ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

৫০ বছরে যুক্তরাষ্ট্র-কানাডায় ২৯০ কোটি পাখি বিলুপ্ত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৯
৫০ বছরে যুক্তরাষ্ট্র-কানাডায় ২৯০ কোটি পাখি বিলুপ্ত

ঢাকা: ১৯৭০ সাল থেকে অর্থাৎ বিগত প্রায় ৫০ বছরে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় প্রায় ২৯০ কোটি পাখি বিলুপ্ত হয়েছে।

শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সাম্প্রতিক এক গবেষণার বরাতে এমন তথ্যই জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।

খবরে বলা হয়, ১৯৭০ সাল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার পাখির সংখ্যা ২৯ শতাংশ পর্যন্ত বিলুপ্ত হয়ে গেছে।

যা সংখ্যায় প্রায় ২৯০ কোটি। উত্তর আমেরিকার দেশগুলোতে পাখির সংখ্যা এমন হারে কমে যাওয়াকে পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।

ব্ল্যাক বার্ড।

যদিও প্রাণিসম্পদ কমে যাওয়ার হিসাব রাখাটা অতটা সোজা নয়, তবে পাখির ক্ষেত্রে এটা তুলনামূলক সহজই। কারণ পাখিকে নির্দিষ্ট মনিটরিংয়ে রাখা সম্ভব। বিগত ৫০ বছর যাবত করা বিভিন্ন গবেষণার তথ্য এক করেই বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

গবেষণা প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিলুপ্ত হওয়া এসব পাখিগুলোর ৯০ শতাংশই ১২টি পরিচিত প্রজাতির পাখি। যেগুলোর মধ্যে রয়েছে চড়ুই, ফিঞ্চ, কোকিল, গারক, গেলা, তীরের মতো প্রজাতির পাখি। অন্যদিকে শুধু উত্তর আমেরিকার বনাঞ্চলজুড়েই বিলুপ্ত হয়েছে প্রায় ১০০ কোটি পাখি।

তীরে পাখি।

গবেষকদের মতে, এত বিপুল পরিমাণ পাখি বিলু্প্ত হয়ে যাওয়া পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ। এর মানে বোঝা যাচ্ছে প্রাণিদের স্বাভাবিক যে চক্র সেটি বিঘ্নিত হয়েছে। এর ফলেই পাখি বিলুপ্ত হয়ে গেছে ও যাচ্ছে। এর পেছনে মূল কারণ বাস্তুসংস্থানের অভাব ও খাদ্য-শৃঙ্খল নষ্ট হওয়া।

যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার চিত্র বলছে, পাখি বিলুপ্ত শুধু এ দু’দেশেই নয়, বিশ্বব্যাপীই হচ্ছে।  

গারক পাখি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পাখিদের বিলুপ্তির পেছনের মূল কারণগুলোর মধ্যে জলবায়ুর পরিবর্তন, নগরায়ণ, বনাঞ্চল ধ্বংস উল্লেখযোগ্য। তবে এর প্রধান দায় মানুষের। কারণ প্রাণিজগতের মধ্যে মানুষের দায়িত্বই সবচেয়ে বেশি হওয়ার কথা। কিন্তু প্রাণিচক্র রক্ষায় মানুষ যথাযথ ভূমিকা রাখছেনা। এছাড়া মানুষের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের প্রভাবও পাখিসহ অন্যান্য প্রাণিদের ওপর পড়ছে। এছাড়া অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে- বাসভূমি নষ্ট হয়ে যাওয়া, সামুদ্রিক বাস্তুসংস্থান নষ্ট হওয়া, কৃষিজমিতে ফলন বাড়াতে কীটনাশক ব্যবহার করা।

জর্জ টাউন ইউনিভার্সিটির পরিবেশ উদ্যোগের ডিরেক্টর পিটার ম্যারা বলেন, এত পরিমাণ পাখি বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া আমাদের পরিবেশের জন্য বড় ধরনের হুমকি। এটি বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে এর ফলাফল আরও ভয়াবহ হতে পারে। এতে বাস্তুসংস্থান ব্যবস্থার ব্যাঘাত ঘটতে পারে।

ফিঞ্চ পাখি।

গবেষকরা বলছেন, আসলে এটি শুধু পাখি বিলুপ্তের বিষয় না। এতে জড়িত রয়েছে পুরো প্রাণিজগত। একটির সঙ্গে অন্যটি সম্পৃক্ত। পাখি বিলুপ্তের ফলে পুরো প্রাণিজগতই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

আমেরিকান বার্ড করজারভেন্সির প্রেসিডেন্ট মাইকেল পার বলেন, পাখিদের রক্ষায় অনেক কিছু করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু নীতিমালাও প্রণয়ন করা যেতে পারে। যাতে করে পাখি বিলুপ্ত বন্ধ করা যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৯
এসএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।