ঢাকা, রবিবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ১২ মে ২০২৪, ০৩ জিলকদ ১৪৪৫

ইসলাম

কবুল হজের বিনিময় নিশ্চিত জান্নাত

তাযকিরা খাতুন, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১৫
কবুল হজের বিনিময় নিশ্চিত জান্নাত

হজ মুসলিম উম্মাহর একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। শারীরিক ও আর্থিক ত্যাগের চূড়ান্ত পরীক্ষা দিয়ে পবিত্র হজ পালন করে একজন হাজি সাহেব নিষ্পাপ, নিষ্কলুষ শিশুর ন্যায় পূতপবিত্র হয়ে জান্নাতের মেহমান হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেন।



হজ প্রসঙ্গে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কবুল হজের বিনিময় নিশ্চিত জান্নাত। ’ -মুসনাদে আহমাদ

অন্য হাদিসে বলা হয়েছে, ‘যিনি হজ করলেন, ঝগড়া-ঝাটি, অন্যায়, ফাসেকি ও নাফরমানির কোনো কাজ করেননি, তিনি মায়ের পেট থেকে সদ্য ভূমিষ্ঠ নিষ্পাপ শিশুর ন্যায় হয়ে গেলেন। ’

হজ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা কোরআনে কারিমে বলেন, ‘আপনি (হে নবী) মানুষের মাঝে হজের ঘোষণাপত্র জানিয়ে দিন। লোকেরা পায়ে হেঁটে, বিভিন্ন যানবাহনে পৃথিবীর সব অঞ্চল থেকে দলে দলে আপনার দিকে (হজের জন্য) ছুটে আসবে। ’ -সূরা আল হজ: ২৭

মহান আল্লাহতায়ালার এ ঘোষণা অনুযায়ী ওই সময় থেকে অদ্যাবধি প্রতি বছর আল্লাহতায়ালার ডাকে সাড়া দিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে লক্ষ-কোটি মুসলিম সমবেত হয়ে সবাই একই আওয়াজ তুলে বলেন, ‘লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইকা, লাব্বাইক লা শারিকা লাকা লাব্বাইক। ইন্নাল হামদা ওয়াননি-মাতা লাকা, ওয়াল মুলক- লা শারিকা লাকা।

অর্থ, ‘হে আল্লাহ! আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, হে আল্লাহ আমি হাজির, নিশ্চয়ই সমস্ত প্রশংসা, নেয়ামত ও কর্তৃত্ব, রাজত্ব তোমারই জন্য, তোমার কোনো শরিক নেই। ’ এটাকে তালবিয়া বলা হয়।

হজের এই সমাবেশের পার্থিব কোনো স্বার্থ নেই। শুধুমাত্র মহান রবের ডাকে সাড়া দিয়ে সমবেত হওয়া। আর প্রভুর একত্ব ঘোষণা করা। প্রভুর মাহাত্ম্য একক কর্তৃত্ব ও প্রাধান্যকে স্বীকার করে নেয়া। এক কথায় শিরক পরিহার করে আল্লাহকে একমাত্র প্রভু হিসেবে স্বীকার করে নেয়া। সব মানুষের একই ঘোষণা মক্কা-মদিনার সারা আকাশ ও বাতাসে ধ্বনিত হতে থাকে। সে এক অভাবিত দৃশ্য। এক অচিন্তনীয় পরিবেশ। সব মানুষ তার প্রভুর কাছে হাজিরা দিতে পাগলপারা। প্রভুর ইচ্ছামতো শিরক থেকে বিরত থাকার জন্য বারবার ঘোষণা। সারা দুনিয়ার প্রভুত্ব ও কর্তৃত্ব রাব্বুল আলামিনের। এতে আর কারো শরিকানা নেই এ ঘোষণা দিতে থাকে বারবার। এটিই হলো হজের তালবিয়ার মৌলিকত্ব।

পবিত্র হজ হলো মুসলিম উম্মাহর বার্ষিক সম্মেলন। সারা দুনিয়ার মুসলমানরা এখানে সমবেত হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে নিম্নোক্ত ঘোষণাসমূহ দিয়ে থাকেন—

১. আমি সকল কাজে আল্লাহতায়ালাকে হাজির নাজির (উপস্থিত) জেনেই লাব্বাইক ঘোষণা দিচ্ছি।
২. সম্মিলিতভাবে শপথ করছি যে, আল্লাহর সঙ্গে কোনো কিছুর শরিক করবো না।
৩. শিরকমুক্ত থাকা ও শিরকমুক্ত ইবাদত করার জন্য সকলেই দৃঢ়-দীপ্ত শপথ করছি।
৪. সমস্ত প্রশংসা, মালিকানা, কর্তৃত্ব, রাজত্ব মহান আল্লাহরই, অতএব আমরা সাধ্যমত সর্বোচ্চ ত্যাগ করার জন্য সদা প্রস্তুত থাকার দৃঢ় সঙ্কল্প ঘোষণা করছি।

আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে পবিত্র হজের মূল উদ্দেশ্য অনুধাবন করে মাবরুর হজ নসিব করুন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘন্টা, আগস্ট ২৫, ২০১৫
এমএ/

** রিকশা চালিয়ে হজের টাকা জোগাড়
** পবিত্র কাবা শরিফের মর্যাদা
** হজে যাওয়ার আগে বান্দার হক পূরণ করে যেতে হবে
** হজের সফরে মৃত্যুবরণকারীর মর্যাদা
** পকেটমারতে হজে যাওয়া, এ লজ্জা রাখি কোথায়?
** হারাম শরিফে নামাজ ও তাওয়াফের ফজিলত
** হজের সফরে খরচের প্রতিদান ব্যয় অনুপাতে প্রদান করা হবে
** হজযাত্রীদের জন্য যা জানা জরুরি
** মক্কা শরিফের দর্শনীয় কিছু স্থান
** কবুল হজের জন্য যে আমল বেশি বেশি করা দরকার
** হজ ফরজ হওয়ার শর্ত ও প্রকারসমূহ
** বদলি হজ আসলে কী?

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।