ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

মোশাররফের মরদেহ ঝোলাতে বলা বিচারপতির অপসারণ চায় সরকার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৯
মোশাররফের মরদেহ ঝোলাতে বলা বিচারপতির অপসারণ চায় সরকার ওয়াকার আহমেদ শেঠ ও পারভেজ মোশাররফ। ছবি: সংগৃহীত

রাষ্ট্রদ্রোহিতা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফের মরদেহ ইসলামাবাদের সেন্ট্রাল স্কয়ারে তিনদিন ঝুলিয়ে রাখার আদেশ দেওয়া বিচারপতিকে ‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ দাবি করে তার অপসারণ চায় পাকিস্তান সরকার। এ বিষয়ে শিগগিরই সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে আবেদন করবে তারা।

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, মোশাররফের সাজার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হওয়ার পরপরই এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

এছাড়া, পাকিস্তানের আইনমন্ত্রী ফারোগ নাসীম পেশোয়ার হাইকোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চের মুখ্য বিচারপতি ওয়াকার আহমেদ শেঠকে ‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ মন্তব্য করে বলেন, এধরনের রায় পাকিস্তানের আইনবিরোধী।

যদি কোনো বিচারপতি এমন রায় দেন, তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ ও অযোগ্য। ফেডারেল গভর্মেন্ট এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কাছে আবেদন জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।  

প্রসঙ্গত, পাকিস্তানে সুপ্রিম কোর্ট বা হাইকোর্টের কোনো বিচারপতিকে সরানোর ক্ষমতা রয়েছে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কাছে।

এর আগে, গত মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) পাকিস্তানের একটি বিশেষ আদালত দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট অবসারপ্রাপ্ত জেনারেল পারভেজ মোশাররফকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন।

এ রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) দুবাইয়ের এক হাসপাতালের বিছানা থেকে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় মোশাররফ বলেন, ব্যক্তিগত শত্রুতার জের ধরে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এসময় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগও অস্বীকার করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত বিস্তারিত রায় থেকে জানা যায়, আদালত বলেছেন, ‘পলাতক/আসামিকে (পারভেজ মোশাররফ) গ্রেফতার করে সাজা কার্যকর করায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সর্বোচ্চ চেষ্টার আদেশ দিচ্ছি আমরা। যদি এ সাজা কার্যকরের আগে তিনি মারা যান, তবে তার লাশ টেনে ইসলামাবাদের ডি-চকে এনে তিন দিন ঝুলিয়ে রাখতে হবে। ’

ডি-চক বা ডেমোক্র্যাসি চক এলাকায় পাকিস্তান সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলো রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, প্রেসিডেন্সি ভবন, সংসদ ভবন ও সুপ্রিম কোর্ট এ এলাকায়ই অবস্থিত।

এদিকে, তিন সদস্য বিশিষ্ট এ বিশেষ আদালতে ছিলেন পেশোয়ার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ওয়াকার শেঠ, সিন্ধ হাইকোর্টের বিচারক নাজার আকবর এবং লাহোর হাইকোর্টের বিচারক শহীদ করিম। তাদের মধ্যে বিচারক নাজার আকবর মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করে রায় নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এছাড়া, বিচারক শহীদ করিম মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ব্যাপারে একমত হলেও মোশাররফের লাশ টেনে এনে ঝুলিয়ে রাখার ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করেন।

এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার জন্য ৩০ দিন সময় পেয়েছেন মোশাররফ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৯
এফএম/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।