ঢাকা, সোমবার, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

মুসলিম সমাজের বিভ্রান্তির মূল কারণ অজ্ঞতা

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২৩
মুসলিম সমাজের বিভ্রান্তির মূল কারণ অজ্ঞতা

হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণের মাধ্যমে একটি সুন্দর সমাজ গঠন করা সম্ভব। কারণ শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) জন্মগ্রহণ করেছিলেন এমন এক সময়ে, যখন বিশ্বের অন্যতম প্রাচীনতম জনপদ মক্কানগরীর অধিবাসীরা ছিল কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজের বাসিন্দা।

যে যুগটাকে অন্ধকারের যুগ বলে অভিহিত করা হয়েছে ইতিহাসে।

নবুওয়ত পূর্ববর্তী সময়ে যুবক মুহাম্মদ (সা.) যুদ্ধপ্রিয় মক্কাবাসীদের অহেতুক রক্তপাত থেকে বিরত রাখতে বুদ্ধিদীপ্ত পদক্ষেপ গ্রহণ, সংস্কার করা কাবাঘরের কালো পাথর (হাজরে আসওয়াত) প্রতিস্থাপন নিয়ে সৃষ্ট মতবিরোধে তার দেওয়া সর্বজনগ্রাহ্য সমাধান প্রমাণ করে- তিনি আগামীর একজন দিকপাল ও নেতা হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলছেন।

নবুওয়ত প্রাপ্তির পরেই নবী মুহাম্মদ (সা.) এক আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তনের জন্য আহ্বানের সঙ্গে সঙ্গে তৎকালীন মক্কাবাসী থেকে শুরু করে বিশ্ববাসীকে আহ্বান জানালেন নারীকে সম্মানজনক আসন ও তাদের ন্যায্য অধিকার দেওয়ার। জীবনভর তিনি এই আহ্বান এবং অধিকারের কথা বলেছেন- তা অব্যাহত ছিল ইসলামের চূড়ান্ত বিজয় অর্জন পর্যন্ত। বিদায় হজের ভাষণেও তিনি সেই অধিকারের কথা ব্যক্ত করে গেছেন।  

মক্কার জীবনে নবী মুহাম্মদ (সা.) যে সংস্কার অন্ধ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আলোকিত সমাজ গড়ার কর্মকাণ্ড শুরু করেছিলেন, হিজরত পরবর্তী মদিনায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা লাভের পর তা আরও বেগবান এবং আধুনিকায়ন করার প্রয়াস অব্যাহত থাকে। মদিনায় নবী মুহাম্মদ (সা.) শুধু ধর্মীয় নেতা হিসেবে নন, সর্বস্তরের একজন সফল নায়ক হিসেবে আবির্ভূত হন।  

নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর দেখানো পথ, বলে যাওয়া আদর্শ বিশ্ববাসীর জন্য আদর্শ। যে আদর্শের অনুসরণে রয়েছে মুক্তি ও শান্তি।

আমরা জানি, বর্তমান বিশ্ব আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের সর্বোচ্চ শিখরে অধিষ্ঠিত। কিন্তু শান্তির খোঁজে মুসলমানরা রাসূলের আদর্শের অনুসরণ বাদ দিয়ে আধুনিকতার স্রোতে গা ভাসিয়ে শান্তি খুঁজে বেড়াচ্ছে। এমনকি অনেক মুসলমান মহানবী (সা.)-এর আদর্শকে নেহাতই ধর্মীয় আদর্শ এবং এটাকে একান্তই ব্যক্তিগত বিষয় মনে করছে। সেই সঙ্গে ভাবছে, ইসলামের শিক্ষা প্রগতির অন্তরায়। ফলে মুসলিম সমাজে বিপথগামী সভ্যতার অনুপ্রবেশ ঘটেছে।

বিজ্ঞানের এই চরম উৎকর্ষতার যুগে নবী করিম (সা.)কে আমরা কতটুকু অনুসরণ করতে পারছি? একবার যদি বিবেককে প্রশ্ন করা হয়, তাহলেই উত্তর পাওয়া যাবে। কিন্তু সমস্যা হলো, আমরা এমন গভীরভাবে পাপে নিমজ্জিত যে আমাদের বিবেক বলতে আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। সব শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্যই কথাটি প্রযোজ্য (পর্যাপ্ত ব্যতিক্রমও আছে)।  

বস্তুত ইসলাম যে সব সময় একটি সর্বোত্তম আদর্শ এবং মহানবী (সা.) সে আধুনিকতার প্রচার এবং তার জীবদ্দশায় বাস্তবায়িত করেছেন- সে সম্পর্কে অজ্ঞতাই বর্তমানের মুসলিম সমাজের বিভ্রান্তির মূল কারণ। মুসলমানদের এমন অজ্ঞতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। জ্ঞান দ্বারা আলোকিত হতে হবে।  

মনে রাখতে হবে, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রচারিত ধর্ম ইসলাম শুধুই একটি ধর্মমত নয়, বরং এটি আধুনিকতার সংমিশ্রণে প্রণীত একটি প্রগতিশীল জীবনবিধান। যার বাস্তব অনুসরণের মাধ্যমে একটি সুন্দর, আদর্শ, সুখী ও শান্তিময় সমাজ গঠন করা সম্ভব।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২৩
এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।