ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

‘ট্রাম্প প্রেসিডেন্সি ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০১৯
‘ট্রাম্প প্রেসিডেন্সি ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন’

ইদানিং একেবারেই স্বস্তি পাচ্ছেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইউক্রেন কেলেঙ্কারি ঘিরে অভিশংসনের চাপে ছাপিয়ে যেতে বসেছেন। একের পর এক অভিযোগ উঠছে তার বিরুদ্ধে। এবার গোয়েন্দাদের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসেছে, তিনি প্রেসিডেন্সি ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। এতে করে তার বিরুদ্ধে অভিশংসনে আনুষ্ঠানিক মাত্রা যোগ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার (০৩ ডিসেম্বর) ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করার অভিযোগের প্রতিবেদন প্রকাশ করে দেশটির বিরোধী রাজনৈতিক দল ডেমোক্র্যাট পার্টির নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি পরিষদের গোয়েন্দা কমিটি। তারা প্রতিবেদনে নিজের অভিশংসন তদন্তে বাধা দেওয়ারও অভিযোগ তুলেছেন ট্রাম্পের বিরুদ্ধে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বলছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসনে তদন্তের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের হাউস ইনটেলিজেন্স কমিটির উন্মুক্ত শুনানি শেষ হয়েছে। একইসঙ্গে মঙ্গলবার তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ এনে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। বুধবার (০৪ ডিসেম্বর) এর কার্যক্রম শুরু হবে। এই কমিটি যদি আনুষ্ঠানিকভাবে অভিশংসনের অনুমোদন দেয়, তাহলে রিপাবলিকান নেতৃত্বাধীন সিনেটে একটি বিচার শুরু হবে। সেখানে ট্রাম্পকে অভিযুক্ত ও দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন প্রয়োজন হবে।

এদিকে, প্রকাশিত এই প্রতিবেদনকে এক তরফা প্রক্রিয়া বলে উল্লেখ করেছেন হোয়াইট হাউসের নারী মুখপাত্র স্তেফানি গ্রিশাম। তিনি বলেছেন, ডেমোক্র্যাট পার্টির লোকেরা যে প্রতিবেদন করেছেন, তা লজ্জাজনক এবং এক তরফা। প্রেসিডেন্টের বেআইনি কাজের প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়েছেন ডেমোক্র্যাটরা।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, মার্কিন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট নিজের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক স্বার্থকে দেশের স্বার্থের ঊর্ধ্বে দেখেছেন। একইসঙ্গে তিনি দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ব্যবস্থার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চেয়েছেন। জাতীয় নিরাপত্তাকেও হুমকির মুখে ফেলেছেন। পাশাপাশি তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের ওপর চাপ প্রয়োগ করে নিজের প্রেসিডেন্সি ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। এছাড়া তিনি দেশের চিন্তা না করে রাজনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন।

গোয়েন্দা কমিটির চেয়ারম্যান অ্যাডাম সেফ বলেছেন, প্রতিবেদনে অভিযুক্ত যিনি, তিনি নিজেকে অভিযোগ, অভিশংসন, জবাবদিহিতা ও আইনের ঊর্ধ্বে মনে করেন।

সম্প্রতি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের ফোনালাপ ফাঁস হলে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে ঝড় ওঠে। ফোনালাপ থেকে জানা যায়, সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার ছেলে হান্টার বাইডেনের বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে রীতিমতো চাপ দিচ্ছেন ট্রাম্প। পরে গোয়েন্দা সংস্থার এক সদস্য আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ করার পর ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সি অভিশংসনের দাবি ওঠে। তাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে তদন্ত শুরু করে ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদ। তবে এই তদন্তকে ন্যাক্কারজনক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন ট্রাম্প। তার দাবি, তাকে অভিশংসনের ক্ষমতা বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেই।

এদিকে, এই অভিশংসন তদন্তের মাঝেই আদালতের একটি রায়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যোগ হয়েছে রাশিয়া সংক্রান্ত আরেকটি তদন্ত। দেশটির ফেডারেল আদালত হোয়াইট হাউসের সাবেক কর্মকর্তা ডোনাল্ড ম্যাকগ্যানকে সাক্ষী হিসেবে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিলে ট্রাম্পের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কেননা, এর আগে ট্রাম্প তার বিরুদ্ধে নিজের কর্মকর্তাদের সাক্ষী হিসেবে হাজিরা দিতে দেননি।

ওই রায়ে আদালত বলেন, প্রেসিডেন্ট মোটেই দেশের রাজা নন। তিনি আইনের উর্দ্ধে নন। প্রেসিডেন্ট আইনি প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করতে কাউকে রক্ষাকবচ দিতে পারেন না।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৯
টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।