ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

হাজিদের সম্মান ও মর্যাদা

এইচ. এম. মুশফিকুর রহমান, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৫
হাজিদের সম্মান ও মর্যাদা

হজ ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম। ইসলামে হজযাত্রীদের সুমহান মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।

হাজিদের অভিহিত করা হয়েছে আল্লাহর পথের যাত্রী হিসেবে।

হাজিরা শুধু নিজের জন্য নয়, অন্য মুমিনদের জন্যও যদি আল্লাহর কাছে মাফ চায় আল্লাহ তাদের দোয়াকে বিশেষ গুরুত্ব  দেন। যে কারণে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তুমি যখন কোনো হাজির দেখা পাবে তাকে সালাম দেবে, মোসাফাহা করবে এবং তাকে অনুরোধ করবে তিনি যেন আল্লাহর ঘরে প্রবেশের আগে তোমার জন্য আল্লাহর কাছে মাফ চান। ’

হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘হজ ও উমরা পালনকারীরা আল্লাহর মেহমান। তারা দোয়া করলে তা কবুল হয়ে যায় এবং গোনাহ মাফ চাইলে তা মাফ করে দেয়। ’ -ইব্নে মাজাহ: ২৮৯২

এভাবেই আল্লাহতায়ালা হাজিদের সুউচ্চ মর্যাদায় অভিষিক্ত করেছেন। হজ পালনে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে হাজিরা দুনিয়া ও আখেরাতে যে সকল প্রতিদানে ধন্য হয় তা হলো—

হজ পালন উত্তম ইবাদত
সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলে কারিম (সা.) কে জিজ্ঞাসা করা হলো, সর্বোত্তম আমল কোনটি? জবাবে রাসূলে কারিম (সা.) বললেন, ‘আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি ঈমান আনা। অতঃপর জিজ্ঞেস করা হলো: তারপর কোন আমল? তিনি উত্তর দিলেন, আল্লাহর পথে জিহাদ করা। আবার জিজ্ঞাসা করা হলো: এরপর কোন আমল? জবাবে তিনি বললেন, মাবরূর হজ (কবুল হজ)। ’ –সহিহ বোখারি: ২৬, ১৫১৯ ও মুসলিম: ৮৩

হাজিরা আল্লাহর মেহমান
হজরত ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর পথে জিহাদকারী এবং হজ ও উমরা পালনকারীরা আল্লাহর মেহমান। আল্লাহ তাদের আহ্বান করেছেন, তারা সে আহ্বানে সাড়া দিয়েছে। তারা আল্লাহর কাছে যা চাইছে আল্লাহ তাই তাদের দিয়ে দিচ্ছেন। ’ –ইবনে মাজাহ: ২৮৯৩

হজ মানুষকে গোনাহমুক্ত করে দেয়
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি শুধু আল্লাহকে খুশি করার জন্য হজ করলো এবং হজকালে যৌন সম্ভোগ ও কোনো প্রকার পাপাচারে লিপ্ত হলো না সে যেন মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়ার দিনের মতোই নিষ্পাপ হয়ে বাড়ি ফিরলো। ‘ –সহিহ বোখারি: ১৫২১

হজ দারিদ্র্যতা দূর করে
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা হজ ও উমরা পালন কর। কেননা হজ ও উমরা উভয়টি দারিদ্র্যতা ও পাপরাশিকে দূরীভূত করে যেমনিভাবে রেত স্বর্ণ, রৌপ্য ও লোহার মরিচা দূর করে দেয়। আর মাবরূর হজের বদলা হলো জান্নাত। ’ -তিরমিজি: ৮১০

হজের বিনিময় জান্নাত
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘এক উমরা থেকে অপর উমরা পালন করার মধ্যবর্তী সময়ের মধ্যে হয়ে যাওয়া পাপরাশি এমনিতেই মাফ হয়ে যায়। আর মাবরূর হজের বিনিময় নিশ্চিত জান্নাত। ‘ -বোখারি: ১৭৭৩

আল্লাহর মেহমান হওয়া যেকোনো মানুষের জন্যই এক বিরাট  গৌরবের বিষয়। বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর লক্ষাধিক ধর্মপ্রাণ মুসলিম আল্লাহর মেহমান হয়ে হজ পালনের জন্য সৌদি আরব গমন করেন।

হজপালন শেষে হাজি সাহেবরা দেশে ফিরে আসার পর প্রতিটি মুহূর্ত মনে রাখবেন, আল্লাহতায়ালার মেহমানের খাতা আপনার নাম উঠে গেছে। এখন আপনাকে আল্লাহর মেহমান হয়েই কিন্তু কবরে প্রবেশ করতে হবে। আল্লাহ ও রাসূলের বাড়িতে আমন্ত্রিত মেহমান হয়ে যে ঘনিষ্ঠতা আপনি অর্জন করেছেন, তা সবল ও অটুট রাখার জন্য সর্বদা সচেতন থাকতে হবে। কোনো পাপাচার যেনো হজের পবিত্রতাকে প্রশ্নবিদ্ধ না করে সে দিকে গভীর খেয়াল রাখতে হবে। তবেই হবে হজ কল্যাণময়।




বাংলাদেশ সময়: ১৯০৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৫
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।