ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

ইসলাম

যে সব কাজ মানুষকে পাষাণ বানায়

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৫
যে সব কাজ মানুষকে পাষাণ বানায়

মন বলতে সাধারণত মানুষের বুদ্ধি ও বিবেকবোধের সমষ্টিগত রূপকে বুঝানো হয়। যা মানুষের চিন্তা, অনুভূতি, আবেগ, ইচ্ছা এবং কল্পনার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

মন কি এবং কিভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে নানারকম তত্ত্ব ও কথা প্রচলিত আছে।

মনোবিজ্ঞানীদের অভিমত হলো, মানুষের মনের প্রবৃত্তির কোনো কিছুই শরীর থেকে ভিন্ন নয়। বরং মানুষের মস্তিষ্ক থেকে উদ্ভূত শরীরবৃত্তিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মন গড়ে উঠে।

মন বলতে মানুষের স্বাভাবিক চিন্তা, অনুভূতি ও ইচ্ছাসমূহের সমষ্টিগত রূপকে বুঝায়। যা মানুষের বিভিন্ন আচার-ব্যবহার ও কাজের ভিতর দিয়ে প্রকাশিত হয়। সেখানে বুঝা যায়, কে কতটা নরম আর পাষাণ। কে ভদ্র আর রুক্ষ্ম।

এ কথা আমরা জানি যে, আচরণীয় দিক দিয়ে সব মানুষ এক নয়। কেউ নম্র, কেউ কর্কশ, কেউ পাষাণ। পাষাণ হৃদয়ের মানুষের কারণে পরিবার থেকে শুরু করে সমাজ ও রাষ্ট্রে নানাবিধ সমস্যা দেখা যায়।

সে হিসেবে বলা যায়, বিশ্বব্যাপী মুসলমানরা আজ যে সব সমস্যায় জর্জরিত- তন্মধ্যে অন্যতম হলো মানুষের মন কঠিন হয়ে যাওয়া, অন্তর পাষাণ হয়ে উঠা। বুদ্ধিমানদের উচিৎ হলো যে সব কারণে মানুষের মন কঠিন হয়ে যায় সে সব থেকে দূরে থাকা।

অভিজ্ঞ ও চিন্তাশীল আলেমরা নিম্নলিখিত কারণে অন্তর কঠিন হয়ে যায় বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন—

এক. নামাজের জামাতে উপস্থিত হওয়ার ব্যাপারে অবহেলা করা। মসজিদের যেয়ে দ্রুত বের হয়ে আসা।

দুই. কোরআনে কারিম তেলাওয়াত না করা।

তিন. হারাম রোজগারে অভ্যস্থ হওয়া।

চার. অহংকার, প্রতিশোধপরায়ণতা, মানুষের দোষ-ত্রুটি ও অন্যয়-অপরাধকে ক্ষমা না করা। মানুষকে অবহেলা করে নিকৃষ্ট মনে করা ও মানুষকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করাকেও মন পাষাণ হওয়ার কারণ বলা হয়েছে।

পাঁচ. দুনিয়ার প্রতি মাত্রাতিরিক্ত আসক্ত হয়ে পড়া। দুনিয়া দ্বারা প্রতারিত হওয়া এবং মৃত্যু-কবর এমনকি আখেরাতকে ভুলে যাওয়া।

ছয়. মহিলাদের প্রতি আসক্তি মানুষের অন্তরকে কঠোর করে দেয়। এটা হারামও বটে।

সাত. আমি নিজে প্রতিদিন কি কি খারাপ কাজ করলাম? নিজের সমালোচনা নিজে না করে অন্য মানুষের সমালোচনা করা।

আট. অনেক দিন দুনিয়ায় থাকবো, অনেক কিছুর মালিক হবো- এমন ভুল ধারণায় লিপ্ত থাকা।

নয়. আল্লাহতায়ালার জিকির বেশি বেশি না করে বরং বেশি বেশি কথা বলা। মাত্রাতিরিক্ত হাসাহাসিতে লিপ্ত থাকা। অন্যকে নিয়ে তামাশা এবং মশকরা করলে ধীরে ধীরে মানুষের মন কঠিন হয়ে যায়।

দশ. বেশি খাওয়া-দাওয়া করা, ঘুমানো ও মানুষের ওপর অত্যাচার করা।

এগারো. শরীয়তের কোনো আদেশ-নিষেধ লংঘন হওয়ার কারণ ব্যতীত ভিন্ন কোনো কারণে রাগ করা।

বারো. মিথ্যা, পরচর্চা ও একজনের কথা অন্যের কাছে গিয়ে বলার মাধ্যমে উভয়ের মাঝে ঝামেলা সৃষ্টি করা।

তেরো. খারাপ মানুষের সাথে উঠাবসা ও চলাফেরা করা। কোনো মুসলমানকে মনে মনে অথবা প্রকাশ্যে হিংসা করা।

চৌদ্দ. কোনো মুসলমানের উন্নতি সহ্য করতে না পারা। অন্যের ধ্বংস কামনা করা।

পনেরো. কোনো মুসলামনের সাথে শত্রুতা করা, তার প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করা এবং তাকে অপছন্দ করা।

ষোলো. নিজের অথবা অপর মুসলিম ভাইয়ের উপকার ও ফায়দা ব্যতীত নিজের ও অন্যের সময় নষ্ট করা।

সতেরো. ইসলামী শিক্ষা হতে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখা। জাদুকর, গণক, জোতিষী ও তান্ত্রিকের কাছে যাওয়া।

আঠারো. মাদকাসক্তি।

ঊনিশ. সকাল-সন্ধ্যার জিকিরসমূহ পাঠ না করা। গান শোনা, নৈতিক চরিত্র নষ্ট করে অথবা মন্দ কাজে প্রলুব্ধ করে এমন কিছু দেখা ও পড়া।

বিশ. আল্লাহর নিকট গুরুত্বসহকারে দোয়া না করে, নিজের মেধা ও শ্রমকেই সফলতার চাবিকাঠি মনে করা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৬ ঘন্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।