ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

‘অধিকার লঙ্ঘনের মহামারির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বেলুচিস্তান’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০২০
‘অধিকার লঙ্ঘনের মহামারির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বেলুচিস্তান’ বেলুচ অ্যাক্টিভিস্ট মুনির মেনগাল

বেলুচিস্তানকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মহামারি মোকাবিলা করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বেলুচ অ্যাক্টিভিস্ট মুনির মেনগাল।

গত মঙ্গলবার নিখোঁজ বেলুচ ব্যক্তিদের নিরাপদে উদ্ধারের জন্য পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর ও যথাযথ পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘের এ বিষয়েক সংস্থার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের ৪৫তম অধিবেশনে বেলুচ ভয়েস অ্যাসোসিয়েশনের এই সভাপতি বলেন, বেলুচ শিশুরা তাদের পরিবারের সদস্যদের পুনরুদ্ধারের দাবিতে প্রতিবাদ জানাতে জানাতে বড় হয়েছে। বেলুচিস্তানকে অধিকার লঙ্ঘনের মহামারির মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

মুনির মেনগাল আরও বলেন, জোরপূর্বক নিখোঁজ ব্যক্তিদের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা জাতিসংঘের কার্যনির্বাহী সংস্থায় নিবন্ধিত হওয়া সত্ত্বেও তাদের পরিবারের সদস্যরা পাকিস্তান বা জাতিসংঘের কাছ থেকে কোন তথ্য পায়নি।

তিনি বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের এজেন্সির কাছে আটক থাকা রশিদ হুসেন ব্রোহি নামে নিখোঁজ ব্যক্তির ঘটনার সমস্ত প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপের কাছে নথি পাঠানো হয়েছিল, পরে গোপনে ও অবৈধভাবে তাকে পাকিস্তানের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

২০১৯ সালের জুনে পাকিস্তানি সংস্থা এবং মিডিয়া জানায় রশিদ হুসেন পাকিস্তানের হেফাজতে রয়েছেন। এরপর তার কী পরিণতি হয়েছে সেই তথ্য পাওয়া যায়নি এবং তাকে কোনো বিচার আদালতেও হাজির করা হয়নি, যোগ করেন মুনির মেনগাল।

জাহিদ কুর্দ বেলুচ নামে এক ছাত্র নেতা, যাকে ২০১৪ সালের মার্চে পাকিস্তানের পোশাকধারী নিরাপত্তা বাহিনী বেলুচিস্তান বিশ্ববিদ্যালয়ে লোকসম্মুখে তুলে নিয়ে যায়; তার ঘটনাও তুলে ধরেন মুনির। তখন থেকে সেই ছাত্র নেতার সম্পর্কে আর কোন তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।

বেলুচিস্তানে বলপূর্বক নিখোঁজদের প্রতি জাতিসংঘের কার্যনির্বাহী সংস্থার আগ্রহের অভাবের কারণে বিশ্ব সংস্থাটির প্রতি তীব্র নিন্দা জানিয়ে বেলুচ এই অ্যাক্টিভিস্ট বলেন, বেলুচিস্তানে সেনাবাহিনী কর্তৃক গুম হওয়ার সংস্কৃতি ত্বরান্বিত হয়েছে।

ভুক্তভোগীর সংখ্যা হাজার হাজার, ভুক্তভোগীদের মধ্যে বেলুচ রাজনৈতিক ও মানবাধিকারকর্মী, ছাত্র, নারী ও শিশু অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। গুম হওয়ার ঘটনা প্রতিদিন ঘটছে। বিচার বিভাগের নীরবতা ও জাতিসংঘের সংস্থাগুলির আগ্রহের অভাব গুম করার সংস্কৃতিকে ত্বরান্বিত করেছে, যোগ করেন মুনির মেনগাল।

তিনি বলেন, জোরপূর্বক নিখোঁজদের নিয়ে জাতিসংঘের ওয়ার্কিং বডিকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যথাযথ ও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানাই।

বেলুচিস্তান পাকিস্তানের প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ অথচ স্বল্পোন্নত একটি প্রদেশ। যেখানে গত কয়েক দশক ধরে স্বাধীনতার আন্দোলন চলছে। বেলুচিস্তানের অধিবাসীরা মনে করেন, অঞ্চলটি ১৯৪৭ সালের আগে স্বাধীন ছিল এবং জোর করে পাকিস্তান বেলুচিস্তানকে দখলে নিয়েছে।

পাকিস্তান সেনাবাহিনী বেলুচিস্তানে বেশ কয়েকটি অভিযান চালিয়েছে এবং চিহ্নিত কুখ্যাত অপরাধী যারা ‘ডেথ স্কোয়াড’ বলে পরিচিত, পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।

বেলুচিস্তান প্রদেশের বিপুলসংখ্যক রাজনৈতিক কর্মী, বুদ্ধিজীবী, নারী ও শিশুকে নিরাপত্তা বাহিনীর তুলে নিয়ে গেছে। তাদের মধ্যে অনেকে ডিটেশন সেন্টারে আটক রয়েছে, অপহৃত এই বালুচদের কারো কারো ছিন্নভিন্ন দেহাবশেষ বিচ্ছিন্ন জায়গায় পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০২০
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।