দেখতে দেখতে রমজান প্রায় শেষ প্রান্তে চলে এসেছে। রহমত, বরকত পেরিয়ে নাজাত বা ক্ষমার দিনগুলো পেরিয়ে যাচ্ছে।
বোঝা গেলো রোজা শুধু আমাদের ওপর নয় পূর্ববর্তীদের ওপরও ফরজ ছিল। আর রোজার উদ্দেশ্য হলো আমরা যেন মুত্তাকি হতে পারি।
যদি বলা হয় মুত্তাকি কী জিনিস? সহজ ভাষায় জবাব, সকল অন্যায় কাজে আল্লাহ তায়ালার ভয় এতটা প্রবল হওয়া যে ভয় তাকে অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে। এখন আমরা নিজেরাই নিজেদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিতে পারবো। রোজা চলে যাচ্ছে আর আমরা কতটুকু মুত্তাকি হয়েছি? দুনিয়ার মোহ থেকে আমরা কতটা বের হতে পেরেছি? মানুষ ঠকানোর যে প্রতিযোগিতা, প্রতারণা, অহংকার, মিথ্যা, বাটপারি সর্বোপরি আমার, আমার বলে যে ধ্যান জ্ঞান তা থেকে কতটুকু পবিত্র আমরা? কতটুকু সাহায্য করছি পাশের দরিদ্র, অসহায় প্রতিবেশী বা আত্মীয়দের?
রাসূল (সা.) বলেছেন, কোনো বান্দা যতক্ষণ তার ভাইয়ের সাহায্যরত থাকে, আল্লাহ তায়ালাও ততক্ষণ তাকে সাহায্য করতে থাকেন। (তিরমিজি)
রাসূল (সা.) থেকে বর্ণিত, কেয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাকে জিজ্ঞেস করবেন, আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম, তুমি আমাকে আহার্য দাওনি। আমি তৃষ্ণার্ত ছিলাম, তুমি আমাকে পানি দাওনি। আমি অসুখে ভুগছিলাম, তুমি আমার সেবা করনি।
বান্দা তখন অবাক হয়ে বলবে, হে আমার প্রতিপালক, আপনি অভাবমুক্ত, আপনি খান না, পান করেন না, আপনি কীভাবে ক্ষুধার্ত, তৃষ্ণার্ত ও অসুস্থ হতে পারেন?
আল্লাহ তায়ালা তখন প্রতি উত্তরে বলবেন, আমার অমুক বান্দা যে ক্ষুধার্ত হয়ে তোমার দুয়ারে হাজির হয়েছিল, তুমি তো তাকে খাবার দাওনি, তাকে দিলে আমাকে দেওয়া হতো। পিপাসার্তকে তুমি পানি পান করাওনি, তাকে পানি দিলে আমাকে দেওয়া হতো। রোগ শোকে ভোগা ব্যক্তি কষ্টে ছটফট করতো, তার সেবা করলে আমাকে সেবা করা হতো, তুমি কী এটা জানতে না? (মুসলিম)
ইসলামের সোনালি যুগের ইতিহাস সাক্ষী, পৃথিবীর প্রান্তে প্রান্তে ইসলাম তার আলো ছড়িয়েছে মুসলমানের উত্তম চরিত্র, মানবিক গুণের কারণে। তারা নিজেদের সর্বস্ব বিলিয়েছেন অসহায় মানুষের সেবায়। আল্লাহ তায়ালা রমজানের শেষ প্রান্তে হলেও আমাদের বুঝ দান করুন। গুনাহগুলো ক্ষমা করে দিন।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২৫
এসআইএস