ঈদুল আজহা হলো দ্বিতীয় খুশির দিন। ঈদুল আজহার বিশেষত্ব দুটি- ১. ঈদুল আজহার জামাতে নামাজ আদায় ও ২. পশু কোরবানি।
এছাড়া ঈদের নামাজ শেষে ভেদাভেদ ভুলে একে অপরের সঙ্গে বুকে বুক মিলিয়ে সারা বছর জমে ওঠা হিংসা-বিদ্বেষ গ্লানি মুছে ফেলার সুযোগ পায়। এভাবে সামাজিক মজবুতি শান্তি-শৃঙ্খলা বৃদ্ধি, সৌহার্দ্য ও পরস্পর সহানুভূতিশীল মন সৃষ্টি হয়। এর ফলে সামাজিক অনেক সমস্যা এই সম্মেলনের মাধ্যমে সমাধান হয়ে যায়।
কোরবানির মাঝে দুটি মহা কল্যাণকর দিক নিহিত রয়েছে। ১. আল্লাহর রাজি-খুশি অর্জন, গুনাহ মাফ। ২. আত্মীয়-স্বজন ও অভাবী মানুষের খোঁজ-খবর নেওয়া।
আল্লাহতায়ালা বলেছেন, কোরবানির গোশত ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না। পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া। কোরবানিদাতা আল্লাহর নির্দেশ পালনে নিজের অর্থ খরচ করে পশু কিনে বা অর্থ খরচ করে পশু পালন করে নির্দ্বিধায় আল্লাহর উদ্দেশ্যে তা কোরবানি করে। আল্লাহর হুকুমের কাছে এই মাথানত করাই তার তাকওয়া।
আল্লাহর কোরবানির গোশত বা পশুর রক্তের প্রয়োজন নেই। তিনি দেখতে চান বান্দার অন্তরে আল্লাহর প্রতি প্রেম, ভয় ও ভক্তি।
কোরবারির গোশত বণ্টনের ব্যাপারে ইসলামের দিক-নির্দেশনা হলো- তোমারা খাও এবং অভাবীদের খাওয়াও। তোমরা খাও বলার মধ্যে আত্মীয়-স্বজনও এসে যায়। এ কারণে ইসলামি স্কলাররা কোরবানির গোশতকে মোটামুটি তিন ভাগ করতে বলেন- ১. কোরবানির দাতার পরিবারের জন্য এক ভাগ, ২. আত্মীয়-স্বজনদের জন্য এক ভাগ। ৩. দুস্থ ও অভাবী মানুষদের জন্য এক ভাগ।
তবে প্রতিটি ভাগ যে কাঁটায় কাঁটায় সমান ভাগ করতে হবে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।
গোশত ভাগ করেও দেওয়া যায় আবার রান্না করে দাওয়াত দিয়ে খাওয়ানোও যায়। বাড়িতে বাড়িতে যে গোশত পাঠানো হয় তা অন্তত এতটুকু পরিমাণ হওয়া উচিত যাতে ওই পরিবার গোশত রান্না করে একসঙ্গে তৃপ্তির সঙ্গে গোশত খেতে পারে।
অনেক সময় দেখা যায় যে, এক পরিবারে দু’বাড়ি থেকে গোশত এসেছে চার টুকরা। পরিবারের সদস্য ৬ জন। বণ্টন সমস্যার কারণে রান্না করাই কষ্ট হয়ে পড়ে। আবার দেখা যায়, অনেক বাড়িতে বিভিন্ন জায়গা থেকে গোশত আসে। কোনো বাড়িতে মোটেই আসে না। কোরবানি দাতাদের সে ব্যাপারে খেয়াল রাখা দরকার।
অনেক গরিব পরিবার আছে, বাড়িতে চাল বা আটা কিছু নেই। হয়তো না খেয়েই আছে। সে পরিবার প্রয়োজনীয় পরিমাণ গোশত পেলেও তেল-মসলার অভাবে যেমন রান্না করা সম্ভব হয় না, কোনোমতে লবণ ঝাল দিয়ে সিদ্ধ করলেও চাল বা আটার অভাবে তৃপ্তি সহকারে খেতে পারে না। সামাজিক ব্যবস্থা এমন থাকা দরকার যে, অন্তত ঈদের দিনে ওই সকল অভাবী লোকরা খেতে পারে।
এর ফলে আশা করা যায়, মহান আল্লাহতায়ালা খুশি হবেন। কারণ কোনো অসহায় বা অভাবী বান্দার প্রতি যদি কেউ অনুগ্রহ দেখায় আল্লাহ তার প্রতি খুশি হয়ে অধিক অনুগ্রহে তাকে সিক্ত করে থাকেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৫
এমএ
** ঈদের রাত ইবাদতের শ্রেষ্ঠ রাত