রাশিয়ার আগ্রাসন ঠেকাতে বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) অষ্টম দিনের মতো যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেনের সেনারা। এই যুদ্ধে এরই মধ্যে ১০ লাখের বেশি মানুষ দেশটি ছেড়ে পাশের দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে।
এরই মধ্যে যুদ্ধবিরতির জন্য শান্তি আলোচনায় বসেছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা। তবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, চলমান যুদ্ধ বন্ধ করবেন না। আরও খারাপ পরিস্থিতি আসছে বলে হুঁশিয়ারি দেন।
মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন’র প্রতিবেদনে বলা হয়, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে ৯০ মিনিট ফোনে কথা বলেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সেই ফোনালাপেই যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার কথা জানান তিনি। এলিসি প্রাসাদের একটি সূত্র বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানায়।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস জানায়, ক্রেমলিনের প্রেস সার্ভিস বৃহস্পতিবার বলেছে, পুতিন ও ম্যাক্রোঁ ‘ইউক্রেনের আশেপাশের পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা মতামত বিনিময় করেছেন’।
এলিসি প্রাসাদের সূত্রমতে, ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে বোমা হামলার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন পুতিন। তিনি সতর্ক করেছেন যে, পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। তবে সেটা ইউক্রেনের দোষেই।
ওই কথার জবাবে পুতিনকে সতর্ক করে দেন ম্যাক্রোঁ। পুতিন ভুল সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন বলেও জানান তিনি। ম্যাক্রোঁ পুনর্ব্যক্ত করেছেন যে, ইউক্রেনকে নিরপেক্ষ ও নিরস্ত্র করার জন্য মস্কোর দাবিগুলো অগ্রহণযোগ্য এবং এই সংঘাতের দায় সম্পূর্ণ পুতিনের।
সূত্র জানায়, পুতিনকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট, তার পরিবার, আত্মীয়স্বজন, রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তা এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সম্মান করতে বলেছেন ম্যাক্রোঁ।
পুতিনের সঙ্গে ওই ফোনালাপের পর ম্যাক্রোঁ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গেও কথা বলেন।
শান্তি আলোচনায় ইউক্রেন-রাশিয়া
ইউক্রেন সীমান্তের অজ্ঞাত একটি স্থানে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের মধ্যে ‘শান্তি আলোচনা’ শুরু হয়েছে। যুদ্ধবিরতিসহ কয়েকটি ইস্যুতে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফায় আবার আলোচনায় বসলেন তারা।
সিএনএন’র প্রতিবেদনে বলা হয়, একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদল একটি কনফারেন্স রুমে প্রবেশ করছে, যেখানে রাশিয়ান প্রতিনিধিরা বসা ছিলেন। আলোচনা শুরু করার আগে তারা একে অপরের মধ্যে হাত মেলান। এটি দ্বিতীয় দফা আলোচনা।
ইউক্রেন প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মাইখাইলো পোডোলিয়াক টুইট বার্তায় বলেন, রাশিয়ান প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে। আলোচ্যসূচির মূল বিষয়গুলো হলো, অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং ধ্বংসপ্রাপ্ত বা ক্রমাগত গোলাগুলি চলা গ্রাম বা শহর থেকে বেসামরিক লোকদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য মানবিক করিডোর।
এর আগে ২৮ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার সামরিক অভিযানের পঞ্চম দিনে যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে শান্তি আলোচনায় বসে দুই দেশের প্রতিনিধিদল। ইউক্রেন-বেলারুশ সীমান্তে বেলারুশের গোমেল এলাকায় ওই বৈঠক হয়। প্রথম দফার ওই বৈঠকে কোনো বোঝাপড়া হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০২২
জেএইচটি