ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

সূরা ইখলাস : কোরআনের তিন ভাগের এক ভাগ

মুহাম্মদ হাবীবুর রহমান, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ৯, ২০১৫
সূরা ইখলাস : কোরআনের তিন ভাগের এক ভাগ

সূরা ইখলাস মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। আয়াত সংখ্যায় ৪টি, রুকু ১টি।

এটি কোরআন শরিফের ১১২ নম্বর সূরা। ত্রিশ নম্বর পারার শেষের দিকে এই সূরাটি আছে। এই সূরাকে ‘কুলহু আল্লাহু আহাদ...’ সূরাও বলা হয়।

সূরার চারটি আয়াত দ্বারা আল্লাহতায়ালা তাওহিদকে পূর্ণাঙ্গরূপে বর্ণনা করেছেন। প্রথম আয়াত দ্বারা বহু ঈশ্বরবাদী বিশ্বাসকে রদ করা হয়েছে। দ্বিতীয় আয়াতে তাদের ধ্যান-ধারণা খণ্ডন করা হয়েছে, যারা আল্লাহকে এক জানা সত্ত্বেও অন্যকে উদ্ধারকারী ও সমাধানকারী মনে করে। তৃতীয় আয়াতে যারা বিশ্বাস করে আল্লাহর সন্তান-সন্তুতি আছে, তাদের রদ করা হয়েছে। চতুর্থ আয়াতে সেই সব লোকের বিশ্বাস খণ্ডন করা হয়েছে, যারা মনে করে আল্লাহতায়ালার যে কোনো গুণ অন্য কারোর মধ্যে থাকতে পারে। এভাবে এই সংক্ষিপ্ত সূরাটি সব রকমের শিরককে ভ্রান্ত সাব্যস্ত করে খালেছ ও বিশুদ্ধ তাওহিদকে প্রমাণ করেছে। এ কারণে এই সূরাকে সূরা ইখলাস বলা হয়।

বিভিন্ন হাদিসে এ সূরাটির অনেক ফজিলত বর্ণনা হরা হয়েছে। নিম্নে কিছু ফজিলত উল্লেখ করা হলো।

এক. হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক ব্যক্তিকে একটি সারিয়ায় (যুদ্ধে) পাঠালেন। সে তার সঙ্গীদের নিয়ে ‘কুলহু আল্লাহু আহাদ’ পড়ে নামাজ শেষ করল। অতঃপর যখন তারা সারিয়া থেকে ফিরে এলো, তখন এই ব্যাপারটা হুজুরের কাছে পেশ করা হলো। তিনি বললেন, তোমরা তাকে জিজ্ঞাসা কর, কী কারণে সে এমন করল। তারা তাকে জিজ্ঞাসা করল, সে বলল এটা হলো রহমানের সিফাত। আর আমি রহমানের সিফাত পড়তে ভালোবাসি। তখন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমরা তাকে বলে দাও, আল্লাহতায়ালাও তাকে ভালোবাসেন। -সহিহ বুখারি: ৭৩৭৫, সহিহ মুসলিম: ৮১৩

দুই. হজরত আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি অন্য এক ব্যক্তিকে ‘কুলহু আল্লাহু আহাদ’ বারবার পড়তে শুনতে পেলেন। অতঃপর সকালে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে এই ঘটনা বললেন। কারণ লোকটি তা কম মনে করে। তখন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ওই সত্তার শপথ! যার হাতে আমার জীবন, নিশ্চয় সে কোরআনের তিন ভাগের এক ভাগ পড়েছে। -সহিহ বুখারি: ৫০১৩, সুনানে আবু দাউদ: ১৪৬১

তিন. হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি আরজ করল- ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি কুলহু আল্লাহু আহাদ সূরাটি খুবই ভালোবাসি। তিনি বললেন, এ সূরাটির ভালোবাসা তোমাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে। -জামে তিরমিজি- ২৯০০

চার. হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে আসছিলাম। তিনি এক ব্যক্তিকে কুলহু আল্লাহু আহাদ পড়তে শুনলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, অনিবার্য হয়ে গেল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কী অনিবার্য হয়ে গেল। তিনি উত্তর দিলেন- জান্নাত। -সুনানে তিরমিজি: ২৮৯৯, সুনানে নাসাঈ: ২/১৭১

পাঁচ. হজরত আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ কি এই বিষয়ে অক্ষম যে এক রাতে কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ পাঠ করবে। সাহাবিরা বললেন, এক রাতে কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ কীভাবে পাঠ করতে পারবে? তিনি বললেন, কুলহু আল্লাহু আহাদ সূরাটি কোরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান। (সুতরাং রাতের বেলায় যে এটা পড়ে নিল, সে যেন কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ পাঠ করে নিল। ) -সহিহ মুসলিম- ৮১১

বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘন্টা, আগস্ট ০৯, ২০১৫
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।