ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

সেজদায় মাটিতে স্পর্শ করা জরুরি শরীরের যেসব অঙ্গ 

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০২৩
সেজদায় মাটিতে স্পর্শ করা জরুরি শরীরের যেসব অঙ্গ 

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনুল কারিমে ইরশাদ করেছেন, ‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা রুকু কর, সিজদা কর এবং তোমাদের প্রতিপালকের ইবাদত ও সৎকর্ম কর; যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার’। (সূরা: হজ, আয়াত: ৭৭)

পবিত্র কোরআনুল কারিমে আল্লাহ রাব্বুর আলামিন আরো বলেন, ‘তুমি কি দেখো না যে আল্লাহকে সিজদা করে যা কিছু আছে নভোমণ্ডলে ও ভূমণ্ডলে, সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্ররাজি, পর্বতরাজি, বৃক্ষলতা, জীবজন্তু ও বহু মানুষ।

আর বহু মানুষ (যারা সিজদা করতে অস্বীকার করেছে) তাদের ওপর শাস্তি অবধারিত হয়েছে। বস্তুত আল্লাহ যাকে লাঞ্ছিত করেন তাকে সম্মানদাতার কেউ নেই। নিশ্চয়ই আল্লাহ যা চান তা-ই করেন’। (সূরা: হজ, আয়াত: ১৮)

এক হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘বান্দা আল্লাহর অধিক নিকটবর্তী হয়, যখন সিজদারত থাকে। অতএব, তোমরা তখন অধিক দোয়া করতে থাকো’। (মুসলিম, হাদিস: ৪৮২)

অতএব সব ইবাদতের শ্রেষ্ঠ অংশ হলো সেজদা। সেজদার সময় বান্দা মহান আল্লাহর সবচেয়ে নিকটবর্তী হয়।

সেজদায় ৭ অঙ্গ মাটিতে বা ভূমিতে লাগানো জরুরি। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আমাকে ৭টি অঙ্গের ওপর সেজদা করতে বলা হয়েছে। তা হলো-কপালের ওপর; এবং তিনি তার হাত দিয়ে ইঙ্গিত করেন নাক, দুই হাত, দুই টাখনু ও দুই পায়ের আঙুলের দিকে’। (বুখারি: ৮১২)

মুসলিম শরিফের ব্যাখ্যা গ্রন্থে ইমাম নববী (রহ.) বলেন, ‘কেউ যদি ৭ অঙ্গের কোনো অঙ্গ সেজদার সময় ব্যবহার না করে, তবে তার নামাজ শুদ্ধ হবে না’। হানাফি মাজহাব অনুসারে, কেউ যদি তিন তাসবিহের চেয়ে বেশি সময় ইচ্ছা করে কোনো একটি অঙ্গ যদি মাটি থেকে বিচ্ছিন্ন রাখে, তবে তার নামাজ হবে না। সেজদায় পূর্ণ সময় উভয় পা জমিনে রাখা এবং কেবলামুখী করে রাখা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। (দুররুল মুখতার: ১৪৪৭, আহসানুল ফতোয়া: ৩/৯৬, ফতোয়ায়ে মাহমুদিয়া: ১১/৮০)

অনেকে নাক ও পায়ের আঙুলগুলো ভূমিতে লাগল কি না তা খেয়াল করেন না। অথচ ফুকাহায়ে কেরামের মতে, সেজদার সময় ৭টি অঙ্গ ব্যবহার করতেই হবে; অন্যথায় নামাজ শুদ্ধ হবে না। ৭ অঙ্গগুলো হলো - ১. চেহারা (কপাল ও নাক), ২-৩. দুই হাত, ৪-৫. দুই হাঁটু, ৬-৭ দুই পা (দুই পায়ের আঙ্গুলসহ)

ইবনু আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমি ৭ অঙ্গে সেজদা করতে এবং চুল ও পরিধেয় বস্ত্র না গুটাতে আদিষ্ট হয়েছি’। ইবনু তাউস (রহ.) বলেন, আমার পিতা বলতেন, (৭ অঙ্গ হলো) দুই হাত, দুই হাঁটু, দুই পা এবং কপাল ও নাক। তিনি নাক ও কপালকে একটি অঙ্গ গণ্য করতেন। (ইবনে মাজাহ: ৮৮৪)

সহিহ বুখারির বর্ণনায়, ইবনু আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আমি ৭টি অঙ্গের দ্বারা সেজদা করার জন্য নির্দেশিত হয়েছি। কপাল দ্বারা এবং তিনি হাত দিয়ে নাকের প্রতি ইশারা করে এর অন্তর্ভুক্ত করেন, আর দু’হাত, দু’হাঁটু এবং দু’পায়ের আঙ্গুলসমূহ দ্বারা। আর আমরা যেন চুল ও কাপড় গুটিয়ে না নেই’। (সহিহ বুখারি: ৮১২)

ইয়া আল্লাহ! সব মুসলিম উম্মাহকে নামাজের মাসলা-মাসায়েলসহ সব বিষয়ে ইসলামি শরিয়তের বিধান মেনে জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০২৩
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।