙ্গে চলমান এ উত্তেজনার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রই দায়ী বলে মন্তব্য করেছেন রুহানি।
এর আগে দুইবার ওমান উপসাগরে একাধিক তেলবাহী জাহাজে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র- দেশ দু’টির মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা চলছিল। জাহাজে হামলার ঘটনায় দুইবারই ইরানকে দায়ী করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আর প্রতিবারই ইরান তা প্রত্যাখ্যান করেছে।
সর্বশেষ ২০ জুন নিজেদের ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশের দায়ে মার্কিন গোয়েন্দা ড্রোন ভূপাতিত করেছে ইরান। প্রথমে ড্রোন ভূপাতিত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার না করলেও পরে এক বিবৃতিতে তা স্বীকার করে ড্রোনটি আন্তর্জাতিক সীমারেখার মধ্যেই ছিলো বলে উল্টো দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আর এরপরই দু’দেশের মধ্যকার চলমান উত্তেজনা আরও কয়েক গুন বেড়ে যায়।
ড্রোনটি ভূপাতিত করার জের ধরে ইরানে হামলার অনুমোদন দিয়েও শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছিলেন ট্রাম্প। সিদ্ধান্ত স্থগিতের ব্যাপারে ট্রাম্প বলেছিল, আমরা অভিযানে গেলে দেড়শ ইরানির প্রাণহানি হতো। একটা ড্রোনের জন্য দেড়শ ইরানি প্রাণ হারাবে, এটা আমার পছন্দসই মনে হয়নি এবং আমার মনে হয়নি এটা সমানুপতিক হতো।
২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ইরানের ওপর আরোপিত বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের শর্তে ‘পাওয়ার সিক্স’ বলে খ্যাত ছয়টি (যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি) দেশের সঙ্গে পরমাণু কর্মসূচি সীমিতকরণের চুক্তি করে ইরান। তবে ইরান বারবার চুক্তি ভঙ্গ করছে বলে দাবি করে চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র। যদিও চুক্তি ভঙ্গ করেনি, বরং চুক্তির পরও যুক্তরাষ্ট্রই নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছে এমন দাবি ইরানের। আর এরপর থেকেই দেশ দু’টির মধ্যকার রেষারেষির মাত্রা আরও বেড়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৬ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০১৯
এসএ/