ব্যবসা-বাণিজ্য ইসলামে গুরুত্বপূর্ণ। ইসলাম এক্ষেত্রে বেশ উৎসাহ দিয়েছে।
রাসুল (সা.) ইসলামী জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা, দ্বীনি দাওয়াত ও আল্লাহর ইবাদতের জন্য মদিনায় মসজিদ নির্মাণ করেন। পাশাপাশি মানুষের অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মদিনায় তিনি ইসলামী বাজার প্রতিষ্ঠা করেন।
বনু কায়নুকার বাজারটি পরিচালনার দায়িত্বভার তিনি নিজেই নিয়েছিলেন। বাজারটির বৈশিষ্ট্য ছিল, এখানে কোনো রকম ধোঁকা-প্রতারণা, ঠকবাজি, মাপে কম-বেশি করার বা পণ্যদ্রব্য মজুদ অথবা আটক করে কৃত্রিম মূল্যবৃদ্ধি করে জনগণকে কষ্ট দেওয়ার সুযোগই ছিল না।
আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) একদিন এক বিক্রেতার খাদ্যের স্তূপের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি তার হাত ওই খাদ্যের স্তূপে প্রবেশ করান, এতে তার হাত ভিজে গেল এবং অনুপযুক্ত খাদ্যের সন্ধান পেলেন। তখন রাসুল (সা.) ইরশাদ করলেন, ‘হে খাদ্য বিক্রেতা! এগুলো কী?’ তখন সে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! খাদ্যগুলো বৃষ্টিতে ভিজে গেছে। রাসুল (সা.) ইরশাদ করলেন, ‘তুমি এই ভেজা খাদ্যগুলো ওপরে রাখনি কেন, যাতে সবাই তা দেখে নিতে পারে? যে ব্যক্তি কাউকে ধোঁকা দেবে সে আমার উম্মত নয়। ’ (মুসলিম, হাদিস : ১০২)
নবী করিম (সা.) একদিন নামাজের জন্য বের হয়ে দেখেন, লোকজন কেনাবেচা করছে। তখন তিনি তাদের ডেকে বলেন, ‘হে ব্যবসায়ী লোকেরা! কিয়ামতের দিন কিছু ব্যবসায়ী মহা পাপীরূপে উঠবে; তবে তারা নয়, যারা আল্লাহকে ভয় করে, সততা, বিশ্বস্ততা সহকারে ব্যবসা করে। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ১২১০)
অন্য হাদিসে রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘হে ব্যবসায়ীরা! তোমরা মিথ্যা কথা ও মিথ্যা কারবার থেকে অবশ্যই দূরে থাকবে। ’ (তাবরানি)
রাসুল (সা.)-এর সার্বিক তত্ত্বাবধান ও সাহাবায়ে কেরামের সততা ও ন্যায়-নিষ্ঠার কারণে মদিনার বাজার ছিল পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বাজার। যেখানে জগদ্বিখ্যাত সাহাবি ও ব্যবসায়ী উসমান ইবনে আফফান (রা.) ও আবু আউয়ুব আনসারিসহ (রা.) আরো অন্যান্য সাহাবিরা ব্যবসা করতেন। যারা নৈতিকতা ও নিষ্ঠাপূর্ণ ব্যবসার পাশাপাশি ইবাদত-বন্দেগি ও দান-সেবার ক্ষেত্রেও ছিলেন সর্বাগ্রে।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০২৩
এসআই