ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

রাসায়নিক হামলা চালালে যে ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০২২
রাসায়নিক হামলা চালালে যে ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে! সোভিয়েত আমলে রাশিয়ার কাছে ছিল বিপুল জীবাণু অস্ত্র। ফাইল ফটো

ইউক্রেন জীবাণু অস্ত্র তৈরির পরিকল্পনা করছে বলে দাবি করেছে রাশিয়া। এ বিষয়ে রাশিয়ার অনুরোধে শুক্রবার (১২ মার্চ) নিরাপত্তা পরিষদের একটি জরুরি সভা হয়েছে।

 

তবে রাশিয়ার দাবি প্রত্যাখ্যান করে ইউক্রেন বলছে, এটি হলো রাশিয়ার নিজের দোষ অন্যের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা, যার মূল উদ্দেশ্য ইউক্রেনে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের সম্ভাবনাকে প্রাসঙ্গিক করে তোলা।

ইউক্রেনের ল্যাবরেটরি আছে এবং সেগুলো বৈধ। দেশটির সরকার বলছে, তাদের বিজ্ঞানীরা কোভিডের মতো নানা মহামারি থেকে জনগণকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য এসব ল্যাবরেটরিতে গবেষণা করে। কিন্তু তা সত্ত্বেও দেশটিতে এখন যুদ্ধ চলছে। তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইউক্রেনকে বলেছে, যে তাদের ল্যাবরেটরিতে কোনো বিপজ্জনক জীবন্ত উপাদান থাকলে সেগুলো ধ্বংস করতে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, অনেক বছর ধরেই তাদের সঙ্গে ইউক্রেনের পাবলিক হেলথ ল্যাবগুলো কাজ করছে। এই কাজের অংশ হিসেবে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং অন্য দায়িত্বশীল সংস্থাকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে, সম্ভাব্য ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে উচ্চ-ঝুঁকির প্যাথোজেনগুলো ধ্বংস করতে হবে। এই কাজ খুব দ্রুত করার কথাও বলা হয়েছে।

রাসায়নিক অস্ত্র আসলে কী? 

রাসায়নিক অস্ত্র হলো এমন ধরনের যুদ্ধাস্ত্র, যা টক্সিন বা রাসায়নিক পদার্থ যা মানুষের শরীরের সিস্টেমগুলোতে আক্রমণ করে। বিভিন্ন ক্যাটাগরির রাসায়নিক অস্ত্র আছে। একটা আছে চোকিং এজেন্ট, যা ফুসফুস ও রেসপিরেটরি সিস্টেমে আক্রমণ করে ফুসফুসকে অচল করে দেয়। আবার ব্লিস্টার এজেন্ট হিসেবে আছে মাস্টার্ড গ্যাস। এটা শরীরের চামড়া পুড়িয়ে দেয় ও মানুষকে অন্ধ করে দেয়।

কিছু আছে মারণাস্ত্র ধরনের। যেমন নার্ভ এজেন্ট যা মস্তিষ্কে ও শরীরের পেশীতে ঢুকে পড়ে। এর ক্ষুদ্র কণা পরিমাণও প্রাণঘাতী হতে পারে। আধা মিলিগ্রাম ভিএক্স নার্ভ এজেন্ট একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মৃত্যুর জন্য যথেষ্ট।

এসব কথিত রাসায়নিক উপাদান যুদ্ধ ক্ষেত্রে কামানের গোলা, বোমা কিংবা ক্ষেপণাস্ত্রেও ব্যবহার করা সম্ভব। কিন্তু এসবই ১৯৯৭ সালে কেমিক্যাল উইপন কনভেনশনে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

নেদারল্যান্ডসভিত্তিক অর্গানাইজেশন ফর দা প্রহিবিশন অফ কেমিক্যাল উইপনস বা ওপিসিডব্লিউ এ বিষয়ে বৈশ্বিক মনিটরিং প্রতিষ্ঠান। তারা মূলত এসব অস্ত্রের বেআইনি ব্যবহার ও বিস্তার প্রতিরোধে বিষয়ে কাজ করে। এসব অস্ত্রের ব্যবহার হয়েছে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে, ইরাক-ইরান যুদ্ধে এবং সম্প্রতি সিরিয়ায়।

রাশিয়া জানিয়েছে, তারা ২০১৭ সালে তাদের রাসায়নিক অস্ত্রের সর্বশেষ সম্ভার ধ্বংস করেছে। যদিও এরপর অন্তত দুটি রাসায়নিক হামলার জন্য রাশিয়াকে দায়ী করা হয়।

রাশিয়া কি ইউক্রেনে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে?

রাশিয়া যদি যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে বিষাক্ত কোনো গ্যাস ব্যবহার করে, তাহলে সেটি হবে বড় ধরনের সীমা লঙ্ঘন, যা পশ্চিমা বিশ্বকে আরও কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করবে।

সিরিয়ায় রাশিয়া এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করেছে—এমন কোনো প্রমাণ নেই। কিন্তু তারা বাশার আল আসাদের সরকারকে ব্যাপক সহযোগিতা করেছিল যুদ্ধে, যে সরকারের বিরুদ্ধে অন্তত এক ডজন রাসায়নিক হামলার অভিযোগ আছে।

বাস্তবতা হলো, যুদ্ধ দীর্ঘদিন চললে সেখানে আক্রমণকারী মিলিটারি জয় অর্জনের জন্য এটিকে কার্যকর পথ ভাবতে পারে। সেটাই সিরিয়া করছিল আলেপ্পোতে।

সূত্র: বিবিসি

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০২২
জেএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।