হিজাব না পরার ‘অপরাধে’ এক তরুণীকে থানায় নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ইরানের নৈতিকতা–সংক্রান্ত পুলিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ইরানজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভ।
গত শুক্রবার ( ১৬ সেপ্টেম্বর) মাহশা আমিনি (২২) নামের তরুণীর মৃত্যু হয়। এর আগে তিন দিন তিনি হাসপাতালে কোমায় ছিলেন। গত ১৩ সেপ্টেম্বর কুর্দিস্তান থেকে দেশের রাজধানী তেহরানে যাচ্ছিলেন ওই তরুণী। সেখানে আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন তিনি। এই সময়ই আচমকা তিনি ইরানের নৈতিকতা–সংক্রান্ত পুলিশ বাহিনীর চোখে পড়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে তাকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় থানায়। সেখানে আরও অন্য নারীদেও ধরে আনা হয়েছিল হিজাব না পরার কারণে।
তেহরান পুলিশের প্রধান জেনারেল হোসেন রহিমি বলেন, ওই তরুণী পোশাকের আইন লঙ্ঘন করেছিলেন। তার সহকর্মী ও আত্মীয়রা তাকে শালীন পোশাক আনতে বলেছিল।
ইরানের উত্তরাঞ্চলীয় শহর সারিতে বিক্ষোভের পঞ্চম দিনে হিজাবে আগুন দিতে দেখা গেছে নারীদের। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বাকিরা তখন উল্লাস করেন।
অনলাইনে তেহরানের কিছু ভিডিওতে দেখা যায়- নারীরা তাদের হিজাব খুলে ফেলছেন ও স্লোগান দিচ্ছেন- স্বৈরশাসক মুর্দাবাদ। ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে উদ্দেশ করেই এ স্লোগান দেওয়া হয়। এছাড়া বিচার চাই, স্বাধীনতা চাই, হিজাব পরতে বাধ্য করা যাবে না স্লোগানও দিতে দেখা যায়।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এক নারী ব্রিটিশ বিবিসির কাছে কিছু ছবি পাঠিয়েছেন, যেখানে তিনি দাবি করেছেন, দাঙ্গা পুলিশ তাকে পিটিয়ে আহত করেছে।
তিনি বলেন, পুলিশ ক্রমাগতভাবে টিয়ার গ্যাস ছুড়ছিল। আমাদের চোখ জ্বলে যাচ্ছিল। আমরা পালিয়ে যাচ্ছিলাম, পুলিশ তখন আমাদের ঘিরে ফেলে পেটায়। তারা বলে আমি যৌনকর্মী, শরীর বিক্রির জন্য আমি রাস্তায় নেমেছি।
তেহরানের গভর্নর মঙ্গলবার এক টুইটে লিখেছেন, অস্থিরতা তৈরির জন্য সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে এ বিক্ষোভ-প্রতিবাদ করা হচ্ছে। আর ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি বলছে, আমিনির মৃত্যুকে কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করছে।
সূত্র: বিবিসি, এএফপি
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২২.
ইআর