তথ্য-প্রযুক্তি আধুনিক জীবনধারায় সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, বিষয়টি কারো অজানা নয়। সে হিসেবে বলা যায়, তথ্য আদান-প্রদান ও প্রচার-প্রসারের কিছু নিয়ম-নীতি নির্ধারণ করে মানবতার কল্যাণে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই।
বলা চলে, ইসলামের দাওয়াতের ক্ষেত্রে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার বেশি প্রয়োজন। বর্তমানে প্রযুক্তির যত ধরণ হতে পারে- এর সব কিছুকে ইসলামের দাওয়াতের কাজে ব্যবহার করা সময়ের দাবি।
আমাদের মনে রাখতে হবে, শুধু ইন্টারনেট, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া নয়- বরং দাওয়াতের কাজে যেসব মাধ্যম হতে পারে সেসবের মাধ্যম ও সাহায্য ইসলামের সৌন্দর্য ও সৌরভকে পৌঁছে দিতে হবে বিশ্বের আনাচে-কানাচে। তাহলেই ইসলাম সম্পর্কে মানুষের ধারণা আরও স্বচ্চ হবে। সেই সঙ্গে কমে আসবে অহেতুক ইসলাম ভীতি ও বিরোধীতার মাত্রা।
যুগের এ প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে অস্ট্রেলিয়ার মুসলমানরা উদ্যোগী হয়েছেন, মুসলমানদের জন্য আলাদা একটি বিশেষ টেলিভিশন চ্যানেল চালু করার। চ্যানেলটির নাম- One Path Network (একক পথ)। সম্প্রতি সম্পূর্ণ অলাভজনক এ চ্যানেলটি চালুও করা হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার সিডনির কিছু চিন্তাশীল মুসলমানদের উদ্যোগে নিজেদের ধর্ম রক্ষার্থে এবং বিভিন্ন মিডিয়ায় ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে প্রচারিত ভ্রান্তি ধারণা প্রচারের প্রতিবাদে এ বিশেষ টেলিভিশন চ্যানেলটি চালু করা হলো।
এ টেলিভিশন চ্যানেলের প্রধান মিলাজ মাজানি বলেন, বর্তমানে মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর অনেক চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। দুর্ভাগ্যবশত, এ চাপের মূল কারণ হিসেবে মিডিয়াকে দায়ী করা যায়, কারণ তারা মিডিয়ায় মুসলমানদেরকে ভিন্নভাবে তুলে ধরছে। তবে নিশ্চিত থাকতে পারেন আমরা আমাদের টেলিভিশন নেটওয়ার্কে সঠিক বার্তাসমূহ প্রকাশ করব- ইনশাআল্লাহ।
আমাদের কর্মসূচির মধ্যে এটা থাকবে যে, কেউ যেন মুসলিম সম্প্রদায়কে ভুল লক্ষ্যে প্রচার না করে এবং সকল অস্ট্রেলিয়ানদের জন্য সমানভাবে প্রচার করা হবে।
এ টেলিভিশন চ্যানেলে মুসলিম ব্যক্তিত্ব এবং অস্ট্রেলিয়ার রাজনৈতিক ব্যক্তিদেরকে বিভিন্ন বিষয়ে পর্যালোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে। আমরা এ চ্যানেলের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ান মুসলমানদের খবর ছাড়াও মুসলিম ও অমুসলিমদের নিকট ইসলামি বার্তা পৌঁছানোর চেষ্টা করব।
অস্ট্রেলিয়া পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট মহাদেশ। মহাদেশটি ভারত সাগর ও দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝে অবস্থিত। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার মোট জনসংখ্যা ২ কোটি ২৯ লাখের বেশি। বেসরকারী হিসেব মতে মুসলমানদের সংখ্যা ৫ লাখের কাছাকাছি। মুসলমানদের সর্বাধিক অধিবাস নিউ সাউথ ওয়েলসে, দ্বিতীয়ত ভিক্টোরিয়াতে, তৃতীয়ত কুইন্সল্যাণ্ডে আর চতুর্থ নম্বরে আছে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া।
অস্ট্রেলিয়ার মোট জনসংখ্যার শতকরা ২২ ভাগ কোনো ধর্মে বিশ্বাস করে না। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী অস্ট্রেলিয়ায় খ্রিস্টান ৬৪ ভাগ, ধর্মহীন ২২ ভাগ, বৌদ্ধ ২ দশমিক ৫ ভাগ ও মুসলমান ২ দশমিক ২ ভাগ।
অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে কয়েক লাখ মুসলমানের বাস। সেখানে তাবলিগ জামাতের মিনি ইজতেমাও অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
এই সিডনিতেই অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় মসজিদ অবস্থিত। কয়েক বছর আগে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম মুসলিম সংসদ সদস্য এড হোসিচ পবিত্র কোরআন ছুঁয়ে শপথ নিয়ে খবরের শিরোনাম হয়েছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৪ ঘন্টা, মার্চ ১৮, ২০১৫