রোগীদের ওপর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলাকালীন ১০০ শতাংশ সাফল্য মিলেছে বলেই দাবি করেছে রামদেবের পতঞ্জলি সংস্থা। যদিও বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীরা ভাইরাস নিরাময়ের জন্য হন্নে হয়ে দিনরাত কাজ করে চলেছেন।
পতঞ্জলির প্রতিষ্ঠাতা, যোগগুরু স্বামী রামদেব বলেন, ‘করোনিল’ এবং ‘স্বসারি’ নামের ওষুধগুলি সারাদেশে ২৮০ জন রোগীর উপর গবেষণা এবং পরীক্ষার ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। অনেক দেশই ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা করছে, তবে এখনও কেউই কোভিড-১৯ এর বিকল্প নিরাময়ের কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ দিতে পারেননি।
‘পুরো দেশ এবং বিশ্ব করোনার জন্য ওষুধ বা ভ্যাকসিনের জন্য অপেক্ষা করছিল। আমরা এটা ঘোষণা করতে পেরে গর্বিত যে, প্রথম আয়ুর্বেদিক, ক্লিনিক্যাল-নিয়ন্ত্রিত পরীক্ষামূলক এবং গবেষণাভিত্তিক ওষুধটি পতঞ্জলি গবেষণা কেন্দ্র এবং এনআইএমএসের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রস্তুত করা হয়েছে’, সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেন রামদেব।
তিনি বলেন, আমরা আজ কোভিড ওষুধ চালু করছি, করোনিল এবং স্বসারি। আমরা ওষুধ দু'টির পরীক্ষা চালিয়েছি। প্রথম ক্লিনিক্যাল নিয়ন্ত্রিত গবেষণা পরিচালনা করা হয় দিল্লি, আহমেদাবাদসহ কয়েকটি শহরে। এই পরীক্ষার অধীনে ২৮০ জন রোগী অন্তর্ভুক্ত ছিলেন এবং তাদের ১০০ শতাংশই সেরে গেছেন। আমরা এতে করোনা ভাইরাসকে এবং এর জটিলতাগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি।
এই প্রকল্পে ভারতের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস বা জয়পুরের এনআইএমএস বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় কাজ করেছে পতঞ্জলি।
রামদেব বলেন, এনআইএমএস, জয়পুরের সহায়তায় আমরা ৯৫ জন রোগীর উপর ক্লিনিক্যাল, নিয়ন্ত্রিত গবেষণা চালিয়েছি। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় বিষয়টি হলো, মাত্র তিন দিনের মধ্যে ৬৯ শতাংশ রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন এবং কোভিড-১৯ পজিটিভ থেকে নেগেটিভ হয়ে গেছেন। শুধু তাই নয়, সাত দিনের মধ্যে শতভাগ মানুষই নেগেটিভ হয়ে গেছেন। ’
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে রোগীদের ওপর ওষুধের পরীক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদন নেওয়া হয়েছিল বলে জানান রামদেব।
তবে মঙ্গলবার (২৩ জুন) পতঞ্জলির ওষুধ ঘোষণার পর এই ওষুধের কার্যকারিতার ব্যাখ্যা চেয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় আয়ুষ মন্ত্রণালয়। ‘করোনা নিরাময়ে প্রথম ওষুধ বলে পতঞ্জলি যে দাবি করছে, এধরণের প্রচারণা বন্ধ করতেও নিষেধ করেছে আয়ুষ মন্ত্রণালয়।
অন্যদিকে, বিকল্প নিরাময়ের দাবি বিষয়ে অনেক আগেই সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। হু জানায়, কিছু পশ্চিমী, ঐতিহ্যবাহী বা ঘরোয়া প্রতিকারে আরাম মিলতে পারে এবং কোভিড-১৯’র লক্ষণগুলি হ্রাস পেতে পারে, তবে এমন কোনও প্রমাণ নেই যে সেই সব ওষুধ এই রোগ প্রতিরোধ করতে পারে বা নিরাময় করতে পারে। কোভিড-১৯’র প্রতিরোধ বা নিরাময়ের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অ্যান্টিবায়োটিকসহ কোনও ওষুধ বা নিজে নিজে ওষুধ তৈরি বা খাওয়ার পরামর্শ দেয় না।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৩ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০২০
এমএইচ/এমকেআর