ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

সাক্ষাতে যে কাজ করতে বলে ইসলাম

ইসলাম ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০২৪
সাক্ষাতে যে কাজ করতে বলে ইসলাম

ইসলাম জীবনের সবক্ষেত্রের উৎকৃষ্ট জীবনপ্রণালি। আত্মকেন্দ্রিকতার পরিবর্তে এখানে সামাজিকতার মূল্য অনেক বেশি।

ইসলামের যে বিধান রয়েছে, সেগুলোতে মানবতার কল্যাণই মুখ্য।

ইসলামের বিধি-বিধানে সাম্য ও সামাজিকতার চিত্র ফুটে ওঠে। সবাইকে সমাজবান্ধব হওয়ার জন্য ইসলাম কিছু দিক-নির্দেশনাও দিয়ে দিয়েছে। সমাজে থাকতে হলে অন্যের সঙ্গে প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে দেখা করতে হয়। সেই ক্ষেত্রে ইসলামের বিধানগুলো—

প্রথমে সালাম দেবে। সালাম পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসা, আন্তরিকতা ও হৃদ্যতা সৃষ্টি করে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা ঈমানদার না হওয়া পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, আর ঈমানদার হতে পারবে না পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসা তৈরি না হলে। আমি কি তোমাদের এমন একটি বিষয়ের কথা বলব, যা করলে তোমাদের পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসা সৃষ্টি হবে তোমরা পরস্পরের মধ্যে সালামের ব্যাপক প্রসার ঘটাও। ’ (মুসলিম শরিফ, হাদিস: ৫৪)

পরস্পর সালাম বিনিময়ের পর মোসাফাহা (হাত মেলানো) করবে। মহানবী (সাঃ) ইরশাদ করেছেন, ‘যে দুইজন মুসলিম পরস্পর মিলিত হয়, এরপর তারা মোসাফাহা করে, তারা (সেই স্থান থেকে) পৃথক হওয়ার আগেই তাদের ক্ষমা করে দেওয়া হয়। ’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৫২১২; তিরমিজি, হাদিস: ২৭২৭)

বেগানা ও পরনারী-পরপুরুষের প্রতি দৃষ্টিপাত করা যাবে না। আল্লাহ বলেন, ‘মুমিনদের বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত রাখে এবং লজ্জাস্থান হেফাজত করে...। ’ (সুরা  নূর, আয়াত  ৩০)

বেগানা নারীর সঙ্গে নির্জনে বসবে না। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের কেউ যেন কোনো (বেগানা) নারীর সঙ্গে নির্জনে না বসে। কেননা শয়তান তাদের মধ্যে তৃতীয় ব্যক্তি হয়ে যায়। (সে তাদের কুমন্ত্রণা দেয়)। ’ (তিরমিজি, হাদিস  ২১৬৫)

আগত ব্যক্তিকে অভিবাদন জানানো। হজরত আবু সাইদ খুদরি (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, মদিনার বনু কুরাইজার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় রাসুলুল্লাহ (সাঃ) হজরত সাদ ইবনে মুয়াজ (রা.)-কে ডেকে পাঠান। সাদ (রা.) একটি গাধায় চড়ে আসেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে বলেন, ‘তোমরা তোমাদের নেতা সাদের দিকে দাঁড়িয়ে এগিয়ে যাও। ’ (মুসলিম, হাদিস: ১৭৬৮)

আগত ব্যক্তির জন্য মাথা নত করা বা সিজদাবনত হওয়া যাবে না। এক ব্যক্তি মহানবী (সা.)-এর কাছে জিজ্ঞেস করে, হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের কেউ যখন তার ভাই বা বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে, তখন কি মস্তক অবনত করবে মহানবী (সা.) বললেন, ‘না, কিন্তু মোসাফাহা করবে। ’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩৭০২)
হাসিমুখে অন্যের সঙ্গে মিলিত হওয়া। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা কোনো ভালো কাজকে ছোট মনে করবে না, যদিও তা অন্যের সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাতের ব্যাপারেই হোক না কেন। ’ (মুসলিম শরিফ, হাদিস: ২৬২৬)

অন্য হাদিসে এসেছে, ‘অন্যের জন্য তোমার মুখের হাসি সদকাস্বরূপ। তোমার সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ সদকাস্বরূপ। পথহারাকে পথ দেখিয়ে দেওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। দৃষ্টিহীনকে পথ দেখানো তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। রাস্তা থেকে পাথর, কাঁটা ও হাড্ডি সরিয়ে দেওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। তোমার বালতি থেকে অন্যের বালতি ভরে দেওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। ’ (তিরমিজি, হাদিস: ১৯৫৬)

বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০২৪
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।