ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

রমজানের পর ইবাদত-বন্দেগির ধারাবাহিকতা রক্ষার উপায়

মুফতি এনায়েতুল্লাহ, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৫
রমজানের পর ইবাদত-বন্দেগির ধারাবাহিকতা রক্ষার উপায়

রমজানের পর অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, রমজানের পর ভালো কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষার উপায় কী হতে পারে এ বিষয়ে। তাদের কথা হলো, পুরো রমজান মাস জুড়ে আল্লাহতায়ালার কাছে বিনম্রচিত্তে প্রার্থনা করেছি, সাধ্যমতো ইবাদত-বন্দেগির পাশাপাশি নফল নামাজ, কোরআনে কারিম তেলাওয়াত ও দান-খয়রাত করেছি।

জামাতের নামাজ ত্যাগ করিনি। হারাম জিনিস দেখা থেকে বিরত ছিলাম। রমজানে পরিবেশটাই ছিল অন্যরকম এখন কী আর সেসব কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা যাবে? রমজানে ইবাদত-বন্দেগির যে তৃপ্তি পেতাম, এখন আর তা পাই না। এখন তো প্রায়ই জামাত ছুটে যায়, নফল ইবাদত করাই হয় না, কোরআন তেলাওয়াতও আর আগের মতো করা হচ্ছে না- এসব সমস্যার সমাধান কী?

আসলে মানুষের মনের এই অস্থিরতা শুধু এখনকার সময়ের নয়, আগেও ছিল। তাই আলোচ্য সমস্যসমূহের সমাধান আমরা পূর্ববর্তী বিজ্ঞ আলেমদের জীবনাচারে দেখতে পাই। তার রমজানের পর ভালো কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষায় বেশ কিছু মাধ্যম বর্ণনা করে গেছেন। সেগুলো হলো-

এক. সবকিছুর পূর্বে আল্লাহতায়ালার সাহায্য কামনা করতে হবে হেদায়েত এবং দৃঢ়তার ওপর অটল থাকার জন্য। পবিত্র কোরঅান আমাদের এটাই শিক্ষা দেয়। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে আমাদের রব! আপনি হেদায়েত দেয়ার মালিক, আমাদের অন্তরসমূহ বক্র করবেন না এবং আপনার পক্ষ থেকে আমাদেরকে রহমত দান করুন। নিশ্চয় আপনি মহাদাতা। ’ -সূরা আল ইমরান: ৮

দুই. ভালো লোকদের সঙ্গে বেশি উঠাবসা করতে হবে, এবং ওয়াজ-নসিহত ও বিভিন্ন ধরণের দ্বীনি আলোচনা যেখানে হয় সেখানে যাতায়াত করতে হবে।

তিন. বই-পত্র পড়াসহ জ্ঞান অর্জনের বিভিন্ন মাধ্যমে নেক লোকদের জীবন সম্পর্কে, বিশেষ করে সাহাবাদের জীবন সম্পর্কে জানার চেষ্টা করতে হবে। কেননা এর মাধ্যমে মনের মাঝে সাহস ও আশার সঞ্চার হয়, ভালো কাজের প্রতি আগ্রহ বাড়ে।

চার. ফরজ আমলসমূহের প্রতি যত্নশীল থাকা। যেমন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, রমজানের রোজা কোনো কারণে কাজা হয়ে থাকলে তা দ্রুত আদায় করা। সামর্থ্য থাকলে হজ আদায় করা। কেননা ফরজের মধ্যে অনেক কল্যাণ রয়েছে।

পাঁচ. নফলের প্রতিও যত্নশীল হওয়া- যদিও পরিমাণে তা কম হয়। কিন্তু অবশ্যই তা এমন নফল কাজ হতে হবে যা আদায় করতে মনে ভালো লাগে, কেননা আল্লাহর নিকট ওই আমল অধিক প্রিয় যা নিয়মিত হয় যদিও তা পরিমাণে কম হয়। রহমতের নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এমনই বলেছেন।

ছয়. সম্ভব হলে পবিত্র কোরআনে কারিম মুখস্থ করতে শুরু করা। সেই সঙ্গে নিয়মিত তেলাওয়াত করা, কোরআন অর্থ ও মর্ম বুঝে তেলাওয়াতের ফায়দা বেশি।
 
সাত. বেশি বেশি জিকির ও ইস্তেগফার করা, কেননা এ কাজটি খুবই সহজ অার এর উপকারিতা অনেক বেশি। জিকিরের ফলে ঈমান পাকাপোক্ত হয় এবং মন ও হৃদয়কে শক্তিশালী করে।

আট. সম্পূর্ণরূপে এমন সব কাজ থেকে দূরে থাকা যা হৃদয়কে নষ্ট করে দেয়। যেমন অসৎ লোকের সঙ্গ, মনে মন্দ প্রভার সৃষ্টিকারী কাজ ও পরিবেশ।
 
এছাড়া বেশি বেশি তওবা করা। মনে দৃঢ় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা আর পিছনে নয়, এখন থেকে পথ চলব সামনে। মনে রাখবেন, আল্লাজতায়ালা বান্দা তওবা করলে অত্যন্ত খুশি হন। আর আল্লাহতায়ালা সন্তুষ্ট হয়ে গেলে তো আর কোনো কথাই নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘন্টা, জুলাই ২৫, ২০১৫
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।