ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

সম্পদ বিনষ্টকারীদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ ভারতীয় মন্ত্রীর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৯
সম্পদ বিনষ্টকারীদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ ভারতীয় মন্ত্রীর ভারতের রেল প্রতিমন্ত্রী সুরেশ অঙ্গাড়ি। ছবি: সংগৃহীত

ভারতে নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের প্রতিবাদে বিক্ষোভের সময় কেউ সরকারি সম্পদ নষ্ট করলে তাকে দেখামাত্রই গুলি করার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির রেল প্রতিমন্ত্রী সুরেশ অঙ্গাড়ি।

মঙ্গলবার (১৭) সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তিনি এ নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

গত শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) মুর্শিদাবাদের লালগোলা স্টেশনে পাঁচটি খালি ট্রেনে আগুন দেন বিক্ষোভকারীরা।

এছাড়া পুড়িয়ে দেওয়া হয় ১৫টি বাস।  

রোববার (১৫ ডিসেম্বর) দিল্লির জামিয়া মিল্লিয়া ইসলামিয়া (জেএমআই) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হঠাৎ চড়াও হয় পুলিশ। তারা কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করলে প্রতিবাদে বিক্ষোভকারীরা বেশ কয়েকটি বাসে ভাংচুর চালায় ও অন্তত তিনটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়া বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলেও আগুন দেওয়া হয়।  

এসব ঘটনার জেরে ভারতীয় প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি জেলা প্রশাসন ও রেল কর্তৃপক্ষকে বলেছি, কেউ সরকারি সম্পদ বিনষ্ট করলে তাকে দেখামাত্রই গুলি করা যাবে। আমি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে এ নির্দেশনা দিচ্ছি।

এদিকে, সরকারের একজন দায়িত্বশীল প্রতিনিধির এমন নির্দেশনা সমালোচনা উসকে দিয়েছে নতুন করে।  

গত বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাজ্যসভায় অনুমোদন পায় বহুল আলোচিত-সমালোচিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পেয়ে আইনে পরিণত হয় সেটি।

সংশোধিত আইন অনুসারে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে আশ্রয় নেওয়া অমুসলিমদের (হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, শিখ, জৈন, পারসি) নাগরিকত্ব দেওয়া হচ্ছে।

বিতর্কিত এই আইন পাসের সঙ্গে সঙ্গেই ফুঁসে ওঠেন ভারতের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা। বিক্ষোভ ধর্মঘটে কার্যত অচল পশ্চিমবঙ্গ। একই ইস্যুতে ‘ভারত বাঁচাও’ সমাবেশের ডাক দিয়েছে কংগ্রেস। আইনটিকে ‘বৈষম্যমূলক’ ও ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। এছাড়া ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনকে বৈষম্যমূলক বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাও।

রোববার (১৫ ডিসেম্বর) দিল্লিতে বিক্ষোভরত জামিয়া মিল্লিয়া ইসলামিয়া (জেএমআই) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের পর উত্তর প্রদেশের আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়েও (এএমইউ) পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি সামাল দিতে আগামী ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় দু’টি বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

এ দু’টি ছাড়াও হায়দ্রাবাদের মাওলানা আজাদ উর্দু বিশ্ববিদ্যালয়, দ্য বানারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় এবং আইআইটি বোম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও বিক্ষোভ করেছেন। এছাড়া জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দিল্লিতে পুলিশের প্রধান কার্যালয়ের সামনে রাতভর অবস্থান করেন।

সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন জামিয়া মিল্লিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।  

এদিন বিক্ষোভ হয়েছে লক্ষ্নৌর নাদওয়া বিশ্ববিদ্যালয়েও। সকালে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বাইরে আসার চেষ্টা করলে পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট বন্ধ করে দেয়। এসময় শিক্ষার্থীরা ভেতর থেকেই পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল-জুতা নিক্ষেপ করে।  

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে তাদের কেউই শিক্ষার্থী নয় বলে দাবি করেছে পুলিশ।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৯
একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।